বৃহস্পতিবার এ মামলার ধার্য তারিখে টোকন ঠাকুর ঢাকার নিবার্হী হাকিম আদালতে হাজির হলেও বাদীপক্ষ হাজির হয়নি, সবশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রতিবেদনও জমা দেয়নি।
এ মামলার মূল বিচারক নির্বাহী হাকিম মো. সাইফুল ইসলাম বৃহস্পতিবার ছুটিতে রয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত বিচারকও অন্য দায়িত্বে ব্যস্ত। ফলে মামলাটি উঠলেও শুনানি হয়নি।
এর আগে গত ২৩ নভেম্বর নির্মাতা টোকন ঠাকুরের হাজিরার দিন নির্বাহী হাকিম মো. সাইফুল ইসলাম রাষ্ট্রপক্ষের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, সিনেমার অগ্রগতি নিয়ে প্রতিবেদন এখনও জমা পড়েনি কেন?
তথ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা আবদুল্লাহ সিদ্দিক সেদিন বলেছিলেন, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার বাবা অসুস্থ থাকায় তিনি প্রতিবেদন তৈরি করতে পারেননি।
বিচারকের প্রশ্নের উত্তরে টোকন বলেছিলেন, “এডিটিং চলছে। এরপর ডাবিং, সাউন্ড, আবহ সঙ্গীত, গান রেকর্ডিং, কালার কারেকশন ও এনিমেশন করার পর আমি ছবিটি সেন্সর বোর্ডে জমা দেব। বিচার বিভাগের সবাইকে দেখানোর জন্য একটি বিশেষ প্রদর্শনী করব। আমি সিনেমার শতভাগ ফুটেজ গত বছরের শেষ দিকে মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছি এবং তা আদালতেও জমা দেওয়া হয়েছে।”
এ আদালতের পেশকার বোরহানউদ্দিনের বরাত দিয়ে টোকনের আইনজীবী জানিয়েছেন, তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন এখনও আদালতে জমা পড়েনি। মামলার পরবর্তী তারিখ পরে জানানো হবে।
কথা সাহিত্যিক শহীদুল জহিরের ছোটগল্প ‘কাঁটা’ অবলম্বনে একই শিরোনামে একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য ২০১২-১৩ অর্থবছরের সরকারি অনুদান পেয়েছিলেন টোকন ঠাকুর।
অনুদানের অর্থ গ্রহণের নয় মাসের মধ্যে ছবি মুক্তি দেওয়ার নিয়ম থাকলেও সাত বছরেও তা সম্পন্ন করতে পারেননি তিনি।
ছবি নির্মাণ শেষ করতে কিংবা অর্থ ফেরত চেয়ে একাধিকবার তাকে চিঠি পাঠিয়েও কোনও উত্তর না পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মামলা দায়ের করে তথ্য মন্ত্রণালয়।
ওই মামলায় গত মাসে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। সেই পরোয়ানায় গত ২৫ অক্টোবর ঢাকার কাঁটাবন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় টোকন ঠাকুরকে। পরদিন আদালতে হাজির করা হলে বিচারক তাকে জামিন দেন।
কবি ও চলচ্চিত্র নির্মাতা টোকন ঠাকুর সেদিন সাংবাদিকেদের বলেছিলেন “সরকার নয়, বরং আমিই বৈধভাবে সরকারের কাছে ২৫ লাখ টাকা পাই। যার অর্ধেক অংশ পেলেও ছবির পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ শেষ করতে পারতাম। তা না পাওয়ায় টাকা সংগ্রহের চাপ আমার থেকেই যচ্ছে।”
আর বৃহস্পতিবার তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ এই কোভিড পরিস্থিতিতেও এগিয়ে চলেছে। মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক একটি সিনেমা নির্মাণ করতে এসে আজ আমি আইন ও আদালতের মুখোমুখি।
“সকল দর্শক-শ্রোতাদের উদ্দেশে জানিয়ে রাখছি, কাঁটা আপনাদের মুখোমুখি হবে কয়েকটা মাস পরেই। সেই দায়বদ্ধতা যেমন তথ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে আমার আছে, আদালতের কাছে আছে, সবচেয়ে বেশি আছে আমার নিজের কাছে। আপাতত এইটুকুই আমার কথা ।”
আরও পড়ুন
আমিই সরকারের কাছে টাকা পাই: টোকন ঠাকুর
চলচ্চিত্র ‘কাঁটা’: এক মাসেও প্রতিবেদন দিতে পারেনি তথ্য মন্ত্রণালয়