ক্যাটাগরি

বীর নিবাস: মুক্তিযোদ্ধার টাকা ‘আত্মসাৎ করলেন’ তার সহযোদ্ধা

শুক্রবার বিকালে
মান্দা প্রেস ক্লাবে এই অভিযোগ করেন
মান্দা উপজেলার মৈনম ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামের প্রয়াত গুমানী সরকারের ছেলে কালীপদ সরকার।

এই ঘটনায়
প্রতারণার অভিযোগে আদালতে মামলা করেছেন বলে কালীপদ সরকার সংবাদ সম্মেলনে জানান।

মামলায় আরেক মুক্তিযোদ্ধা আফছার আলী মন্ডলকে আসামি করা হয়েছে।

প্রতিবন্ধী মুক্তিযোদ্ধা কালীপদ সরকার মামলায় অভিযোগ করেন, কালীপদ সরকার মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর গুলিতে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে শ্রবনশক্তি হারিয়েছেন। সেই থেকে গ্রামের কুড়ে ঘরে বসবাস করছেন।
২০১৯ সালে সরকার ঘোষণা করেছে অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রায় ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে বসতঘর ‘বীর নিবাস’ করে দেওয়া হবে।

ওই বছরের
৬ অক্টোবর মান্দা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আফছার আলী মন্ডল ছয় মাসের মধ্যে কালীপদ সরকারকে ‘বীর নিবাস’ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে এক লাখ টাকা হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ করেন কালীপদ।

আফছার আলী মন্ডলকে ওই টাকা কালীপদ দিয়েছেন সোনালী ব্যাংক থেকে ঋণ করে; এবং সেই সময় ব্যাংক থেকে ঋণ মঞ্জুর করিয়ে
দেওয়ার নামে আফছার আলী আরও পাঁচ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন বলে কালীপদের অভিযোগ।

মামলায় কালীপদ বলেন, এক বছরেও তার নামে ‘বীর নিবাস’ বরাদ্দ না হওয়ায় টাকা ফেরত চান কালীপদ। এরপর থেকে আফছার আলী তাকে নানা বাহনায় ঘোরাতে থাকেন এবং হয়রানি করতে থাকেন।

এক পর্যায় কালীপদ সরকার গত ২৬ নভেম্বর টাকা ফেরতের দাবি জানিয়ে আফছার আলীকে বিবাদী করে আদালতে মামলা দায়ের করেন বলে জানান।

কালীপদ সরকার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি সরল বিশ্বাসে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে এক লাখ টাকা প্রদান করি আফসার আলী মন্ডলকে। কথা ছিল ছয় মাসের মধ্যে আমাকে ‘বীর নিবাস’ করে দেওয়া হবে। কিন্ত এক বছরেও তা
হয়নি। টাকা ফেরত চাইতে গেলে উল্টো আমাকে নানাভাবে হয়রানি করা হয়।”

এই অবস্থায় আদালতে মামলা করেও তিনি কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, গত ২ ডিসেম্বর আদালত থেকে পাঠানো মামলার অভিযোগটি থানায় গেলেও পুলিশ কোনো উদ্যোগ নেয়নি। আফছার আলী প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

“এতে করে একদিকে আমি ন্যায় বিচার নিয়ে যেমন শঙ্কিত, তেমনি প্রতিমাসে ব্যাংকের কিস্তি পরিশোধ করতে গিয়ে আমি দিশেহারা হয়ে পড়েছি। আবার প্রভাবশালী আফসার আলীর সাঙ্গপাঙ্গদের হুমকি-ধামকিতে পরিবার নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায়
রয়েছি।”

তবে ‘বাড়ি
পাইয়ে দেওয়ার নামে’ টাকা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মান্দা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আফছার আলী মন্ডল।

তিনি বিডিনিউজ
টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যে সময়ের কথা উল্লেখ করে অভিযোগ করা হয়েছে সে
সময় আমি কমান্ডারের দায়িত্বে ছিলাম না। তাছাড়া  মুক্তিযোদ্ধাদের বসতবাড়ি নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য একটি কমিটি রয়েছে। ওই কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঘর পাবে অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা। আমি ওই কমিটির কেউ না।”

একটি মহল ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে বলেও দাবি করেন তিনি।

এই ব্যাপারে মান্দা থানার ওসি শাহিনুর রহমান বলেন, আদালতের নির্দেশনায় গত ১৩ ডিসেম্বর মামলাটি রেকর্ডভুক্ত করা হয়েছে। তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত আছে। তদন্ত সম্পন্ন হলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।