বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী
সংস্থার সভাপতি মিনু হক শনিবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জিনাত গত ২২
ডিসেম্বর থেকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে।
তার মেয়ে বিজরী (অভিনেত্রী বিজরী বরকতুল্লাহ) বলল, অবস্থা নাকি খুব খারাপ।”
অভিনেত্রী বিজরী বরকতুল্লাহ
সন্ধ্যায় এক ফেইসবুক পোস্টে লিখেছেন, তার মা জিনাত আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন, তার অবস্থা
গুরুতর।
জিনাত বরকতুল্লাহর
স্বামী নৃত্যশিল্পী মোহাম্মদ বরকত উল্লাহ গত ৩ অগাস্ট করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা
যান। তখন জিনাত করোনাভাইরাস সংক্রমিত হলেও তিনি এখন এই ভাইরাসে আক্রান্ত নন বলে জানান
মিনু হক।
স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের
সাংস্কৃতিক আন্দোলনের ধারায় নৃত্য চর্চার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন জিনাত বরকতুল্লাহ।
নৃত্যশিল্পী সংস্থার
সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান জানান, জিনাত বরকতুল্লার নৃত্যযাত্রা শুরু হয় সত্তরের
দশক থেকে।
তার নৃত্য শিক্ষার
শুরু চার বছর বয়সে। নৃত্যগুরু জি এ মান্নানের কাছে প্রথম শিক্ষা। ঢাকায় তিনি বুলবুল
ললিতকলা কেন্দ্র-বাফায় নাচ শিখেছেন।
ভরতনাট্যম, কত্থক,
মণিপুরী- উপমহাদেশের শাস্ত্রীয় নৃত্যের তিন ধারায় তালিম নিলেও জিনাত বরকতুল্লাহ পরে
লোকনৃত্যকেই তার জীবনের পাথেয় করে নেন। দুই মেয়ে বিজরী বরকতু্ল্লাহ ও কাজরী বরকতুল্লাহ
তখন বেশ ছোট ছিলেন বলে শাস্ত্রীয় নৃত্যে সময় দেওয়া তার পক্ষে সম্ভব ছিল না।
মেয়ে বিজরী বরকতুল্লাহর সঙ্গে জিনাত বরকতুল্লাহ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
সমাজকল্যাণ বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে জিনাত বরকতুল্লাহ যোগ দেন বিশ্ববিদ্যালয়ে
পারফর্মিং আর্টস একাডেমিতে। পরে তিনি শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যকলা বিভাগের
অন্তর্ভুক্ত প্রডাকশন বিভাগের পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। সেখানে তিনি ২৭ বছর কর্মরত ছিলেন।
১৯৮০ সালে জিনাত বরকতুল্লাহ
বিটিভির নাটক ‘মারিয়া আমার মারিয়া’ দিয়ে অভিনয় জীবন শুরু করেন। সে নাটকে তিনি স্কার্ট
ও ট্রাউজার পরে পর্দায় হাজির হয়েছিলেন বলে রক্ষণশীল সমাজে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
পরে তিনি আলোচিত ধারাবাহিক
‘ঘরে বাইরে’, ‘অস্থায়ী নিবাস’, ‘বড় বাড়ি’, ‘কথা বলা ময়না’সহ বেশ কয়েকটি টিভি নাটকে
অভিনয় করেন।
জিনাত বরকতুল্লাহ নৃত্যশিল্পে
অবদানের জন্য ২০১৮ সালে শিল্পকলা একাডেমি পদক পেয়েছেন।
গুণী এই নৃত্যশিল্পী
বাংলাদেশ নৃত্যশিল্পী সংস্থা, নৃত্যাঞ্চল ও বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার উপদেষ্টা পরিষদের
সদস্য।