কমিটির সচিব সংসদ সচিবালয়ের অতিরিক্ত
সচিব স্বপন কুমার বড়াল ৩০ ডিসেম্বর এই বৈঠকের সময় রেখে নোটিস পাঠিয়েছেন। দেশে মহামারীর সর্বশেষে পরিস্থিতি এবং গত এক বছরে পরিবার
পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ক্রয় নিয়ে আলোচনার সূচি রাখা হয়েছে সেখানে।
সংসদ সচিবালয়ের তথ্য অনুযায়ী, স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির
সর্বশেষ বৈঠক হয়েছিল ২৪ মার্চ। তার দুদিন পর দেশে লকডাউনের বিধিনিষেধ জারি হয়, সরকারের ভাষায় যা ছিল
‘সাধারণ ছুটি’।
ওই সময় মে মাসে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি একটি বৈঠক করেছিল। জুন মাসে আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয়
কমিটি ছাড়া আর কোনো কমিটি বৈঠক করেনি।
বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ার পর জুলাই মাস
থেকে সংসদীয় কমিটিগুলো আবার বৈঠক শুরু করে। তবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয়
স্থায়ী কমিটি গত নয় মাসে আর বসতে পারেনি।
দেশে মহামারীর শুরু থেকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা; মাস্ক, পিপিই, চিকিৎসাসামগ্রী কেনাকাটায় দুর্নীতি, করোনাভাইরাস পরীক্ষা নিয়ে অনিয়মসহ বিভিন্ন বিষয় আলোচনায় এসেছে।
কিন্তু বৈঠক না হওয়ায় সংসদীয় কমিটির কোনো ভাষ্য আসেনি।
জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালিবিধি অনুযায়ী, মন্ত্রণালয়ভিত্তিক সংসদীয় কমিটির কাজ হল আওতাধীন মন্ত্রণালয়ের
সার্বিক কার্যক্রম পর্যালোচনা, তদন্ত করা এবং সংসদ
থেকে পাঠানো বিল বা যে কোনো বিষয় পরীক্ষা করা।
মাসে অন্তত একটি বৈঠক করার কথা বিধিতে
বলা আছে,
যার সময় ও তারিখ নির্ধারণ করবেন কমিটির সভাপতি।
এ বিষয়ে কথা বলতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়
সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা
করা হলেও তার সাড়া মেলেনি।
কমিটির সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক বিডিনিউজ
টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সংসদ থেকে খোঁজ পেয়েছি, কমিটির বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে।”
এতদিন বৈঠক হয়নি কেন জানতে চাইলে তিনি
বলেন,
“এর মধ্যে আরও বৈঠক করতে পারলে ভালো হত। সামনে যেহেতু
বৈঠক ডেকেছে, সেখানে সাম্প্রতিক সব বিষয় নিয়ে আলোচনা
হবে বলে আশা করছি।”
গত ২৪ মার্চের সর্বশেষ বৈঠকে দেশে করোনাভাইরাস
সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। আক্রান্তদের চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক পিপিই সরবরাহে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া, আইসোলেশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা এবং হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ
সুবিধা কতটা রয়েছে, তা দেখে প্রয়োজনীয়
ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছিল ওই বৈঠকে।
জাতীয় সংসদ ও সংসদীয় কমিটির কার্যক্রম
নিয়ে গবেষণা করা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক নিজামউদ্দিন
আহমদে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মন্ত্রণালয়গুলোর সার্বিক কাজ পর্যবেক্ষণ করা সংসদীয় কমিটির দায়িত্ব। ইংরেজিতে যাকে
বলে ওয়াচডগ। কোনো কমিটিই সেটি ঠিকমত করছে না।
“করোনাভাইরাস সংক্রমণের এই সময়ে স্বাস্থ্য
মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত কমিটি ঠিকমত কাজ করতে পারত। তারা জেগেছে অবশেষে, তবে দেরিতে।”