সোমবার বিকালে ঠাকুরগাঁও শহরে নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে এই মুহুর্তে পদত্যাগ করা উচিত। তাদের পদত্যাগ করতে দেরি হওয়াটা প্রমাণ করে তাদের আত্মসম্মান বোধ বলতে কিছুই নেই।
“কারণ দেশের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী নাগরিকরা মনে করেন নির্বাচন কমিশন দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। নির্বাচন কমিশন অযোগ্য, ব্যর্থ। তাহলে তাদের তো দায়িত্বে থাকা উচিত নয়।”
পৌরসভা নির্বাচন প্রসেঙ্গ ফখরুল বলেন, “পৌরসভা নির্বাচনের ফলাফল এখনও আমাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি। তবে দুপুরের মধ্যে বেশ কয়েকটি পৌরসভার নির্বাচনের খবর জানতে পেরেছি কেন্দ্রগুলো দখল হয়েছে। বিশেষ করে পাবনার চাটমোহর, শাহজাদপুর এ ধরনের কয়েকটা।
“আজকে তো ২৪টি পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কিছু খবর পেয়েছি যে কেন্দ্র দখল হয়েছে। এর চেয়ে বেশি কিছু আমরা জানি না। ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচন সম্পর্কে খবর পেয়েছি সম্পূর্ণ নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। পঞ্চগড়ে খবর নিয়েছিলাম সেখানে ৩টি কেন্দ্র দখল হয়েছিল; পরে সেসব কেন্দ্রের প্রার্থীরা রিটার্নিং কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানানোর পর পরিবেশ স্বাভাবিক হয়েছিল। এখন পর্যন্ত এতটুকু খবর পেয়েছি।”
ইভিএম ভোটিং মেশিন সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, “ইভিএম ভোটিং মেশিন দেশের জন্য উপযোগী ব্যবস্থা নয় নির্বাচন কমিশনের। ইভিএম একেবারে স্থানীয় পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া-এর পেছনেও আমরা বলেছিলাম উদ্দেশ্যে কাজ করছে; সেই উদ্দেশ্যটা হচ্ছে পুরোপুরি বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারকে সহযোগিতা করা।”
“অন্যান্য যেসব দেশে ইভিএম চালু রয়েছে সেসব দেশে ভোট দেওয়ার পর ‘রিসিপট’ কাগজ দেওয়া হয়, কিন্তু আমাদের দেশে সেটি নেই,” বলেন ফখরুল।
তিনি বলেন, “ইভিএম মেশিনের মাধ্যমে ভোট সুষ্ঠ হলো কি হলো না, একথা জানার কোনো সুযোগ নেই। অর্থাৎ একজন ভোটার যেখানে ভোট দিতে চায় সেখানে গেল কিনা সেটা জানার সুযোগ নেই। সেক্ষেত্রে আপনার ভোটের জালিয়াতি কারচুপি করার যথেষ্ট সুযোগ রয়ে গেছে।”
সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের দেওয়া বক্তব্যে প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, “খরগোশ ও কচ্ছপের গল্প জানেন, ওবায়দুল কাদের সাহেবকে সেই গল্পটা মনে করায় দিবেন। খরগোশ ও কচ্ছপের গল্পটি উনি যদি একবার মনে করেন তাহলে কচ্ছপেই আল্টিমেটলি জেতে। সেই জয়টাই আমাদের হবে।”
একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেওয়া হলে জনগণ কী চায়, কী চায় না সেটা প্রমাণ হবে বলে মনে করেন ফখরুল।
তিনি এই প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগকে জনগণের কাছে যেতে চেষ্টা করার পরামর্শ দেন।
এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপি সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সাল আমিন, সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হামিদ, জেলা ছাত্রদল সভাপতি মোহাম্মদ কায়েস, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নুরুজ্জামান নুরু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রোববার নিজ বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, “বিএনপি’র আত্মবিশ্বাস তলানিতে ঠেকেছে বলেই তারা নির্বাচনে জয়-পরাজয়ের আগেই হেরে যায়। বিএনপির রাজনীতি কচ্ছপের মত, তারা একবার মাথা বের করে, পরক্ষণেই আবার মাথা লুকিয়ে নেয়।”