ক্যাটাগরি

রোহিঙ্গা স্থানান্তরে বিরোধিতা অযৌক্তিক: কাদের

কক্সবাজার থেকে রোহিঙ্গাদের দ্বিতীয় দল ভাসানচরে রওনা হওয়ার পর সোমবার দুপুরে ঢাকায় নিজের সরকারি বাসভবনে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে তিনি একথা বলেন।

কাদের বলেন, “মিয়ানমারের প্রত্যাবাসন বিলম্বিত হওয়ায় সরকার ভাসানচরে অধিকতর সুযোগ-সুবিধা দিয়ে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের উদ্যোগ নিয়েছে।

“যারা ইতোমধ্যে ভাসানচরে গিয়েছে, তারা আনন্দ উল্লাস-স্বস্তি প্রকাশ করলেও কোনো কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা ও বহুজাতিক গণমাধ্যম রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে জোরপূর্বক স্থানান্তরের কথা প্রচার করছে, যা আদৌ সত্য নয়।”

তিনি বলেন, যারা স্বেচ্ছায় যেতে চেয়েছেন, শুধু তাদেরকেই কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে নেওয়া হচ্ছে। কোনো ধরনের চাপ প্রয়োগ হচ্ছে না।

কাদের বলেন, “আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এতদিন ধরে শুধু বাংলাদেশের মানবিকতার প্রশংসা করে যাচ্ছে, আশ্বাসের বাণী শোনানো ছাড়া দৃশ্যমান আর কী হয়েছে? এখনও মিয়ানমারকে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে কার্যকর কোনো চাপ প্রয়োগ করা যায়নি। এই বাস্তবায়তায় রোহিঙ্গাদের সাময়িক স্থানান্তরের আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিরোধিতা করা কতটুকু যৌক্তিক?”

পর্যটন এলাকা কক্সবাজারে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপস্থিতির নেতিবাচক প্রভাব তুলে ধরে তিনি বলেন, “টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলায় কয়েকটি ক্যাম্পে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী আশ্রয় নিয়েছে। আমাদের দেশের প্রায় সাড়ে ৪ লাখ লোক এই দুই উপজেলার বাসিন্দা। কিন্তু এর উপর আরও ১২ লাখ লোক সেখানে স্রোতের মতো এসে আশ্রয় নিয়েছে। এত বড় সংখ্যক জনগোষ্ঠীর ভরণপোষণ বাংলাদেশের অর্থীনীতির উপর নিঃসন্দেহে চাপ, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও প্রতিবেশ।

“ধারণক্ষমতার কম জায়গায় অধিক সংখ্যক মানুষ বসবাস করায় হুমকির মুখে পড়েছে সামাজিক পরিবেশ ও ভারসাম্য। দেখা দিয়েছে মানবিক ও পরিবেশ বিপর্যয়ের আশংকা। বিশ্বের দীর্ঘতম বালুকাময় সৈকত ঘিরে পর্যটন শিল্পের উপরও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।”

সরকার করোনাভাইরাসের টিকা সংগ্রহে ইতোমধ্যেই উদ্যোগ নিয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী কাদের বলেন, “পাকিস্তানের জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ কিংবা ফেব্রুয়ারিতে টিকা দেশে এসে পৌঁছবে বলে আমরা আশা করছি। টিকা সংগ্রহ এবং ব্যবস্থাপনার বিষয়টি সুচারূভাবে সম্পন্ন করতে নেওয়া হচ্ছে পূর্বপ্রস্তুতি।”

টিকা নিয়ে একটি মহল বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা করছে বলে দাবি করেন তিনি।

“একটি মহল সরকারের যে কোনো ভালো উদ্যোগের অহেতুক সমালোচনায় সক্রিয়। টিকা এখনও আসেইনি, তার মধ্যেই স্বার্থান্বেষীমহল বিভ্রান্তি ছড়ানো শুরু করেছে।”

‘সরকার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে বিদেশি শক্তির কাছে জাতীয় স্বার্থ বিসর্জন দিচ্ছে’- বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “দেশের মানুষ জানে, কারা ক্ষমতায় যেতে বিদেশি দূতাবাসের দরজায় ফুল আর মিষ্টি নিয়ে অপেক্ষা করে। কারা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য বিদেশি সংস্থার কাছে প্রকাশ্য দিবালোকে নৈতিক সাহায্য প্রার্থনা করে। জনগণের কাছে না গিয়ে বিদেশিদের কাছে নালিশ দেয়। স্বাধীন দেশে একটি রাজনৈতিক দলের ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য এবং নির্লজ্জ বিদেশনির্ভরতা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক।”

তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে এদেশের স্বাধীনতা এসেছে, দেশের প্রতি ইঞ্চি মাটি শেখ হাসিনা সরকারের কাছে নিজ অস্তিত্বের মতো। ক্ষমতার জন্য বিএনপিই জাতীয় স্বার্থ বিসর্জন দিতে প্রস্তুত থাকে,আওয়ামী লীগ নয়।”