ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) জাকাত তহবিলের অর্থ
আত্মসাতের মামলায় সোমবার ঢাকার বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসামাঠে স্থাপিত ঢাকার ১ নম্বর
বিশেষ জজ আদালতের অস্থায়ী এজলাসে হাজির করা হয় তাকে।
সাঈদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি চলছে
ওই আদালতে। সোমবার আসামি পক্ষ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাওয়ার জন্য আরও সময় চাইলে বিচারক
সৈয়দা হোসনে আরা ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।
সাঈদীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন আব্দুস সোবহান
তরফদার, মো. মুজাহিদুল ইসলাম শাহিন ও মতিউর রহমান আকন্দ।
তাদের আবেদনের পর তার বিরোধিতা করে দুদকের
আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল শুনানিতে বলেন, “মামলা দায়েরের পর প্রায়
১০ বছর পার হয়ে গেছে। এখনও তারা কাগজপত্র সংগ্রহ করতে পারেননি। এ কথা অলীক, অবাস্তব।”
সাবেক সংসদ সদস্য সাঈদীর সঙ্গে মামলাটিতে আসামি
রয়েছেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ লুৎফুল হক, মসজিদ কাউন্সিল ফর কমিউনিটি
অ্যাডভান্সমেন্টের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, বন্ধুজন পরিষদের প্রধান
সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ ইউনুস, ইসলামী সমাজ কল্যাণ কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি তোফাজ্জল
হোসেন ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদ কাউন্সিলের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল হক।
আসামিদের মধ্যে সাঈদী কারাগারে আছেন। আবুল
কালাম আজাদ ও আব্দুল হক পলাতক। অন্য তিন আসামি জামিনে আছেন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক (অর্থ ও
হিসাব) আইয়ুব আলী চৌধুরী ২০১০ সালের ২৪ মে শেরেবাংলা নগর থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
তদন্ত শেষে দুদকের সহকারী পরিচালক ওয়াজেদ আলী গাজী ২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র
দেন।
২ কোটি ২৭ লাখ ৪০ হাজার ১২০ টাকা আয় গোপন করে
তার উপর প্রযোজ্য ৫৬ লাখ ৪৬ হাজার ৮১২ টাকা কর ফাঁকির অভিযোগে ২০১১ সালের ১৯ আগস্ট
মাওলানা সাঈদীর বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
দুই রিভিউ খারিজ, রাজাকার সাঈদীর বাকি জীবন জেলে
যুদ্ধাপরাধ
ট্রাইব্যুনালে প্রথম অভিযুক্ত ব্যক্তি হিসাবে জামায়াতের নায়েবে আমির সাঈদীর বিচার শুরু হয়েছিল ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর। ৮০ বছর বয়সী সাঈদী তার আগে থেকে গ্রেপ্তার
হয়ে কারাগারে রয়েছেন।
আন্তর্জাতিক
অপরাধ ট্রাইব্যুনাল হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, নির্যাতন ও ধর্মান্তরে বাধ্য
করার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদীর
মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়।
ওই
রায়ের পর দেশজুড়ে সহিংসতা
চালায় জামায়াত ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের
কর্মীরা। ওই তাণ্ডবে প্রথম
তিন দিনেই নিহত হন অন্তত ৭০
জন। এছাড়া বহু গাড়ি-দোকানপাট ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, হিন্দুদের মন্দির-ঘরবাড়ি ভাংচুর করা হয়।
সাঈদী
আপিল করলে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর আপিল
বিভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠতার
ভিত্তিতে রায় দেয়। তাতে সাজা কমে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ আসে। ওই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন
হলেও তাতে কোনো পরিবর্তন আসেনি।