বগুড়ার গাবতলী উপজেলার প্রতিষ্ঠান দুটির নামকরণ হয়েছিল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা
সাবেক সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের নামে।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক
ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ স্কুল দুটির নাম পরিবর্তন করে দিয়েছিল। সে সিদ্ধান্ত ছয় মাসের
জন্য স্থগিত করেছে হাই কোর্ট।
নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করা করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে
বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাই কোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ আদেশ
দেয়।
সেই সঙ্গে রুল জারি করেছে আদালত। দুই স্কুলের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত
কেন ‘অবৈধ ও আইনগত কতৃত্ববহির্ভূত’ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, রাজশাহী শিক্ষা
বোর্ডের পরিদর্শক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে
রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল। তার
সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. আকতার রসুল মুরাদ ও আব্দুল্লাহিল মারুফ ফাহিম।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় ও সহকারী
অ্যাটর্নি জেনারেল ফারহানা পারভীন বিথি।
আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল পরে সাংবাদিকদের বলেন, “স্কুল দুটির নাম পরিবর্তন
করা হয়েছিল। হাই কোর্ট নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে দিয়েছেন। ফলে যে নামে স্কুল
দুটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল সে নামই থাকছে।”
১৯৯৬ সালে বগুড়ার গাবতলীতে ‘গাবতলী শহীদ জিয়া হাই স্কুল’ এবং ২০০০ সালে
‘শহীদ জিয়াউর রহমান গার্লস হাই স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। ওই নামেই চলে আসছিল স্কুল
দুটি। গত বছর এমপিও অনুমোদন করার সময় স্কুল দুটির নাম পরিবর্তন করা হয়।
জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ অনুযায়ী চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত মাধ্যমিক
পর্যায়ের বেসরকারি ৯৯১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যোগ্য শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেওয়ার
জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চলতি বছর ১৯ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠায়
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপ-সচিব মো. কামরুল হাসান।
ওই ৯৯১টি মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় ৫৯ নম্বরে আছে ‘সুখনপুর
বন্দর গার্লস হাই স্কুল’, যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ইআইএন নম্বর ১১৯৪৭৯। আর ১০৯ নম্বরে
আছে নাম ‘গাবতলী পূর্বপাড়া হাই স্কুল’, যার ইআইএন নম্বর ১১৯৪৭৬।
ওই তালিকাটি চ্যালেঞ্জ করে স্কুল দুটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. আমিনুল
হক ও মোর্শেদ লিটন হাই কোর্টে দুটি রিট আবেদন করেন।
সেখানে বলা হয়, এমপিও তালিকার ১১৯৪৭৯ নম্বরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নাম
‘সুখনপুর বন্দর গার্লস হাই স্কুল’ উল্লেখ করা হলেও এটি ২০০০ সালে ‘শহীদ জিয়াউর রহমান
গার্লস হাই স্কুল’ নামে প্রতিষ্ঠা করা হয়।
আর ১১৯৪৭৬ নম্বরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির নাম ‘গাবতলী পূর্বপাড়া হাই স্কুল’
উল্লেখ করা হলেও ১৯৯৬ সালে এটি ‘গাবতলী শহীদ জিয়া হাই স্কুল’ নামে প্রতিষ্ঠা করা হয়।
‘কোনো কারণ ছাড়া’ এভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করা ‘বেআইনি
ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত’ বলে অভিযোগ করা হয় রিট আবেদনে।