ক্যাটাগরি

দ্বিতীয় দফায় ১৭০০ রোহিঙ্গা ভাসানচরের পথে

ভাসান চর আশ্রয়ণ প্রকল্পের পরিচালক কমডোর আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী সোমবার সন্ধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, দ্বিতীয় দফায় ১৭ শর বেশি রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর করা হচ্ছে। নৌবাহিনীর কয়েকটি জাহাজে করে মঙ্গলবার তাদের ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হবে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় দফায় ৭০০ রোহিঙ্গা স্থানান্তরের পরিকল্পনা থাকলেও, এর দ্বিগুণের বেশি রোহিঙ্গা সরকারি ব্যবস্থাপনায় স্বেচ্ছায় কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে যাচ্ছেন।  

স্থানীয়রা জানান, কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ক্যাম্প থেকে সোয়া চারশ রোহিঙ্গা পরিবারের এই সদস্যদের নিয়ে অন্তত ৩০টি বাস সোমবার দুপুরে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।

তবে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো কথা বলতে চাননি।

নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এমরান হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ এই রোহিঙ্গারা ভাসানচরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে, সেভাবেই তারা প্রস্তুতি নিয়েছেন।

দ্বিতীয় দফার এই স্থানান্তর প্রক্রিয়া চলার মধ্যেই ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের রোহিঙ্গা স্থানান্তর নিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর বিরোধিতাকে ‘অযৌক্তিক’ আখ্যায়িত করেন।

কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় থাকা ১২ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে গত ৪ ডিসেম্বর ১ হাজার ৬৪২ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালী সংলগ্ন সাগরের দ্বীপ ভাসানচরে নেওয়া হয়।

রোহিঙ্গাদের প্রথম দল পৌঁছাল ভাসানচরে

রোহিঙ্গা স্থানান্তরে বিরোধিতা অযৌক্তিক: কাদের
 

প্রথম দলকে পাঠানোর পর আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সমালোচনার মধ্যেই সোমবার দ্বিতীয় দলকে পাঠানো হল।

বেলা ১২টায় উখিয়া ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাস থেকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে প্রথম বহরে ১৩টি বাস রওনা হয় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। পরে রওনা হয় ১৭টি বাসের আরেকটি বহর।

রোহিঙ্গাদের নিয়ে উখিয়া থেকে রওনা হয়েছে বাস।

রোহিঙ্গাদের নিয়ে উখিয়া থেকে রওনা হয়েছে বাস।

স্থানীয়রা জানান, রোববার রাতেই অনেক রোহিঙ্গাকে উখিয়ার কুতুপালং সংলগ্ন ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়। আবার অনেককে সোমবার সকালে আনা হয়। রাতেই উখিয়া ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসে জড়ো করা হয় বেশ কিছু যাত্রীবাহী বাস।

স্থানীয় মুদি দোকানি আবুল কালাম জানান, সোমবার বেলা ১২টায় দ্বিতীয় বারের মতো প্রথম দফায় রোহিঙ্গাদের নিয়ে ১৩টি বাস উখিয়া ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাস থেকে ছেড়ে যায় তার সামনে দিয়ে।

উখিয়ার স্থানীয় সাংবাদিক শফিক আজাদ বলেন, রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরের জন্য ঘুমধুম ট্রানজিট ক্যাম্প থেকে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাস এলাকাজুড়ে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। সেখানে সাধারণ মানুষের চলাচলেও বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

প্রথমবারের মতোই এবারও রোহিঙ্গাদের বহনকারী বাসগুলোর সামনে ও পেছনে র‌্যাব, পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া পাহারা দেখা গেছে।

নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রোহিঙ্গাদের আসার বিষয়ে জানানোর পর জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।”

এর আগে পুলিশের ঊধর্বতন কর্মকর্তারা ভাসানচর পরিদর্শন করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান এসপি।