মঙ্গলবার সকাল সোয়া ৯টায় চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর বোট ক্লাব সংলগ্ন জেটি থেকে জাহাজগুলো ছেড়ে যেতে শুরু করে।
চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলের কমান্ডার রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদের বলেন, তাদের ‘ধারণার চেয়ে বেশি’ লোক দ্বিতীয় দফায় ভাসানচরে যাচ্ছে।
“১২ শর মত লোক যাবে বলে ধারণা করলেও শেষ পর্যন্ত এক হাজার ৮০৪ জন ভাসানচরে যাচ্ছে স্বপ্রণোদিত হয়ে।”
চট্টগ্রাম থেকে তাদের ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ছয়টি জাহাজে করে। দুপুর নাগাদ তাদের ওই দ্বীপে গড়ে তোলা আশ্রয়ন প্রকল্পে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির ও তার বাইরে অবস্থান নিয়ে থাকা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে নিয়ে নানা সামাজিক সমস্যা সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে দুই বছর আগে তাদের একটি অংশকে হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনার দ্বীপ ভাসান চরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয় সরকার।
সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ২৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে মোটামুটি ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করে এক লাখের বেশি মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
টেকনাফ ও উখিয়ায় থাকা রোহিঙ্গার মধ্যে গত ৪ ডিসেম্বর ১ হাজার ৬৪২ রোহিঙ্গাকে প্রথম দফায় ভাসানচরে নেওয়া হয়।
দ্বিতীয় দফার স্থানান্তরের জন্য রোববার রাতেই রোহিঙ্গাদের উখিয়ার কুতুপালং সংলগ্ন ট্রানজিট ক্যাম্পে নিয়ে আসা হয়। সোমবার সকালেও অনেকে আসেন।
সোমবার দুপুরে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাস থেকে ৩০টি বাস তাদের নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
এ সময় ঘুমধুম ট্রানজিট ক্যাম্প থেকে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাস এলাকাজুড়ে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। সাধারণ মানুষের চলাচলেও বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়।
প্রথমবারের মতোই এবারও রোহিঙ্গাদের বহনকারী বাসগুলোর সামনে ও পেছনে র্যাব, পুলিশ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া পাহারা দেখা যায়।
চট্টগ্রামে পৌঁছানোর পর রাতে তাদের রাখা হয় বিএএফ জহুর ঘাটির বিএএফ শাহীন স্কুল ও কলেজের ট্রানজিট ক্যাম্পে। ভাসানচরে নিয়ে যাওয়ার জন্য মঙ্গলবার সকালে তোলা হয় নৌবাহিনীর জাহাজে।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রোহিঙ্গাদের আসার বিষয়ে জানানোর পর জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।”
এর আগে পুলিশের ঊধর্বতন কর্মকর্তারা ভাসানচর পরিদর্শন করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান এসপি।