আছে গ্রন্থ, গদ্য। কিন্তু হঠাৎ গ্লিটজের আমন্ত্রণে যখন গল্পের ঝুলিটা খুলেই গেল সেখান থেকে বের হল শাড়ির গল্প।
কীভাবে?
সে অনেক বছর আগে। আশির দশকে। মামুনুর রশীদ একবার কেরালা গেলেন একটি নিমন্ত্রণ রক্ষায়। সঙ্গে স্ত্রী।
মামুনুর রশীদ বলেন, “তখন তো বাপু পকেটে পয়সা নেই, যাওয়ার সময় নিয়ে গেল কেরালার বিখ্যাত কাঞ্চিপুরামের পল্লীতে।”
তিনি যোগ করেন, সেখানে বাড়ির পর বাড়িতে নকশা করা। ছবির মতো। প্রতিটা বাড়িতে আছে এই বিশেষ শাড়ির ধারক ও পালক। মানে তাঁতীরা।
দেখেই মন জুড়িয়ে গেল তার। কিন্তু প্রাণ জুড়ায়নি তার স্ত্রীর। পারলে পল্লীর শাড়ি কিনে তখনই গাড়ি ভরে ফেলেন মামুন-পত্নী।
কিন্তু পকেটের অবস্থা ভেবে বলেই ফেললেন, “ফেরার সময় কিন্ব-ক্ষণ।”
ফেরার পথে গাড়িচালককে পটিয়ে অন্য পথে ফিরলেন তিনি। পকেটকে রেহাই দিলেন, কিন্তু স্ত্রী সেই কথা শোনার মতো নন।
অভিমানে জানালেন, কলকাতা থেকেই কিনবেন। কিন্তু কেরালা থেকে দূরত্ব যতই বাড়ে- তত বেশি বাড়তে থাকে শাড়ির দাম।
শেষ অবধি- সে বার আর হল না কেনা।
এর পরেরবার দিল্লি ভ্রমণে সেই সাধ মেটানো বেশ করে। এবার হল কটকি শাড়ি কেনা।
অভিনেতা বলেন, “এবার পকেটে টুপাইস ছিল, গিন্নির মনের আশা পূরণও করে দিয়েছি।”
ভ্রমণের পাশাপাশি এই শাড়ির গল্পে লক্ষ্ণৌর চিকেন শাড়ির কথা না বললেই না।
দুই হাত উজার করে, পকেটের তোয়াক্কা না করে তুলতুলে চিকেন শাড়ি কিনে নিলেন মন ভরে।
এমন কী সেখান থেকে আমেরিকা যাওয়ার সময় উপহার হিসেবে নেওয়া শাড়ি কেমন ‘হিট’ করেছিল সেটা বলতেও ভুললেন না এই নাট্যকার।
তবে শেষ হবে না দেশি শাড়ির কথা না বললে!
এবার টাঙাইলের বিখ্যাত শাড়ি। বসাক পরিবার-সহ এই শাড়ির ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িতরা সকলেই ছেলেবেলার পরিচিত অভিনেতার।
একই এলাকার বলে কথা!
এবার গেলেন ছেলের বউ, নিজের স্ত্রী-সহ পুরো পরিবার নিয়ে। তাতেই গোটা দোকান তুলে আনার হাল। ছেলের বউ নিজের যা ছিল, এর পর স্বামীর, ফের শশুড়ের সব টাকা দিয়ে মন ভরে কিনলেন শাড়ি।
পরে আরেকটা শাড়িও পছন্দ। এবার?
মামুনুর রশীদ হেসে বলেন, “আমি আস্তে করে মালিককে বললাম, যাই করও না করও, টাকা কিন্তু শেষ, এটি উপহারই ধরে নাও..।”
হেসে জানালেন, ওই শাড়িটি ছেলের বউ হাতে পেয়ে দারুণ খুশি ছিলেন তো বটেই, ক্রেতাকে খুশি করতে পেরে দোকানিও হয়েছিলেন আনন্দিত।
এভাবেই পথে হাঁটতে হাঁটতে নানান গল্প নিয়ে চলছেন অভিনেতা-লেখক-নাট্যজন মামুনুর রশীদ।
বাকী আছে শোনার আরও অনেক কিছু।