দুই বছর আগে গ্রেপ্তার এ চক্রের এক সদস্যের
মোবাইল ফোন থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ওই ছয়জনকে গ্রেপ্তার
করা হয় বলে বৃহস্পতিবার সিআইডির এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- রকিবুল হাসান (২৫), রাশেদুজ্জামান সজীব (৩৬), হাসান মাহমুদ (২২),
মানিক কুমার প্রামাণিক (৩৮), শাফিকুল ইসলাম (৩০) এবং রিপন কুমার (২৬)।
সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টারের উপ মহাপরিদর্শক
জামিল আহমদ সংবাদ সম্মেলনে জানান, ২০১৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি
পরীক্ষা চলাকালে সরকারি বিজ্ঞান কলেজ থেকে নাফিউল ইসলাম তাহসিন নামের এক পরীক্ষার্থীকে
জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন এবং পাবলিক পরীক্ষা আইনে মামলা করে।
নাফিউলের কাছ থেকে পাওয়া ‘ডিভাইসের’ তথ্য
পর্যালোচনা করে ২২ ডিসেম্বর রাতে ঢাকার মালিবাগ মোড় থেকে হাসান মাহমুদ এবং সাইফুরস
কোচিংয়ের ইংরেজি শিক্ষক রাশেদুজ্জামান সজীবকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।
পরে রাশেদুজ্জামানকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া
তথ্যের ভিত্তিতে ২৭ ডিসেম্বর বিকালে মতিঝিল থেকে জনতা ব্যাংক মতিঝিল শাখার সিনিয়র অফিসার
রকিবুল হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

রকিবুলের দেওয়া তথ্যের সূত্র ধরে বুধবার
রাজশাহীর মোহনপুর থেকে অগ্রণী ব্যাংকের রাজশাহী শাখার সিনিয়র অফিসার মানিক কুমার প্রামাণিক এবং তার দুই সহযোগী শাফিকুল
ইসলাম এবং রিপন কুমারকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে উপ মহাপরিদর্শক জামিল জানান।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার সবাই ‘জালিয়াত চক্রের
সাথে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে’ জবানবন্দি দিয়েছেন।
“মানিক কুমার প্রামাণিককে জিজ্ঞাসাবাদে জানা
যায়, তারা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি এবং চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার অনেক আগে থেকেই
ভর্তিচ্ছু এবং চাকরিপ্রার্থীদের সাথে যোগাযোগ করতেন। তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে পরীক্ষা
চলাকালে ডিজিটাল ডিভাইসের সহায়তায় পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে প্রশ্ন বের করে নিয়ে আসত এ
চক্র। পরে রাশেদুজ্জামানের মত শিক্ষকরা সেই প্রশ্ন সমাধান করে উত্তরগুলো দ্রুত ডিজিটাল
ডিভাইসের সাহায্যে পরীক্ষার্থীদের কাছে সরবরাহ করত।”
এই চক্রটি সাত ব্যাংকের সম্মিলিত নিয়োগ পরীক্ষা,
২০১৭ ও ২০১৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা, ২০১৯ সালে সরকারি
উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষায় ‘জালিয়াতির
মাধ্যমে প্রায় ৩ কোটি ৩৯ লক্ষ টাকা’ হাতিয়ে নিয়েছে বলে সিআইডির সংবাদ সম্মেলনে জানানো
হয়।
এই চক্রে আরও তিন থেকে চারজন জাড়িত আছে জানিয়ে
সিআইডি কর্মকর্তা জামিল বলেন, “এদেশের যোগ্য মেধাবীরা যোগ্যতার ভিত্তিতে, প্রতিযোগিতামূলক
পরীক্ষার মাধ্যমে নিজেদের সক্ষমতার প্রমাণ করতে চায়, তাদের পক্ষেই আমরা রাস্তা খুলে
দিতে চাই।”