ক্যাটাগরি

আগামী ৫ বছরে ইলিশ রপ্তানি যৌক্তিক নয়: মন্ত্রী

মৎস্য
ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বুধবার সচিবালয়ে
নিজ দপ্তর কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটানা দায়িত্ব পালনের যুগপূর্তি উপলক্ষে
ব্রিফিংয়ের সময় মন্ত্রী এ মত প্রকাশ করেন।

রেজাউল
বলেন, “আগামী পাঁচ বছরে ইলিশ রপ্তানি করা যৌক্তিক হবে না। এখনও গ্রামের অনেক মানুষ
ইলিশের স্বাদ নিতে পারে না। তাদেরকে পর্যাপ্ত পরিমাণ ইলিশ খাওয়ার সুযোগ করে দিতে
চাই। তারপর ইলিশ রপ্তানির কথা ভাবা যাবে।”

২০১২
সালে সরকার ইলিশসহ যে কোনো ধরনের কাঁচা মাছ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলেও ব্যবসায়ীদের
দাবির কারণে ইলিশ মাছ বাদে অন্য সব মাছ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।

২০১৪
সালে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে ইলিশ রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে অনুরোধ করা
হয়েছিল। তখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ইলিশের রপ্তানিমূল্যও নির্ধারণ করা
হয়েছিল। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার গেরো কাটেনি।

৫ বছরে দ্বিগুণ হয়েছে ইলিশ উৎপাদন
 

ইলিশ এখন মানুষের হাতের নাগালে: মৎস্যমন্ত্রী
 

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

তবে
প্রতি বছর দুর্গা পূজা উপলক্ষে বাংলাদেশ থেকে ইলিশ পাঠানো হয় ভারতে। গত বছর দুর্গা
পূজায় ১ হাজার ৪৭৫ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

মৎস্য
ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় বলছে, সেই থেকে মাছ ব্যবসায়ীরা ইলিশ রপ্তানির অনুমতি
নিতে মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে শুরু করেছে।

দেশে
২০১৪-১৫ অর্থ বছরে ৩ লাখ ৮৭ হাজার মেট্রিক টন ইলিশ ধরা হয়েছিল, ২০১৮-১৯ সালে সেটা
বেড়ে হয়েছে ৫ লাখ ৩৩ হাজার মেট্রিক টন।

ইলিশের
উৎপাদন বাড়ার সঙ্গে  সঙ্গে মাছ রপ্তানিকারক
অনেক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনও
(বিএফএফইএ) সম্প্রতি আলাদাভাবে ইলিশ রপ্তানির জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন
করেছে।

সংগঠনের
সভাপতি কাজী বেলায়েত হোসেন মন্ত্রীর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর
ডটকমকে বলেন, “ইলিশ রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলে আমরা প্রতি বছর দেড় হাজার থেকে ২
হাজার মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানি করতে পারব। চাহিদা অনুযায়ী, কনটেইনারে অন্য মাছের
পাশাপাশি আমরা আমরা ইলিশ মাছ রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আনতে পারব। এতে মাছ
রপ্তানিতে আয় ১০ গুণ হলেও তো বাড়তে পারে।”

বেলায়েত
হোসেন জানান, বাংলাদেশ থেকে হিমায়ত মাছ রপ্তানি করে তারা প্রতি বছর সাড়ে ৭ কোটি ডলার
আয় করেন।

ইলিশ
রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আগামী সপ্তাহে তারা আবার মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে
জানান বেলায়েত।

বুধবার
দুপুরে ব্রিফিংয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল গত ১২ বছরে মৎস্য ও
প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরেন।

শ ম রেজাউল করিম

শ ম রেজাউল করিম

তিনি
জানান, দুধের উৎপাদন ২০০৮-০৯ সালে ছিল ২ দশমিক ২৯ মিলিয়ন মেট্রিক টন, সেটা
২০১৯-২০ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক৬৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন।

১২
বছর আগে মাংসের উৎপাদন ছিল ১ দশমিক ৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন; ২০১৯-২০ সালে সেটা
দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৬৭ মেট্রিক টন, ডিমের উৎপাদন ছিল ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন, তা বেড়ে
দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন। মৎস্য উৎপাদন ২০১০ সালে ছিল ৩০ দশমিক ৬২ লাখ মেট্রিক
টন ছিল, তা বেড়ে হয়েছে ৪৪ দশমিক ৮৮ লাখ মেট্রিক টন।

২০১০-
এ ইলিশের উৎপাদন ছিল ২ দশমিক ৯৯ লাখ মেট্রিক টন, এখন উৎপাদন বেড়ে হয়েছে ৫ দশমিক ৩৩
লাখ মেট্রিক টন।


ম রেজাউল বলেন, “ইলিশ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে এক নম্বরে, তেলাপিয়া
উৎপাদনে চতুর্থ, অভ্যন্তরীণ জলাশয়ের মাছ উৎপাদনে তৃতীয় এবং চাষের মাছ উৎপাদনে
বিশ্বের বড় বড় দেশকে অতিক্রম করে আমরা পঞ্চম স্থানে আছি।”

দেশীয়
৬৪ প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় মাছের মধ্যে ইতোমধ্যে ২৪টি প্রজাতির মাছ বিভিন্ন
আঙ্গিকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “দেশীয় মাছ সংরক্ষণের জন্য আমরা
জিন ব্যাংক করেছি। এটি অভাবনীয় সাফল্য। মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখায়
মন্ত্রণালয় ২০২০ সালে একুশে পদক অর্জন করেছে।”