ক্যাটাগরি

একদিনেই আড়াই লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি

এছাড়া বিসিআইসির মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য থেকে ৫০ হাজার টন ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাবও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বুধবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এসব প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয় বলে বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু সালেহ মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন।

নতুন বছরের প্রথম এই বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল সিঙ্গাপুর থেকে অনলাইনে যোগ দিয়ে সভাপতিত্ব করেন। 

আবু সালেহ বলেন, খাদ্য অধিদপ্তর আন্তর্জাতিক কোটেশনের মাধ্যমে ১৭১ কোটি ৯৭ লাখ ৪৪ হাজার টাকায় ভারতের ইটিসি এগ্রো প্রসেসিং থেকে ৫০ হাজার টন নন-বাসমতি সেদ্ধ চাল কিনবে। আর সিঙ্গাপুরের এগ্রোকপ ইন্টারন্যাশনাল থেকে সমপরিমাণ চাল কেনা হবে ১৭৩ কোটি ১১ লাখ ৭ হাজার ২০০ টাকায়।

এছাড়া ভারতের ন্যাশনাল এগ্রিকালচার কো-অপারেটিভ মার্কেটিং ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া- এনএএফইডি থেকে জিটুজি ভিত্তিতে দেড় লাখ টন চাল আমদানি করবে সরকার, যার মধ্যে এক লাখ টন সেদ্ধ চাল আর ৫০ হাজার টন আতপ চাল। এতে ব্যয় হবে প্রায় ৫২২ কোটি টাকা।

এর আগে তিন দফায় ভারত থেকে দেড় লাখ টন চাল আমদানির অনুমোদন দেয় ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এ নিয়ে মোট চার লাখ টন চাল আমদানির অনুমোদন পেল খাদ্য মন্ত্রণালয়।

এবার পর পর চার দফা বন্যায় ধানের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরমধ্যে বোরো মৌসুমে বাম্পার ফলন হলেও মিল মালিকরা চুক্তিমূল্য ৩৬ টাকা কেজি দরে চাল সরবরাহ করতে গড়িমসি করে সরকারের কাছে চালের দাম বাড়ানোর দাবি তোলেন। অনেক মিল মালিক চুক্তিমূল্যে চাল না দেওয়ায় মজুদের লক্ষ্য পূরণ করা নিয়ে বিপাকে পড়ে সরকার।

এখন আমনের ভরা মৌসুম চললেও ধান ও চাল-দুটোরই দাম গতবছরের তুলনায় বেশি। সরকারের ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য মতে, মাসখানেকের ব্যবধানে সব ধরনের চালের দামই ১০ শতাংশ বা তার চেয়ে বেশি বেড়েছে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে গত ২৩ ডিসেম্বরের যে তথ্য দেওয়া আছে, তাতে সরকারি গুদামগুলোতে মোট ৭ দশমিক ৪৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুদ আছে। এর মধ্যে চাল ৫ দশমিক ৪২ লাখ মেট্রিক টন এবং গম ২ দশমিক ৪ লাখ মেট্রিক টন। চালের মজুদের এই পরিমাণ গত বছরের তুলনায় প্রায় অর্ধেক।

এই পরিস্থিতিতে ওএমএস, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি, রেশনসহ অন্যান্য সরকারি প্রয়োজনে দরপত্র ও জিটুজি ভিত্তিতে চাল আমদানি করছে সরকার। বেসরকারি পর্যায়েও সীমিত পরিসরে চাল আমদানির জন্য শুল্ক ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে।

আবু সালেহ জানান, সভায় বিসিআইসির মাধ্যমে দুই ধাপে ৫০ হাজার টন ইউরিয়া সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কাতারের মুনতাজাত থেকে ৫৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫ হাজার টন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে আরও ২৫ হাজার টন সার আমদানি করা হবে।

এছাড়া নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন চারটি কি গ্যান্ট্রি ক্রেন চীনের সাংহাই জিনহুয়া হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানি থেকে ২৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে কেনার প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে। এই কোম্পানি থেকে ছয়টি রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রি ক্রেন কেনা হবে। এছাড়া ১১টি রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রি ক্রেন কেনা হবে আরব আমিরাতের ট্রান্স গালপ পোর্ট ক্রেনস লিমিটেড থেকে। এতে ব্যয় হবে ১৩০ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর সময়ের জন্য ১২ লাখ ৮৫ হাজার টন পরিশোধিত জ্বালানি তেল ৪ হাজার ৩৮৪ কোটি টাকায় কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বিআরটিএর অনলাইন ব্যাংকিং ব্যবস্থায় মোটর যানবাহনের কর ও ফি আদায়ের লেনদেন সেবা কেনার জন্য চুক্তিমূল্যের অতিরিক্ত ৪৮ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রস্তাবনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কোভিড-১৯ রোগীদের সেবায় জরুরি ভিত্তিতে যন্ত্রপাতি, ওষুধ, অন্যান্য জিনিসপত্র ও সেবা বাবদ সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।