ক্যাটাগরি

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি নূরের

বুধবার বিকেলে ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ আয়োজিত সমাবেশে
তিনি এই দাবি জানান।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যিালয়ের আবাসিক হল খুলে দিয়ে পরীক্ষা গ্রহণ, করোনাভাইরাস মহামারীকালে
ভর্তি ও উন্নয়ন ফি বাতিল এবং শিক্ষাঙ্গনে বর্তমান সংকট মোকাবেলার দাবিতে এই সমাবেশের
আয়োজন করা হয়।

এসব দাবিতে গত ২৩ ডিসেম্বর
থেকে সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার
সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লাসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী। সমাবেশ থেকে ওই অবস্থান কর্মসূচি
স্থগিত করা হয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবিলম্বে হল না খুললে পরবর্তীতে উপাচার্যের বাসভবনের
সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে জানান সংগঠনের নেতারা।

সমাবেশে নূর বলেন,
“আমাদের দেশের চেয়েও ভয়ঙ্কর অবস্থা রয়েছে এমন বিভিন্ন দেশে ধাপে ধাপে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
খুলে দেওয়া হয়েছে। সংক্রমণের হার বিবেচনা করে আবার কখনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের
দাবি হচ্ছে, অবশ্যই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। প্রয়োজনে শিক্ষা কার্যক্রমের
সময়সীমা কমিয়ে আনতে হবে। পাঁচ দিনের পরিবর্তে সেটা তিন দিন করে দেওয়া যেতে পারে।
একই বর্ষের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন শিফটে ভাগ করে ক্লাস নেওয়া যেতে পারে।

“বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা
বাদ দিলেও স্কুল-কলেজের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ দিন ধরে লেখাপড়ার বাইরে। তারা
মানসিকভাবে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। তাছাড়া অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ থাকে
না। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আর এক দিনের জন্য বন্ধ রাখা যাবে না।”

অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের
সীমাবদ্ধতা তুলে ধরে নূর বলেন, “আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলা হচ্ছে। পত্রিকায় নিউজ
করেছে শিক্ষার্থীরা নেটওয়ার্কের জন্য গাছে উঠেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা এখন পর্যন্ত
আমরা সারা দেশে নিশ্চিত করতে পারি নাই। এখন পর্যন্ত সেই অবকাঠামো আমরা শক্তিশালীভাবে
গড়ে তুলতে পারি নাই। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলেছে শিক্ষার্থীদের ডিভাইস দেওয়া হবে,
ইউজিসি বলেছে ডিভাইস কেনার জন্য শিক্ষার্থীদের টাকা দেওয়া হবে। এখন পর্যন্ত একজন শিক্ষার্থীকে
বলতে শুনলাম না যে একটি ডিভাইস পেয়েছে। বরং প্রত্যন্ত অঞ্চল বা পাহাড়ের শিক্ষার্থীদের
আক্ষেপ করতে শুনেছি। তারা বলেছে, ক্লাস করতে পারছি না।”

রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে
অবস্থান কর্মসূচি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের সমালোচনা করে নূর বলেন, “আমাদের প্রক্টর
স্যার অবস্থান কর্মসূচি নিয়ে মন্তব্য করেছেন, দুই-তিনজন পাটি নিয়ে বসে গেল আন্দোলন
হয়ে গেল। কী ধরনের নিম্নরুচির পরিচয় একজন শিক্ষকের, ছি! একজন প্রক্টর কোনোভাবেই এ
ধরনের বক্তব্য দিতে পারেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খুলে দেওয়ার বিষয়ে ছাত্রলীগ, ছাত্রদল
ও প্রগতিশীল ছাত্রজোট সবাই একমত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় এই দাবি উপেক্ষা করতে পারে
না।”

টিএসসি সংস্কার নিয়ে
তিনি বলেন, “আমরা বলেছিলাম, টিএসসির যে স্বতন্ত্র কাঠামো রয়েছে, সেটিকে অক্ষুণ্ন রেখে
যাতে টিএসসির উন্নয়ন করা হয়। পরমাণু শক্তি কমিশন ওখান থেকে চলে যাবে। সেটিকে টিএসসির
মধ্যে যুক্ত করলে টিএসসি আরও বড় হবে। যা-ই করা হোক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলব প্রত্যেক
স্টেকহোল্ডার, ছাত্র-শিক্ষক সবার মতামত নিয়ে যেন করা হয়।”

সমাবেশে ছাত্র অধিকার
পরিষদের আহ্বায়ক রাশেদ খাঁন বলেন, “হল না খুলে পরীক্ষা নেওয়া একটি অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত।
মা ভিক্ষা করে হলেও তার সন্তানদের মূখে অন্ন তুলে দেয়। কিন্তু আমাদের অভিভাবকরা বলছেন,
শিক্ষার্থীরা কোথায় থাকবে তা আমার জানা নেই।”

ছাত্র সমাবেশে অন্যদের
মধ্যে ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. ফারুক হাসান, সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
শাখার সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল মাহমুদ, নাগরিক ছাত্র ঐক্য
সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন।