মুক্তি পেলে অ্যাসাঞ্জের পালিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি আছে বিবেচনায় বিচারক বুধবার তার জামিন নামঞ্জুর করেন।
অ্যাসাঞ্জ ৮ বছরেরও বেশি সময় ধরে হয় লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে কিংবা জেলে কাটিয়েছেন।
তবে সোমবার তিনি গুপ্তচর আইন লঙ্ঘন ও সরকারি কম্পিউটারে হ্যাকিংসহ ১৮টি অভিযোগে বিচারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে তার হস্তান্তর আটকানোর চেষ্টায় সফল হন।
অ্যাসাঞ্জের মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতি এবং যুক্তরাষ্ট্রে হস্তান্তর করা হলে তার ‘আত্মহত্যা করার’ ঝুঁকি বিবেচনায় নিয়ে লন্ডনের ওল্ড বেইলি আদালতের ডিস্ট্রিক্ট জাজ ভ্যানেসা ব্যার্যাজার অ্যাসাঞ্জকে হস্তান্তরের বিপক্ষে রায় দেন।
এরপরই অ্যাসাঞ্জ বুধবার আদালতের শুনানিতে জামিনে তাকে মুক্তি দেওয়ার অনুরোধ জানান। বিচারক এ অনুরোধ মঞ্জুর করলে ৮ বছর পর প্রথম মুক্তির আস্বাদ পেতেন অ্যাসাঞ্জ।
কিন্তু বিচারক ভ্যানেসা ব্যার্যাজার জামিন নামঞ্জুর করে বলেন, “আজ অ্যাসাঞ্জকে মুক্তি দেওয়া হলে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে তাকে হস্তান্তরের আপিল প্রক্রিয়ায় মুখোমুখি হতে আদালতে হাজির হতে ব্যর্থ হবেন এমন মনে করার যথেষ্ট কারণ আছে।”
লন্ডন আদালত অ্যাসাঞ্জকে হস্তান্তরের বিপক্ষে যে রায় দিয়েছে তার বিরুদ্থে আপিল করে লড়াই চালিয়ে যাওয়া হবে বলে এরই মধ্যে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ।
ব্রিটিশ আদালতের বিচারক ভ্যানেসা বলেন, “অ্যাসাঞ্জ এখনও এ মামলায় জিতেননি… এই আপিলের ফল কি হবে তাও এখনও জানা নেই।”
অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ ২০১০ সালে পেন্টাগন ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লাখ লাখ সামরিক ও কূটনৈতিক গোপন নথি ফাঁস করে দিয়ে বিশ্বজুড়ে হৈ চৈ ফেলে দিয়েছিলেন।
ওই সব নথির মধ্যে মার্কিন বাহিনীর বিরুদ্ধে আফগান যুদ্ধ সম্পর্কিত ৭৬ হাজার এবং ইরাক যুদ্ধ সম্পর্কিত আরো ৪০ হাজার নথি ছিল, যা যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও পেন্টাগনকে চরম বেকায়দায় ফেলে দেয়।
অ্যাসাঞ্জকে বিচারের মুখোমুখি করতে যুক্তরাষ্ট্র শুরু থেকেই তাকে হস্তান্তরের জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছে। তবে অ্যাসাঞ্জ এর বিরুদ্ধে লন্ডন আদালতে আইনি লড়াই চালিয়ে আসছেন এবং তার বিরুদ্ধে মামলাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে বর্ণনা করেছেন।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের কৌসুলিরা বলছেন, অ্যাসাঞ্জ গোপন নথি ফাঁস করে অনেকের জীবন বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছেন। সেকারণেই যুক্তরাষ্ট্র তার হস্তান্তর চাইছে।
৪৯ বছর বয়সী জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ বর্তমানে যুক্তরাজ্যের বেলমার্শ কারাগারে আছেন। সেই ২০১২ সালের জুন থেকে তাকে একজন মুক্ত মানুষ হিসাবে জনসম্মুখে আসতে দেখা যায়নি।