যে সব প্রতিষ্ঠান ব্যবসা অব্যাহত রাখতে সমর্থ নয়- তাদের জন্য এক ধরনের সুবিধা; আর যারা ব্যবসা অব্যাহত রাখবে- তাদের জন্য ভিন্ন ধরনের সুবিধা দেওয়া হবে।
বুধবার এ বিষয়ে একটি সার্কুলার ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
ওই সার্কুলারে বলা হয়েছে, সাভারের চামড়া শিল্পনগরীতে স্থানান্তরিত শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত বিভিন্ন কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় অনেক ঋণ নিয়মিতভাবে পরিশোধিত না হওয়ায় তা বিরূপ মানে শ্রেণিকৃত হয়ে পড়ছে। ফলে এ খাতে স্বাভাবিক ঋণপ্রবাহ বজায় রাখা অনেক ক্ষেত্রে সম্ভব হচ্ছে না।
এ অবস্থায় চামড়া শিল্পের অনিয়মিত ঋণ আদায়সহ তা কমিয়ে আনতে নিচের পদক্ষেপগুলো গ্রহণের জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যে সব চামড়া শিল্পপ্রতিষ্ঠান ব্যবসা অব্যাহত রাখতে সমর্থ নয়, সে সকল প্রতিষ্ঠানগুলোকে এক্সিট পলিসির আওতায় ব্যাংকের ঋণ পরিশোধের সুযোগ প্রদান করা যাবে-
>> ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ তারিখভিত্তিক ঋণ স্থিতির ন্যূনতম ২% অর্থ ডাউন পেমেন্ট হিসাবে নগদে আদায় সাপেক্ষে এ সার্কুলারের আওতায় এক্সিট সুবিধা প্রদান করা যাবে।
>> ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ তারিখ ভিত্তিতে যে সকল প্রতিষ্ঠানের ঋণ স্থিতি ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত, সে সকল প্রতিষ্ঠানকে দায়-দেনা পরিশোধের জন্য সর্বোচ্চ ৩ বছর এবং যে সকল প্রতিষ্ঠানের ঋণ স্থিতি ৫ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে, সে সকল প্রতিষ্ঠানকে দায়-দেনা পরিশোধের জন্য সর্বোচ্চ ৫ বছর সময় প্রদান করা যাবে।
>> বিদ্যমান বিধি-বিধান ও আইন-কানুন পরিপালন সাপেক্ষে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে স্থগিত সুদ হিসাবে রক্ষিত সুদ, অনারোপিত সুদ ও দন্ড সুদ মওকুফ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে।
>> কোনো অবস্থাতেই আসল ঋণ মওকুফ করা যাবে না।
>> ব্যাংক গ্রাহকের সম্মতিক্রমে যৌথ উদ্যোগে জামানত হিসাবে রক্ষিত সম্পত্তি বিক্রি করতে পারবে।
অন্যদিকে চামড়া শিল্পনগরীতে স্থানান্তরিত যে সব শিল্প প্রতিষ্ঠান তাদের ব্যবসা অব্যাহত রাখবে, সে সব প্রতিষ্ঠানের ঋণ পুনর্গঠন/পুনঃতফসিলিকরণের ক্ষেত্রে নিচের নীতিমালাগুলো অনুসরণ করতে হবে-
>> ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০ তারিখ ভিত্তিক ঋণ স্থিতির ন্যূনতম ২% অর্থ ডাউন পেমেন্ট হিসাবে নগদে আদায় সাপেক্ষে এ সার্কুলারের আওতায় পুনর্গঠন/পুনঃতফসিল সুবিধা প্রদান করা যাবে।
>>) এ প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ ১ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ সর্বোচ্চ ১০ বছর (১ বছর + ৯ বছর) মেয়াদে ঋণ পুনর্গঠন/পুনঃতফসিল করা যেতে পারে।
>> বিদ্যমান বিধি-বিধান ও আইন-কানুন পরিপালন সাপেক্ষে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে স্থগিত সুদ হিসাবে রক্ষিত সুদ, অনারোপিত সুদ ও দন্ড সুদ মওকুফ বিষয়ে পর্ষদ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে।
>> কোন অবস্থাতেই আসল ঋণ/বিনিয়োগ মওকুফ করা যাবে না।
সার্কুলারে বলা হয়েছে, পুনর্গঠনকৃত/পুনঃতফসিলিকৃত ঋণ স্থিতির (মওকুফ অবশিষ্ট) উপর সর্বোচ্চ ৯% হারে সুদ আরোপ করা যাবে।
ইতোপূর্বে চামড়া খাতের জন্য ঘোষিত বিভিন্ন নীতিমালার আওতায় যারা ঋণ পুনর্গঠন/পুনঃতফসিল/সুদ মওকুফ সুবিধা গ্রহণ করেছে, তারাও এ সুবিধা পাওয়ার যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে।
>> জাল-জালিয়াতি বা অন্য কোন ধরনের প্রতারণা/অনিয়মের মাধ্যমে সৃষ্ট ঋণ গ্রহীতার অনুকূলে এ সুবিধা প্রদান করা যাবে না।
>> মওকুফকৃত সুদ পৃথক সুদবিহীন অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করতে হবে। এক্সিট বা পুনর্গঠন/পুনঃতফসিলের শর্ত মোতাবেক সম্পূর্ণ ঋণ পরিশোধ হওয়ার পর পৃথক হিসাবে স্থানান্তরিত সুদ চূড়ান্ত মওকুফ হিসেবে বিবেচিত হবে।
এই সুবিধার আওতায় সুবিধাপ্রাপ্ত ঋণ হিসাবসমূহের বিপরীতে আরোপিত সুদ প্রকৃত আদায় ব্যতিরেকে আয়খাতে স্থানান্তর করা যাবে না।
এ সুবিধা গ্রহণের পর নির্ধারিত ছয়টি মাসিক কিস্তি/২টি ত্রৈমাসিক কিস্তি পরিশোধে গ্রাহক ব্যর্থ হলে এ সুবিধা বাতিল বলে গণ্য হবে।
নির্ধারিত সময়ে ঋণ আদায় না হলে ঋণ শ্রেণীকরণ ও প্রভিশনিং এর প্রচলিত নিয়ম প্রযোজ্য হবে এবং ব্যাংক তার প্রচলিত নিয়মে ঋণ আদায় নিশ্চিত করবে।
এ সুবিধার আওতায় এক্সিট অথবা পুনর্গঠন/পুনঃতফসিল সুবিধা গ্রহণে ইচ্ছুক গ্রাহক নগদে ডাউন পেমেন্ট পরিশোধ সাপেক্ষে আগামী ৩১ মার্চ, ২০২১ তারিখের মধ্যে অর্থায়নকারী ব্যাংকের নিকট আবেদন করতে পারবে। এক্ষেত্রে ঋণ পরিশোধ বাবদ ইতোপূর্বে জমাকৃত অর্থ ডাউন পেমেন্ট হিসেবে বিবেচিত হবে না।
যথাযথভাবে ডাউন পেমেন্ট পরিশোধ সাপেক্ষে এ সুবিধার আওতায় ঋণ পুনর্গঠন/পুনঃতফসিলিকরণ বা এক্সিট সুবিধা চেয়ে কোন গ্রাহক আবেদন করলে, আবেদন প্রাপ্তির তারিখ হতে সর্বোচ্চ ৯০ দিনের মধ্যে গ্রাহকের আবেদনের বিষয়ে ব্যাংক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।