টেলিকম
খাতের অনিয়মকে নিয়ন্ত্রণ করা এবং ব্যবসায়ীদের সুযোগ-সুবিধা তৈরি করা মূল লক্ষ্য
হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার
বিটিআরসি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে আসেন বিটিআরসি
চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আসা শ্যাম সুন্দর।
টেলিকম
খাতের অগ্রগতির চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, “বিটিআরসিকে যে অবস্থায় পেয়েছি, সেখান
থেকে শুরু করতে চাচ্ছি এবং চলমান বিশ্বে যে জায়গায় উন্নত প্রযুক্তিগুলো আছে, সে
জায়গায় নিয়ে যেতে চাই। আমাদের টার্গেট নিয়েই চলব।”
অপারেটরদের
কাছে পর্যাপ্ত তরঙ্গ না থাকার কারণে উন্নত গ্রাহক সেবা দেওয়া যাচ্ছে বলে অপারেটররা
দাবি করে আসছে।
এ
বিষয়ে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, “স্পেকট্রামের ঘাটতি একটি ফ্যাক্টর, আরও ফ্যাক্টর
আছে।
“কোয়ালিটি
অব সার্ভিস নিয়ে এটা গাইডলাইন রয়েছে। সে গাইডলাইনে কিছু ত্রুটি রয়ে গেছে। সে
জায়গাটা রিপিয়ার করতে হবে। পাশাপাশি উন্নত গ্রাহক সেবা নিশ্চিত করার জন্য
স্পেকট্রাম কিনতে উৎসাহিত করতে হবে। সে উৎসাহ করা হচ্ছে। অচিরেই আরও কিছু
স্পেকট্রাম দিতে পারব। অপারেটররাও আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কিছু দিন আগে রবির
স্পেকট্রাম নবায়ন করে দিয়েছি।”
বিটিআরসি
প্রধান বলেন, “আমাদের মোবাইল অপারেটরদের সার্ভিস কেন স্যাটিসফেকটরি না এটার কিছু
কারণ আছে। একটা কারণ হচ্ছে স্পেকট্রাম। বাংলাদেশে প্রতি মিলিয়ন গ্রাহকের জন্য
দশমিক ৮২ মেগাহার্টজ স্পেকট্রাম ব্যবহার হয়, অথচ অস্ট্রেলিয়াতে এটার পরিমাণ ১২
দশমিক তিন শূন্য মেগাহার্টজ। কাজেই আমাদের এখানে স্পিড কম হওয়ার বড় কারণ।
“আরও
অনেক বিষয় যেমন কানেকটিভিতে ত্রুটি আছে। আইএসপি লাইসেন্স হোল্ডাররা নির্ধারিত
নীতিমালায় সেবা দেওয়ার কথা, সেটা কিন্তু তারা শেয়ারিং করে দিচ্ছে এজন্য ইন্টারনেট
স্পিড কম হয়। আমাদের জনবল ঘাতটি আছে টেকনিক্যালি আমাদের সক্ষমতারও কিছু ঘাতটি আছে
যা অচিরেই পূরণ করতে পারব।”
বিদ্যমান
নীতিমালায় কিছু ঘাটতির বিষয়টি স্বীকার করে শ্যাম সুন্দর বলেন, “অনিয়মকে রেগুলেট করব,
কিন্তু বিজনেস সেক্টরকে ফ্যাসিলেটেড করব এবং নিয়মের মধ্যে দিয়ে সবকিছু চলবে। এভাবে
চলতে চলতে ডিজিটালি উন্নত দেশের কাতারে যেতে চেষ্টা করব।”
কোন
কোন অপারেটর তরঙ্গ নিতে আগ্রহ জানিয়েছে- এ প্রশ্নে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, “খুব
শিগগিরই জানাতে পারব কাকে কত তরঙ্গ বরাদ্দ দেওয়া যাবে, আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে
এটি জানানো যাবে।”
উন্নত
গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করার জন্য তদারকির বিষয়ে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, “আমরা সেটা
নিয়ে কাজ করছি। আমরা এ নিয়ে আগের চেয়ে বেশি সিরিয়াসলি কাজ করছি।”
ভয়েস
কল মূল্যে কোনো পরিবর্তন আসছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কল রেটের পরিবর্তনের
বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাবে না এ বিষয়ে কাজ চলছে, পরে জানানো যাবে।
বিটিআরসি
ইএন্ডও মহাপরিচালক ব্রি জেনারেল এহসানুল কবির বলেন, “দেশের বিভিন্ন স্থানে ১২
হাজার কিলোমিটার ৬ মাস ধরে ড্রাইভ টেস্ট করা হবে। আমাদের নিজস্ব কিছু যন্ত্রপাতি
দিয়ে এটি করা হবে। প্রতি বিভাগে এ টেস্ট করা হবে। প্রতিমাসে যে প্রতিবেদন পাওয়া
যাবে, তা অপারেটরদের জানানো হবে।”
সম্প্রতি
চালানো ড্রাইভ টেস্টের তথ্য জানতে চাইলে বিটিআরসি প্রধান বলেন, “খারাপ। একেবারে
সত্য কথা বলি, সার্ভিস কোয়ালিটি খারাপ, এটা আসছে রিপোর্টে।”
নিরীক্ষা
নিয়ে গ্রামীণফোন ও রবির সঙ্গে টানাপোড়েন কোন অবস্থায় আছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিরীক্ষার
বিষয়ে আদালতে মামলা আছে, মামলা দ্রুত নিস্পত্তি ও টাকাও যাতে দ্রুত আদায় করা যায়
সে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
“এটাও
আরেকটি চ্যালেঞ্জ আমার জন্য। নিরীক্ষা একটি দীর্ঘ মেয়াদি ইস্যু, আলাপ-আলোচনার
মাধ্যমে নিষ্পত্তি করতে পারব বলে আশা করি।”
ফাইভ-জি
সেবা চালুর বিষয়ে বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, “ফাইভ-জি নিয়ে কয়েকটি টিম কাজ করছে,
কয়েকটি টিম নিয়ে এ কাজ করা হচ্ছে। আমাদের ফোর-জি সারাদেশে না হলেও ফাইভ-জিতে যেতে
চাই, একটি ধাপ থাকতেও আরেকটি ধাপে যেতে চাই। সরকারের ইচ্ছা অনুযায়ী আগামী ২০২৩
সালের মধ্যে ফাইভ-জি সেবা শুরু করতে চাই।”
ফাইভ-জির
জন্য অপারেটরদের জন্য নতুন তরঙ্গ বরাদ্দের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে এবং খুব শিগগিরই
এ সংক্রান্ত নীতিমালা চূড়ান্ত করা হবে বলেও জানান বিটিআরসি প্রধান।