তিনি বলেছেন, “আমরা আজ অনেকদূর এগিয়েছি সত্য। আমাদের আরও বহুদূর যেতে হবে।”
সরকারের বর্তমান মেয়াদের দুই বছর পূর্তিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আদর্শকে ধারণ করে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্য-নিরক্ষরতামুক্ত একটি অসাম্প্রদায়িক ও কল্যাণকামী বাংলাদেশ গড়ে তোলার শপথ নিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
পেছনে ফেলে আসা বছরগুলোর কথা স্মৃতিতে রেখেই বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দৃষ্টি প্রসারিত রেখেছেন সামনে।
“হতে পারে সে গন্তব্য পথ মসৃণ, হতে পারে বন্ধুর। বাঙালি বীরের জাতি। পথ যত কঠিনই হোক, আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে হবে। আমরা যদি পরিশ্রম করি, সততা-দেশপ্রেম নিয়ে দায়িত্ব পালন করি, তাহলে আমরা সফলকাম হবই, ইনশাআল্লাহ।”
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পাওয়ার পর টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ।
২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি নতুন সরকার গঠন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশে টানা এতদিন ক্ষমতায় থাকার রেকর্ড কারও নেই।
ভাষণের শুরুতেই তিনি বলেন, “বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রার এক গুরুত্বপূর্ণ সন্ধিক্ষণে এবং বৈশ্বিক মহামারির অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি।
“দুই বছর পূর্বে আজকের এই দিনে তৃতীয় মেয়াদে সরকার পরিচালনার যে গুরু দায়িত্ব আপনারা আমার উপর অর্পণ করেছিলেন, সেটিকে পবিত্র আমানত হিসেবে গ্রহণ করে আমরা সরকার পরিচালনার তৃতীয় বছর শুরু করতে যাচ্ছি।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমার পরম সৌভাগ্য যে, আপনাদের সকলের সঙ্গে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালন করতে পারছি এবং মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছি। এই শুভ মুহূর্তে আমি দেশ ও দেশের বাইরে অবস্থানরত বাংলাদেশের সকল নাগরিককে অভিনন্দন জানাচ্ছি এবং একই সঙ্গে খ্রিস্টীয় ২০২১-এর শুভেচ্ছা।”
মহামারী সঙ্কট
করোনাভাইরাসের মহামারীর কারণে পুরো বিশ্বকেই যে এক গভীর সঙ্কটের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে, সে কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহামারীর পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় আম্পান এবং উপর্যুপরি বন্যাও ২০২০ সালে দেশের অর্থনীতির উপর বিরূপ প্রভাব ফেলেছে।
“আমরা সেসব ধকল দৃঢ়তার সঙ্গে কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু করোনাভাইরাস-জনিত সঙ্কট থেকে বিশ্ব এখনও মুক্ত হয়নি।”
সরকার ভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে রাখার ‘সর্বোচ্চ চেষ্টা’ করে যাচ্ছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে বাংলাদেশে এখনও সংক্রমণ এবং মৃত্যু হার অনেক কম।”
তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোভিড-১৯ এর টিকাদান শুরু হওয়ায় যে আশার সঞ্চার হয়েছে, সে কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশেও আমরা দ্রুত টিকা নিয়ে আসার সব ধরনের চেষ্টা করছি। টিকা আসার পর পরই চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য-সহ সম্মুখসারির যোদ্ধাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা প্রদান করা হবে।”
তিনি বলেন, ভাইরাসের কারণে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার কথা বিবেচনা করেই যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে।
মহামারীর অভিঘাতে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করেছে এবং বাংলাদেশের অর্থনীতিও যে ক্ষতির মুখে পড়েছে, সে কথা প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে তুলে ধরেন।
তবে সরকার বিভিন্ন নীতি-সহায়তা এবং প্রণোদনার মাধ্যমে অর্থনীতির চাকাকে যে সচল রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে, সে কথাও তিনি বলেন ।
শেখ হাসিনা বলেন, এখন পর্যন্ত ১ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে, যা মোট জিডিপির ৪.৩ শতাংশ।
“পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমরা সে প্রক্রিয়া এখনও অব্যাহত রেখেছি। বিভিন্ন শ্রেণিপেশার প্রায় আড়াই কোটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠিকে আমরা নগদ অর্থসহ বিভিন্ন সহায়তার আওতায় এনেছি। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, গত অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি ৫.২৪ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারের প্রাক্কলন অনুয়ায়ী এ বছর জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ৭.৪ শতাংশে।
“করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের শুরুতে আমি আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলাম যে দেশবাসীর সহায়তায় আমরা এই দুর্যোগ সফলভাবে মোকাবিলা করব, ইনশাআল্লাহ। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে দেশবাসী এ দুঃসময়ে আমার এবং আমার সরকারের পাশে ছিলেন।
“আপনারা আমাদের এই দুর্যোগ মোকাবিলায় সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়েছেন। এ ধরনের যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভবিষ্যতেও আপনাদের পাশে পাব- এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।”
পথ পরিক্রমা
টানা এক যুগ দেশ শাসন করে নতুন একটি বছর শুরুর আগে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করিয়ে দেন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস।
তিনি বলেন, জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ২৪ বছরের রাজনৈতিক সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে। সেই বাংলাদেশ স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্ণ করতে যাচ্ছে আগামী ২৬ মার্চ।
“জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল একটি শোষণ-বঞ্চনামুক্ত গণতান্ত্রিক এবং অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গঠনের। যেখানে সকল ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণি-পেশার মানুষ সুখে-শান্তিতে বসবাস করবে। প্রতিটি মানুষ অন্ন-বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসার সুযোগ পাবে।”
বঙ্গবন্ধু যখন যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে পুনর্গঠন করে সেই স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, ঠিক তখন ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট ‘মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি’ যে তাকে সপরিবারে হত্যার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করে দিয়েছিল, সে কথাও শেখ হাসিনা বলেন।
“তারপর অনেক চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র। সামরিক শাসনের যাতাকলে নিষ্পেষণ, গণতন্ত্রহীনতা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-বিচ্যুতি, ইতিহাস বিকৃতিসহ শাসকদের নানা অপকীর্তি প্রত্যক্ষ করেছে এ দেশের মানুষ। জনগণের সম্পদ লুটপাট করে, তাদের বঞ্চিত রেখে, ৩০ লাখ শহীদের রক্তের সঙ্গে বেঈমানি করে বাংলাদেশকে পরনির্ভরশীল করে রেখেছিল।”
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর ছয় বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে ১৯৮১ সালে দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে দীর্ঘ ২১ বছর ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় ফেরে আওয়ামী লীগ।
“আমরা দায়িত্ব নিয়েই বাংলাদেশকে একটি আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে প্রতিষ্ঠিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। মাঝখানে ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত বিএনপি-জামাত এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় সে প্রচেষ্টায় ছেদ পড়েছিল।
“কিন্তু ২০০৯ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণের পর আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১২ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে একটি আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। আর্থ-সামাজিক এবং অবকাঠামো খাতে বাংলাদেশের বিস্ময়কর উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।”
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৮ সালে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ শীর্ষক ইশতেহার নিয়ে তার দল ক্ষমতায় এসেছিল। সেই ইশতেহারের মূল প্রতিপাদ্য ছিল দক্ষ, সেবামুখী ও জবাবদিহিতামূলক প্রশাসন গড়ে তুলে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ নির্মূল করে একটি ক্ষুধা-দারিদ্র্য-নিরক্ষরতা মুক্ত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা।
“২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উচ্চ মধ্যম-আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ আয়ের সমৃদ্ধশালী-মর্যাদাশীল দেশ। আমরা ২০২১ সালের পূর্বেই উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছি। প্রত্যাশিত লক্ষে পৌঁছতে আমরা পথ-নকশা তৈরি করেছি। রূপকল্প ২০৪১-এর কৌশলগত দলিল হিসেবে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১ প্রণয়ন করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, গত সপ্তাহে ২০২১-২০২৫ মেয়াদী যে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুমোদন পেয়েছে, তাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৪ লাখ ৯৫ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা।
এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে ১ কোটি ১৬ লাখ ৭০ হাজার কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে, দারিদ্র্যের হার ১৫.৬ শতাংশে এবং চরম দারিদ্র্যের হার ৭.৪ শতাংশে নেমে আসবে। ২০২৫ সালে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ৮.৫১ শতাংশে।
জলবায়ুর পরিবর্তনের ঘাত-প্রতিঘাত মোকাবিলা করে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য সরকার যে বদ্বীপ পরিকল্পনা নিয়েছে এবং মহামারীর মধ্যেও পদ্মাসেতুর মূল কাঠামোর কাজ শেষ করতে পেরেছে, সে কথাও প্রধানমন্ত্রী বলেন।
তিনি বলেন, “আশা করা হচ্ছে, আগামী বছর এই স্বপ্নের সেতু যানবাহন এবং রেল চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া সম্ভব হবে।”
এছাড়া মেট্রো রেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, কর্ণফুলী টানেলসহ বড় উন্নয়ন প্রকল্পের অগ্রগতির তথ্যও ভাষণে তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, “জনগণের সরকার হিসেবে মানুষের জীবনমান উন্নয়ন করা আমাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য বলেই আমি মনে করি। গত একযুগে আমরা জনগণের জন্য কী করেছি, তা মূল্যায়নের ভার আপনাদের।”
মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে ভীষণভাবে প্রভাবিত করে – সে রকম কয়েকটি খাতের কথা তিনি সংক্ষেপে তুলে ধরেন ভাষণে।
এ সময় বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়ন, খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ং-সম্পূর্ণতা অর্জন, গ্রামাঞ্চলে নাগরিক সুবিধা পৌঁছে দেওয়া, যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়ন, স্বাস্থ্যখাতে ‘ইতিবাচক পরিবর্তন’ আসার মত বিষয়গুলো তিনি পরিসংখ্যানসহ বর্ণনা করেন।
পাশাপাশি শিক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী খাতে সরকারের নেওয়া উদ্যোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নের মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের কথাও তিনি বলেন।
জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের যে মহাসড়ক বেয়ে দুর্বার গতিতে ধাবিত হচ্ছে, তা যেন কোনভাবেই বাধাগ্রস্ত হতে না পারে সেদিকে আপনাদের সকলের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
“উন্নয়নের পথে সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করতে আমরা বদ্ধপরিকর। কিছু অসাধু মানুষ নানা কৌশলে জনগণের সম্পদ কুক্ষিগত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত থাকে। আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছি। দুর্নীতিবাজ যে দলেরই হোক আর যত শক্তিশালীই হোক, তাদের ছাড় দেওয়া হচ্ছে না এবং হবে না।”
আইনের শাসন সমুন্নত রেখে মানুষের নাগরিক এবং গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করতে যা যা করা প্রয়োজন, সরকার তা করবে বলে জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, “আমরা কঠোর হস্তে জঙ্গিবাদের উত্থানকে প্রতিহত করেছি। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে সকল ধর্ম-বর্ণের মানুষ পারস্পরিক সহনশীলতা বজায় রেখে বসবাস করে আসছেন এবং ভবিষ্যতেও করবেন।”
সুবর্ণজয়ন্তীর শপথ
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানমালা আড়ম্বরপূর্ণভাবে উদযাপনের উদ্যোগ নিলেও মহামারীর কারণে পরিকল্পনা বদলাতে হয়েছে।
“আগামী ২৬ শে মার্চ আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। করোনাভাইরাসের প্রকোপ না থাকলে আমরা সাড়ম্বরে এই অনুষ্ঠান উদযাপন করব, ইনশাআল্লাহ। একইসঙ্গে চলতে থাকবে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানমালা।”
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের ‘সৌভাগ্য’ এবং আওয়ামী লীগের ‘গর্বের’ বিষয় যে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এই মাহেন্দ্রক্ষণে স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত।
“১৯৯৭ সালে রজতজয়ন্তী উদযাপনকালেও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিল। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ব্যতিত অন্য কোনো দল বা গোষ্ঠী স্বাধীনতার এই মাহেন্দ্রক্ষণকে স্মরণীয় করে রাখার তাগিদ অনুভব করবে না।”
১৯৭৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর জাতির উদ্দেশে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া ভাষণ থেকে উদ্ধৃত করে তার মেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “স্বাধীনতা সংগ্রামের চাইতেও দেশ গড়া বেশ কঠিন। দেশ গড়ার সংগ্রামে আরও বেশি আত্মত্যাগ, আরও বেশি ধৈর্য্য, আরও বেশি পরিশ্রম দরকার।
“ …আমরা যদি একটু কষ্ট করি, একটু বেশি পরিশ্রম করি, সকলেই সৎপথে থেকে সাধ্যমত নিজের দায়িত্ব পালন করি, সবচাইতে বড় কথা, সকলে ঐক্যবদ্ধ থাকি – তাহলে আমি বিনা দ্বিধায় বলতে পারি ইনশাআল্লাহ কয়েক বছরের মধ্যে আমাদের স্বপ্নের সোনার বাংলা আবার সোনার বাংলায় পরিণত হবে।”
অর্ধশতক পেরিয়ে এসে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দুয়ারে থাকা বাংলাদেশের মানুষের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আসুন আমরা নতুন করে শপথ নিই – মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং আদর্শকে ধারণ করে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্য-নিরক্ষরতামুক্ত একটি অসাম্প্রদায়িক কল্যাণকামী সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলব।”
করোনাভাইরাসের ‘অমানিশা’ দ্রুত কেটে যাবে, এই প্রত্যাশা রেখে ততদিন সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জীবনযাপন করার আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন প্রধানমন্ত্রী।