ক্যাটাগরি

যাত্রামোহন সেনগুপ্তের বাড়িটি জাদুঘর করার দাবি

বৃহস্পতিবার
চট্টগ্রাম নগরীর চেরাগী পাহাড় মোড়ে পিপলস ভয়েস এবং চট্টগ্রাম বিপ্লব ও বিপ্লবী স্মৃতি
সংরক্ষণ পরিষদ আয়োজিত নাগরিক সমাবেশ থেকে এ দাবি জানানো হয়।

পিপলস
ভয়েসের সভাপতি শরিফ চৌহানের সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক প্রীতম দাশের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত
সমাবেশে বক্তারা বাংলাদেশের সব ইতিহাস-ঐতিহ্য ও উপমহাদেশের রাজনৈতিক স্মৃতি সংরক্ষণের
দাবি জানান।

সমাবেশে
মুক্তিযোদ্ধা ও গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, “যাত্রামোহন সেনগুপ্তের বাড়িটির ঐতিহাসিক
মূল্য রয়েছে। এটি সংরক্ষণে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।”

ভারতীয়
কংগ্রেসের নেতা যাত্রামোহন সেনগুপ্ত রহমতগঞ্জে ১৯ গণ্ডা জমির উপর এই বাড়িটি নির্মাণ
করেছিলেন। চট্টগ্রামের এই আইনজীবীর ছেলে হলেন দেশপ্রিয় যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্ত।

ব্যারিস্টার
যতীন্দ্রমোহনও ছিলেন সর্বভারতীয় কংগ্রেসের নেতা। তিনি কলকাতার মেয়রও হয়েছিলেন। আসাম-বেঙ্গল
রেলওয়ের আন্দোলন, মহাত্মা গান্ধী, সুভাষ চন্দ্র বসু, শরৎ বসু, মোহাম্মদ আলী ও শওকত
আলীসহ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা বিভিন্ন সময় এই বাড়িতে এসেছিলেন।

ব্রিটিশবিরোধী
আন্দোলনের বিপ্লবীরাও এই বাড়ির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। সূর্য সেন, অনন্ত সিংহ, অম্বিকা
চক্রবর্তীর হয়ে মামলা লড়েছিলেন যতীন্দ্রমোহন। এতে ব্রিটিশ শাসকদের রোষানলে পড়ে ১৯৩৩
সালে কারাগারে মৃত্যু হয়েছিল যতীন্দ্রমোহনের।

ওই
জমিটি পরে ‘শত্রু সম্পত্তি’ ঘোষিত হয়। জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে শামসুদ্দিন মো. ইছহাক
নামে এক ব্যক্তি জমিটি ইজারা নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন।

তবে
যাত্রামোহনের এক স্বজনের কাছ থেকে কেনার দাবি করে আদালতের একটি আদেশ নিয়ে সোমবার বাড়িটি
ভাঙতে যায় একটি পক্ষ, স্থানীয়দের নিয়ে যা ঠেকিয়ে দেন যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর
রানা দাশগুপ্ত।

বাড়িটি
আলোচনায় উঠে আসল জেলা প্রশাসনের আবেদনে চট্টগ্রামের একটি আদালত বৃহস্পতিবার এক আদেশে
তা ভাঙার উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

সমাবেশে
শরিফ চৌহান বলেন, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতিধন্য এ জায়গা ভূমিদস্যুরা ভুয়া দলিল
সৃজন করে দখলের পাঁয়তারা করছে।

সমাবেশ
থেকে তিনি ঐতিহাসিক বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের
দাবি জানান।

সমাবেশে
সিপিবির চট্টগ্রাম জেলা সাধারণ সম্পাদক অশোক সাহা, সাংবাদিক প্রদীপ দেওয়ানজী, চট্টগ্রাম
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হোসাইন কবীর, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক
শুকলাল দাশ, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক রাশেদ হাসান,
সাংস্কৃতিক সংগঠক সুনীল ধর বক্তব্য রাখেন।

জাদুঘর করতে সিসিসি প্রশাসকের চিঠি

যাত্রামোহন
সেনগুপ্তের বাড়িটিকে জাদুঘর করার পদক্ষেপ নিতে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবকে চিঠি দিয়েছেন
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন।

বৃহস্পতিবার
মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউসকে পাঠানো চিঠিতে সুজন বলেন, চট্টগ্রামের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের
স্মৃতি সমৃদ্ধ এ ভবনটি ভাঙার চক্রান্ত চলছে, যা ইতোমধ্যে সচেতন জনতা রুখে দাঁড়িয়েছে।

তিনি
বলেন, ২০১৮ সালের ৯ জুলাই সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সভায় চট্টগ্রামে মাস্টারদা সূর্য সেনসহ
ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের সব বিপ্লবীদের স্মৃতি রক্ষায় জাদুঘর প্রতিষ্ঠার প্রকল্প প্রস্তাব
গৃহীত হয়েছিল। চট্টগ্রামের সচেতন নাগরিকরা মনে করেন সংবিধানের ২৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী
ঐতিহাসিক বাড়িটি রক্ষার মধ্যে দিয়ে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা যেতে পারে।

জাদুঘর
করার ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মুখ্য সচিবকে উদ্যোগ নেওয়ার
আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ নেতা সুজন।

আরও খবর


বুলডোজার ঠেকালেন রানা দাশগুপ্ত, রক্ষা পেল ঐতিহাসিক বাড়ি
 


‘যাত্রামোহনের বাড়ি রক্ষায় প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা’


‘যাত্রামোহনের বাড়ি রক্ষায় প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা’
 


যাত্রামোহন সেনগুপ্তের বাড়িতে স্থিতাবস্থা জারি
 


যাত্রামোহনের সেই বাড়ি রক্ষায় এবার আদালতে জেলা প্রশাসন

যাত্রামোহন সেনগুপ্তের বাড়ি ভাঙায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা