আওয়ামী
লীগ সরকারের বর্তমান মেয়াদের দুই বছর পূর্তিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে অনেক বিষয়ের পাশাপাশি রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে এ কথা বলেন
প্রধানমন্ত্রী।
তিনি
বলেন, মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত ১১ লাখ রোহিঙ্গা
জনগোষ্ঠিকে শান্তিপূর্ণভাবে নিজেদের দেশে ফেরত পাঠানোর ‘সব ধরনের চেষ্টা’ অব্যাহত
রয়েছে।
“আমি আন্তর্জাতিক
সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের স্বদেশে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আরও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।”
২০১৭
সালের ২৫ অগাস্ট মিয়ানমারের
রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর কয়েক মাসের
মধ্যে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে বাংলাদেশে ছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা।
আন্তর্জাতিক
চাপের মধ্যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও সেই প্রত্যাবাসন আজও শুরু হয়নি।
২০১৯
সালে দুই দফা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও রাখাইন রাজ্যের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কার কথা তুলে ধরে ফিরতে রাজি হননি রোহিঙ্গারা। তারা যেন নিরাপত্তা, মর্যাদা ও নাগরিক অধিকার
নিয়ে স্বভূমিতে ফিরতে পারে সেই বন্দোবস্ত করতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানানো হচ্ছে।
দুই দফায় ৩ হাজার ৪৪৬ জন রোহিঙ্গাকে কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে
প্রধানমন্ত্রী
বলেন, “কক্সবাজারে বিভিন্ন ক্যাম্পে তাদের (রোহিঙ্গাদের) কষ্ট লাঘবের জন্য ভাসানচরে এক লাখ মানুষের
বসবাসোপযোগী উন্নত মানের অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে শুধু স্ব-ইচ্ছায় যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পাঠানো হচ্ছে।”
কক্সবাজারের
শরণার্থী শিবির ও তার বাইরে
অবস্থান নিয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের নিয়ে নানা সামাজিক সমস্যা সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে দুই বছর আগে তাদের একটি অংশকে হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনার দ্বীপ ভাসান চরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয় সরকার।
সরকারের
নিজস্ব অর্থায়নে ২৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে মোটামুটি ১৩ হাজার একর
আয়তনের ওই চরে ১২০টি
গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করে এক লাখের বেশি
মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
টেকনাফ
ও উখিয়ায় থাকা রোহিঙ্গার মধ্যে ৩ হাজার ৪৪৬
জন গত ডিসেম্বর দুই
দফায় ভাসানচরে পৌঁছেছেন।
জাতিসংঘসহ
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এই স্থানান্তরের বিরোধিতা
করায় বাংলাদেশ বলেছে, কক্সবাজারের অস্বাস্থ্যকর ক্যাম্পের চেয়ে ভাসানচরের আশ্রয়ন প্রকল্পে অনেব বেশি ভালো থাকার সুযোগ পাবে রোহিঙ্গারা। তাদের ভাসানচরে স্থানান্তর প্রক্রিয়ায় বিরোধিতা না করে আন্তর্জাতিক
সম্প্রদায়ের উচিত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের বিষয়ে উদ্যোগী হওয়া।