ক্যাটাগরি

বাইডেনই পরবর্তী প্রেসিডেন্ট, মেনে নিলেন ট্রাম্প

মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই দ্বিতীয় দফা অভিশংসনের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনার মধ্যে বৃহস্পতিবার তিনি এ স্বীকৃতি দেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল ভবনে ট্রাম্প সমর্থকদের নজিরবিহীন হামলার ঘটনার পর ট্রাম্প ‘নিয়ম মাফিক ক্ষমতা হস্তান্তরের’ও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।

বৃহস্পতিবার সকালে ট্রাম্প নির্বাচনে কারচুপির ভিত্তিহীন অভিযোগ পুনর্ব্যক্ত করে তার জয় ‘চুরি করে নেওয়া হয়েছে’ অভিযোগ করেন। এরপর সন্ধ্যায় দেওয়া ভিডিও বার্তায় তিনি জানান, বাইডেন প্রশাসনের কাছে মসৃণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর নিশ্চিত করার দিকেই এখন তার সব মনোযোগ থাকবে।  

বাইডেন আগামী ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন।

ট্রাম্প তার ভিডিও বার্তায় বুধবারের সহিংসতারও নিন্দা জানিয়েছেন। বলেছেন, দাঙ্গাকারীরা যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করেছে।

সমর্থকদের উদ্দেশ্যে এ রিপাবলিকান বলেন, “আমি জানি আপনারা হতাশ, কিন্তু আমি আপনাদের জানাতে চাই- আমাদের অবিশ্বাস্য যাত্রার এটা কেবল শুরু।”

মেয়াদ শেষের আগে তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে ডেমোক্র্যাটদের চাপের মুখেই তিনি এ কথা বললেন।

বুধবার কংগ্রেস ভবনে হামলার পর প্রতিনিধি পরিষদের বিচারবিভাগীয় কমিটির বেশিরভাগ ডেমোক্র্যাট ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের কাছে পাঠানো চিঠিতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ‘ক্যাপিটলে হামলা উস্কে দিয়ে গণতন্ত্রকে অবমাননা করার চেষ্টা’র অভিযোগ করে বলেছেন, সংবিধানের ২৫তম সংশোধনী প্রয়োগ করে তাকে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হোক।

২৫তম সংশোধনী অনুযায়ী, কোনও প্রেসিডেন্ট  শারিরীক বা মানসিক অসুস্থতার কারণে ‘দায়িত্ব পালনে অক্ষম’ হলে মেয়াদ শেষের আগেই তাকে সরিয়ে দেওয়া যায় এবং ক্ষমতা সাময়িক কিংবা স্থায়ীভাবে ভাইস-প্রেসিডেন্টের হাতে তুলে দেওয়া যায়। ভাইস প্রেসিডেন্ট সেক্ষেত্রে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসাবে কাজ চালাতে পারেন।

একই সংশোধনীর চার নং ধারায় বলা আছে, কোনও প্রেসিডেন্ট ক্ষমতা হস্তান্তর করতে না পারলে ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রিসভার সদস্যরা তাকে ক্ষমতা থেকে সরানোর পদক্ষেপ নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে তারা প্রেসিডেন্টকে দায়িত্ব পালনে অপারগ হিসাবে গণ্য করে বিষয়টি কংগ্রেসকে জানাতে পারেন।

এরপর নিয়মানুযায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট সাময়িকভাবে দায়িত্ব নিতে পারবেন। তবে তার আগে কংগ্রেসে ভোটাভুটি করতে হবে।

আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাম্পকে ক্ষমতা থেকে সরাতে প্রতিটি চেম্বারেই দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের প্রয়োজন পড়বে। সেক্ষেত্রে এ পুরো প্রক্রিয়ায় পেন্সকেই অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। যদিও ভাইস প্রেসিডেন্টের এক উপদেষ্টা বলেছেন, পেন্স মেয়াদ শেষের আগে ট্রাম্পকে সরিয়ে দেওয়ার যে কোনো চেষ্টার বিরোধিতা করবেন।

পেন্স রাজি না হলে ডেমোক্র্যাট সাংসদরা প্রতিনিধি পরিষদে ট্রাম্পের অভিসংশন প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে বলে নিম্নকক্ষের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন।

বুধবারের সহিংসতার পর রিপাবিলকানদের একটি অংশও মেয়াদ শেষের আগেই ট্রাম্পকে সরে যেতে বলছেন।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের মতো রিপাবলিকানঘেঁষা পত্রিকাও তাদের সম্পাদকীয়তে প্রেসিডেন্টকে পদত্যাগ করতে আহ্বান জানিয়েছে।

ক্যাপিটলে ট্রাম্প সমর্থকদের নজিরবিহীন হামলার প্রতিবাদে হোয়াইট হাউসের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা এরইমধ্যে পদত্যাগ করেছেন।