শুক্রবার বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে মেয়েটির ময়নাতদন্ত হওয়ার পর ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান সোহেল মাহমুদ একথা বলেছেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “স্কুলছাত্রীর শরীরের কোথাও আঘাতের চিহ্ন পাওয়া না গেলেও যৌনাঙ্গ ও পায়ুপথে ক্ষত চিহ্ন পাওয়া গেছে। বিকৃত যৌনাচারের কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে।”
ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের সদস্যরা মেয়েটির মরদেহ নিয়ে যান।
রাজধানীর মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ‘ও লেভেলের’ ওই ছাত্রীকে অচেতন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দুপুরে ধানমণ্ডির আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া তার ছেলে বন্ধু ইফতেখার ফারদিন দিহানকে (১৮) একমাত্র আসামি করে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবারই হাসপাতাল থেকে দিহানকে গ্রেপ্তার করে কলাবাগান থানা পুলিশ। শুক্রবার মামলায় ‘দোষ স্বীকার’ করে তিনি ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
মেয়েটির বাবার দায়ের করা মামলায় বলা হয়েছে, তার মেয়েকে কলাবাগান ডলফিন গলির বাসায় ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন দিহান। প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণে অচেতন হয়ে পড়লে বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য আসামি নিজেই তাকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নিয়ে যান।
কলাবাগানে কিশোরীকে ধর্ষণ-হত্যা: ‘দায় স্বীকার’ করে বন্ধুর জবানবন্দি
জিজ্ঞাসাবাদে দিহানের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার সাজ্জাদুর রহমান দুপুরে সাংবাদিকদের বলেন, “দুইজনের সম্মতিতে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়।
“প্রথমে এড়িয়ে গেলেও মধ্যরাতে দিহান শারীরিক সম্পর্কের কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করে।”
তিনি বলেন, “ওই স্কুল ছাত্রী ও দিহানের সাথে বন্ধুত্ব বেশ কয়েক বছরের। বিষয়টি তাদের পরিবারের সদস্যরাও জানেন। তবে এজাহারে এই বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি।”
বৃহস্পতিবারের ঘটনার বিবরণে মামলায় বলা হয়, বৃহস্পতিবার সকাল আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে ওই ছাত্রীর মা কর্মস্থলের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হয়ে যান। এক ঘণ্টা পরে তার বাবাও ব্যবসায়িক কাজে বাসা থেকে বের হন।
দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ওই ছাত্রী তার মাকে ফোন করে কোচিং থেকে পড়ালেখার পেপার্স আনার কথা বলে বাসা থেকে বের হন। এই মামলার একমাত্র আসামি ‘ও’ লেভেল পড়ুয়া দিহান বেলা ১টা ১৮ মিনিটে ফোন করে ওই শিক্ষার্থীর মাকে জানান, মেয়েটি তার বাসায় গিয়েছিলেন। হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়ায় তাকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়েছে।
অফিস থেকে বের হয়ে আনুমানিক দুপুর ১টা ৫২ মিনিটে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা হাসপাতালে পৌঁছেন। হাসপাতালের কর্মচারীদের মাধ্যমে তিনি জানতে পারেন, আসামি তার মেয়েকে কলাবাগান ডলফিন গলির বাসায় ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন। প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণে অচেতন হয়ে পড়লে বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য আসামি নিজেই তাকে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে নিয়ে যান।
খবর পেয়ে কলাবাগান থানা পুলিশের একটি দল হাসপাতালে গিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।