ক্যাটাগরি

তুরাগ তীরে হবে নতুন শহর: স্থানীয় সরকারমন্ত্রী

জাতির
পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে রোববার কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে এক আলোচনায় সভায়
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, তুরাগের তীরে যে শহর হবে
সেখানে সব ধরনের নাগরিক
সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। 

“পরিবেশ
সংরক্ষণ করেই আধুনিক সকল সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত একটি অত্যাধুনিক দৃষ্টিনন্দন শহর তৈরির লক্ষ্যে কাজ চলছে। পুরান ঢাকাকে নতুন করে নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পুরান ঢাকা এমনভাবে সাজানো হবে যেখানে সত্যিকার অর্থে দেখার মত একটা শহর
হবে।

“এটি
বাস্তবায়ন করতে পারলে দেশের মানুষকে আর বিদেশে ভ্রমণ
করতে হবে না বরং বিদেশিরা
ঢাকা শহর ভ্রমণ করতে আসবে।”

সিঙ্গাপুরের
মডেল অনুসরণ করে পুরান ঢাকাকে ঢেলে সাজানোর জন্য ২০১৭ সালে একটি ধারণাপত্র তৈরি করেছিল রাজউক।

সেখানে
বলা হয়, ঘনবসতিপূর্ণ খণ্ড খণ্ড প্লটগুলোকে একত্র করে ভূমি পুনঃ উন্নয়নের (রি-ডেভেলপমেন্ট) মাধ্যমে
ব্লকভিত্তিক বহুতল আবাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। আগের ছোট ছোট ভবনের বাসিন্দাদের স্থানান্তর করা হবে সেই বহুতল ভবনে। ওই জমিতেই খেলার
মাঠ, পার্ক, রাস্তা, স্কুল, ব্যবসাকেন্দ্রসহ অন্যান্য নাগরিক সুবিধার ব্যবস্থা করা হবে।

পরিকল্পনায়
বলা হয়েছিল, অধিগ্রহণ করা ভবনের মালিকরাই জমির মালিক হবেন। অধিগ্রহণ করা জমির আনুপাতিক হারে বহুতল ভবন ও ব্যবসাকেন্দ্রের বরাদ্দ দেয়া
হবে রাজউক থাকবে অংশীদার হিসেবে।

পাইলট
প্রজেক্ট হিসেবে সে সময় বংশালের
২ দশমিক ২ একর জমি
বেছে নেওয়া হয়, যেখানে বর্তমানে ৭৭টি স্থাপনায় ৩১৬ ইউনিট পরিবারের বসবাস।

রাজউকের
পরিকল্পনায় বলা হয়, রি-ডেভেলপমেন্টের মাধ্যমে
ওই জমিতেই প্রায় ৭০০ পরিবারকে জায়গা দেওয়া যাবে। পাশাপাশি নাগরিক সুবিধার জন্য করা যাবে বাড়তি স্থাপনা।

কিন্তু
ওই বছর অক্টোবরে ঢাকা দক্ষিণ সিটির তখনকার মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের উপস্থিতিতে সিটি করপোরেশনের এক মতবিনিময় সভায়
রাজউকের পরিকল্পনা নিয়ে আপত্তি জানান বংশালের ওই এলাকার বাসিন্দারা।
তারা বলেন, প্রকল্পটি নিয়ে তারা আস্থার সঙ্কটে ভুগছেন; এটা বাস্তবায়নে কত বছর সময়
লাগবে, সে বিষয়েও তারা
সন্দিহান।

ওই
মতবিনিময় সভার পর মেয়র রাজউকের
পরিকল্পনাটি স্থগিত করার কথা জানালেও ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৭১ জনের মৃত্যুর
পর পুরান ঢাকাকে নতুন করে গড়ে তোলার প্রস্তাবটি আবারও সামনে আসে।

প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা সে সময় পুরান
ঢাকাকে নতুন করে গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দেন। পরে তখনকার গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ
ম রেজাউল করিম বলেন, পুরান ঢাকার জরাজীর্ণ ভবনগুলো ভেঙে আধুনিক ভবন নির্মাণ করে মালিকদের ফ্ল্যাট দেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে সরকার।

তবে
সেই পরিকল্পনার অগ্রগতির কোনো তথ্য পরে আর জানানো হয়নি
সরকারের তরফ থেকে।

রোববারের
অনুষ্ঠানে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ঢাকার সবগুলো খাল দখলমুক্ত করে নগরবাসীকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও আধুনিক বাসযোগ্য
শহর উপহার দিতে যত চ্যালেঞ্জই আসুক
না কেন তা ‘মোকাবেলা করা হবে’।

“যদি
হাতিরঝিল থেকে বনানী, হাতিরঝিল থেকে ইউনাইটেড হাসপাতাল পর্যন্ত সংযোগ স্থাপন এবং অন্যান্য খালগুলোকে একটির সাথে অন্যটির সাথে সংযোগ করা যায়, তাহলে অবশ্যই আমাদের ঢাকা বিদেশের চেয়েও দৃষ্টিনন্দন হবে। এমন একটি শহরেরই স্বপ্ন দেখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আর সে স্বপ্ন
পূরণে আমরা সবাই নিরলসভাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি।”

ঢাকা
উত্তর সিটি করপোরেশন আয়োজিত এই আলোচনা সভায়
‘সবার ঢাকা’ নামের একটি অ্যাপ উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।

উত্তরে
মেয়র মো. আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে তথ্য
ও প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আখতার মাহমুদ, উত্তর সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমিরুল ইসলাম বক্তব্য দেন।

মেয়র
আতিকুল ইসলাম বলেন, নগরবাসীর কাছে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতেই ‘সবার ঢাকা’ অ্যাপ চালু করা হয়েছে।

“আজ
এই ঐতিহাসিক দিবস উপলক্ষে অ্যাপের উদ্বোধন করা হচ্ছে। এই অ্যাপের মাধ্যমে
জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পাবে। আমরা প্রত্যেককে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে চাই। জবাবদিহি যেমন আমাকে করতে হবে, তেমনি প্রত্যেক কাউন্সিলর এবং প্রত্যেক কর্মচারীকেও করতে হবে।”