বুড়িগঙ্গার
পানি দূষণ বন্ধে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ
(এইচআরপিবি) করা জনস্বার্থের মামলায় সম্পূরক আবেদনে এ রুল জারি করা হয়েছে।
বিচারপতি
গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর হাই কোর্ট বেঞ্চ রোববার রুল
জারির পাশাপাশি ছয় সচিবকে এ মামলায় পক্ষভুক্ত করেছে।
তারা
হলেন- মন্ত্রিপরিষদ সচিব, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব,
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন
সচিব, অর্থ সচিব ও পরিবেশ সচিব।
আদালতে
আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি
অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাইনুল হাসান ও পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষে আইনজীবী আমাতুল
করিম।
মনজিল
মোরসেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আদালতের আদেশ/নির্দেশ প্রতিপালন
সংক্রান্ত পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতিবেদন দেখিয়ে বলেছি, আদালতের আদেশ নির্দেশনা সময়মতো
পালন করা হচ্ছে না। কারণ পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে, তাদের জনবল ঘাটতি আছে।
“এদিকে
পরিবেশ আইন, জলাধার আইন, ইটভাটা আইন, শব্দ দূষণ আইনে বিভিন্ন পদক্ষেপের জন্য
পরিবেশ অধিদপ্তরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এখন অধিদপ্তরে প্রয়োজনীয় জনবল বৃদ্ধি না
করলে বিদ্যমান আইনগুলো অকার্যকর হয়ে যাবে। যে
কারণে পর্যাপ্ত জনবল
নিয়োগের নির্দেশনা চেয়ে সম্পূরক আবেদন করা হয়েছিল। আদালত রুল দিয়েছেন। পাশাপাশি ছয়
সচিবকে এ মামলায় পক্ষভুক্ত করেছেন।”
শিল্পঘন ৩ জেলায় ‘পর্যাপ্ত পদ-জনবল নেই’
জনবল
ঘাটতির বিষয়টি উল্লেখ করে গত ৩ জানুয়ারি এ মামলায় একটি প্রতিবেদন দেয় পরিবেশ অধিদপ্তর।
তাতে
বলা হয়, ঢাকা বিভাগের অধীন ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর জেলায়
পরিবেশ দূষণ করার মতো হাজার হাজার শিল্পকারখানা থাকলেও অধিদপ্তরের ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর জেলা
কার্যালয়ে একজন উপপরিচালকের নেতৃত্বে মাত্র ১৪ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর পদ রয়েছে। জনবল
স্বল্পতার কারণে কোনো সময়ই ওই সকল কার্যালয়ের
সবগুলো পদে জনবল পদায়ন করা সম্ভবপর হয়নি।
পরিবেশ
অধিদপ্তর বলছে, এই তিনটি কার্যালয়ের
অধীনে অনেক শিল্প কারখানায় ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (ইটিপি) থাকলেও জনবল স্বল্পতার কারণে ইটিপিগুলো সার্বক্ষণিক চালু রাখা নিশ্চিতে পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক তদারক করা এবং দায়ী শিল্প কারখানার বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা সম্ভবপর হচ্ছে না।
ঢাকা,
নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর জেলায় ক্রমান্বয়ে শিল্পকারখানা বাড়তে থাকায় নদ-নদী, খাল-বিল, জলাশয়, বন, কৃষিজমি, জীববৈচিত্র্য তথা প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণের
পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়গুলোকে পরিচালকের কার্যালয়ে উন্নীত করে তদারক, গবেষণাগার ও এনফোর্সমেন্টের জন্য
পদ সৃষ্টি করে পর্যাপ্ত সংখ্যক জনবল নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
পদ
সৃষ্টির জন্য প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন সময় প্রস্তাব পাঠানো হলেও তা বিবেচনা করা
হয়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করে পরিবেশ অধিদপ্তর।
“পরিবেশ,
প্রতিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য শিল্পায়ন উপজেলায় পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যালয় স্থাপনের জন্য ২০১৯ সালের ১ অগাস্ট জনপ্রশাসন
মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হলেও এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া মেলেনি।”