বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে রোববার সাইফ স্পোর্টিংকে ১-০ গোলে হারায় বসুন্ধরা কিংস। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বন্ধ থাকা ফুটবল শুরুর পর হওয়া প্রথম প্রতিযোগিতার শিরোপা স্বাদ নিল অস্কার ব্রুসনের দল।
মাহবুবুর রহমান সুফিল ও বিপলু আহমেদের জায়গায় বসুন্ধরা কিংসের শুরুর একাদশে ফিরেন মতিন মিয়া ও মোহাম্মদ ইব্রাহিম। সেমি-ফাইনালের একাদশ অপরিবর্তিত রেখে শুরু করে সাইফ স্পোর্টিং।
আগের দিনের সংবাদ সম্মেলনে বসুন্ধরা কিংসকে ‘ফেরারি’ এবং নিজেদেরকে ‘টয়োটা’ বলেছিলেন সাইফ স্পোর্টিং কোচ পল জোসেফ পুট। তবে শুরু থেকে শক্তিশালী প্রতিপক্ষের সঙ্গে টক্কর দিয়েই লড়াই করে তার দল। গোলশূন্য প্রথমার্ধে দুই দলই ছিল সমানে সমান।
চ্যাম্পিয়ন জার্সি গায়ে বসুন্ধরা কিংসের উল্লাস।
চতুর্থ মিনিটে কিংসের তপু বর্মন জাল খুঁজে পেলেও অফসাইডের কারণে গোল হয়নি। ষোড়শ মিনিটে সতীর্থের লং বল ধরে ডান দিক দিয়ে আক্রমণে ওঠা বিশ্বনাথ ঘোষের শট ফিস্ট করে ফেরান সাইফ স্পোর্টিংয়ের গোলরক্ষক পাপ্পু হোসেন। একটু পর ডি-বক্সের ভেতর থেকে কিংসের বেসেরার শট বেরিয়ে যায় দূরের পোস্ট দিয়ে।
১৯তম মিনিটে সতীর্থের থ্রুস পাস অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে নিয়ন্ত্রণে নিলেও তালগোল পাকিয়ে শট নিতে পারেননি সাইফ স্পোর্টিংয়ের ইকেচুকু কেনেথ। নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ডের ব্যাকপাসে স্বদেশি জন ওকোলির জোরালো শট ক্রসবারের উপর দিয়ে যায়।
আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠা ম্যাচে পরের মিনিটেই আরেকটি ভালো সুযোগ পায় প্রথমবারের মতো কোনো প্রতিযোগিতার ফাইনালে ওঠা সাইফ স্পোর্টিং। বাঁ দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢোকা ফয়সাল আহমেদ ফাহিমের শট ছুটে এসে ফেরান আনিসুর রহমান জিকো।
প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে ডি-বক্সের একটু বাইরে বিশ্বনাথ ঘোষের হাতে বল লাগলে ফ্রি কিক পায় সাইফ স্পোর্টিং। রহমত মিয়ার দারুণ বাঁকানো শট ফিরিয়ে কিংসের ত্রাতা জিকো।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে রহমতের আচমকা দূরপাল্লার শট প্রথম দফায় লাফিয়ে ফিস্ট করার পর দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় গ্লাভসে নেন জিকো।
রানার্সআপ ট্রফি হাতে সাইফ স্পোর্টিং অধিনায়ক রিয়াদুল হাসান রাফি।
অবশেষে ৫২তম মিনিটে গোলের অপেক্ষা ফুরোয় কিংসের। প্রতি-আক্রমণে রবসন দি সিলভা রবিনিয়োর পাস ধরে গায়ের সঙ্গে সেঁটে থাকা ডিফেন্ডারের প্রতিরোধ ভেঙে বাঁ পায়ের নিখুঁত শটে দূরের পোস্ট দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন বেসেরা। প্রতিযোগিতায় সাইফ স্পোর্টিংয়ের কেনেথের মতো তার গোলও হলো ৫টি।
৬০তম মিনিটে ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার জোনাথন দা সিলভেইরা ফের্নান্দেসের বাড়ানো বল অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে নিয়ন্ত্রণে নিলেও ব্যবধান দ্বিগুণের সুযোগ নষ্ট করেন রবিনিয়ো। দ্রুত ছুটে এসে বল গ্লাভসবন্দি করেন পাপ্পু।
মরিয়া সাইফ স্পোর্টিংয়ের সমতায় ফেরার ভালো সুযোগ নষ্ট হয় ৬৯তম মিনিটে। কেনেথের বুলেট গতির শট কর্নারের বিনিময়ে ফেরান জিকো। একটু পর ডি-বক্সের ভেতর থেকে শরীরটাকে ঘুরিয়ে নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ডের শট বেরিয়ে যায় পোষ্ট ঘেঁষে।
৮৩তম মিনিটে মতিনকে তুলে তৌহিদুল আলম সবুজকে নামান বসুন্ধরা কিংস কোচ। তিন মিনিট পর ওকোলির দুর্বল শট ফিরিয়ে দলকে ফেডারেশন কাপের টানা দ্বিতীয় শিরোপা জয়ের পথে রাখেন জিকো।
৮৯তম মিনিটে বেসেরার কাছের পোস্টে নেওয়া শট কর্নারের বিনিময়ে পাপ্পু ফেরালে ব্যবধান দ্বিগুণ হয়নি। তাতে অবশ্য কমেনি বসুন্ধরা কিংসের শিরোপা উৎসবের রঙ।