লস কারমেনেসে শনিবার লা লিগায় ৪-০ গোলে জিতেছে বার্সেলোনা। এই জয়ে লিগ টেবিলে তৃতীয় স্থানে উঠল রোনাল্ড কুমানের দল।
গত বছর সেপ্টেম্বরে এই মাঠে ২-০ গোলে হেরেছিল বার্সেলোনা।
মৌসুমের শুরু থেকে লিগে বারবার হোঁচট খাওয়া বার্সেলোনা বিশেষ করে ধুঁকছিল প্রতিপক্ষের মাঠে। হতাশার সেই গণ্ডি ভেঙে বেরিয়ে আসা দলটি এই নিয়ে টানা চারটি অ্যাওয়ে ম্যাচে জিতল।
ফ্রেংকি ডি ইয়ংয়ের ভুলে ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই গোল খেতে বসেছিল বার্সেলোনা। ডি-বক্সের বাইরে এই ডাচ মিডফিল্ডারের দুর্বল-ব্যর্থ পাসের পর সতীর্থের পা ঘুরে বল ধরে জোরালো শট নেন রবের্তো সলদাদো। ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান মার্ক-আন্ড্রে টের স্টেগেন।
দ্বাদশ মিনিটে সৌভাগ্যসূচক গোলে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। মেসির পাস ধরে তাকেই ফেরত দিতে গিয়েছিলেন সের্হিও বুসকেতস। মাঝপথে সলদাদোর পায়ে লেগে ডি-বক্সে ফাঁকায় পেয়ে ঠাণ্ডা মাথায় নিখুঁত শটে বল জালে পাঠান একাদশে ফেরা গ্রিজমান। ফরাসি এই ফরোয়ার্ড অফসাইড পজিশনে থাকলেও বল প্রতিপক্ষের একজনের পায়ে লেগে আসায় গোল পায় তারা।
পাঁচ মিনিট পরই দ্বিতীয় গোল পেতে পারতো সফরকারীরা। গ্রিজমানের পাস পেয়ে ডান দিক থেকে উসমান দেম্বেলের শট দূরের পোস্টের একটু বাইরে দিয়ে যায়।
আথলেতিকে বিলবাওয়ের বিপক্ষে জয়ের নায়ক মেসি ৩৫তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। পাল্টা আক্রমণে মাঝমাঠ থেকে বল টেনে নিয়ে ডি-বক্সের বাইরে অধিনায়ককে পাস দেন গ্রিজমান। আর বল ধরে ভিতরে ঢুকে বাঁ পায়ের জোরালো শটে ঠিকানা খুঁজে নেন আর্জেন্টাইন তারকা। আক্রমণের শুরুতে বল বুসকেতসের হাতে লাগায় গোল বাতিলের আবেদন করে স্বাগতিকরা। তবে রেফারির সাড়া মেলেনি।
বিরতির আগেই মেসির নৈপুণ্যে ব্যবধান আরও বাড়ে, ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ পায় বার্সেলোনা। ৪২তম মিনিটে ডি-বক্সের ঠিক বাইরে থেকে লাফিয়ে ওঠা রক্ষণপ্রাচীরের নিচ দিয়ে নেওয়া ফ্রি-কিকে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন তিনি।
এবারের লিগে মেসির প্রথম ফ্রি কিক গোল, গত জুলাইয়ের পর প্রথম। লা লিগায় ফ্রি কিকে তার মোট গোল হলো ৩৭টি। তার অভিষেকের পর থেকে হিসেবে করলে ধারেকাছে নেউ কেউ; এই সময়ের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর ১৯টি। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে বার্সেলোনার জার্সিতে মেসির ফ্রি কিক গোল হলো ৪৮টি।
রেকর্ড সাতবারের পিচিচি ট্রফি জয়ীর এবারের আসরের শুরুটা ছিল ভীষণ সাদামাটা; প্রথম ছয় রাউন্ডে মাত্র ১ গোল। সেই মেসিই এখন ১১ গোল নিয়ে তালিকার চূড়ায়। এরই সঙ্গে দারুণ একটি কীর্তিও গড়া হলো তার; লা লিগার ইতিহাসে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে টানা ১৫ মৌসুমে ১০ এর বেশি করে গোল করলেন তিনি।
৬৩তম মিনিটে ডান দিক থেকে দেম্বেলের চিপ করে বাড়ানো বল ডি-বক্সে প্রথম ছোঁয়ায় নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দুরূহ কোণ থেকে নিখুঁত শটে স্কোরলাইন ৪-০ করেন গ্রিজমান।
এতে জয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় সঙ্গে সঙ্গে মেসিকে তুলে নেন কোচ।
৭৮তম মিনিটে বিপদ আরও বাড়ে গ্রানাদার; ডি-বক্সের বাইরে মেসির বদলি মার্টিন ব্রাথওয়েটকে ফাউল করে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন হেসুস ভালেহো। প্রতিপক্ষে এক জন কম থাকার সুযোগে বাকি সময়ে অবশ্য তেমন নিশ্চিত কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি দেম্বেলে-পেদ্রিদেরও তুলে নেওয়া বার্সেলোনা।
আসরে এই নিয়ে টানা আট ম্যাচ অপরাজিত রইলো তারা; টানা তিনটি সহ জয় ছয়টি, ড্র দুটি।
১৮ ম্যাচে ১০ জয় ও চার ড্রয়ে বার্সেলোনার পয়েন্ট হলো ৩৪। চার নম্বরে নেমে যাওয়া ভিয়ারিয়ালের পয়েন্ট ৩২।
১৫ ম্যাচে ১২ জয় ও দুই ড্রয়ে ৩৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে আতলেতিকো মাদ্রিদ।
১৭ ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে সাত নম্বরে গ্রানাদা।