ফ্যাশন ডিজাইন কাউন্সিল অব বাংলাদেশ’য়ের
উপ-সভাপতি ও ‘মেধা’র প্রতিষ্ঠাতা ডিজাইনার এমদাদ হক দীর্ঘ বিরতির পর আবারও সক্রিয় হয়ে
উঠছেন নিজের নকশার পোশাক নিয়ে।
তবে এবার নির্দিষ্ট কোনো বিক্রয়কেন্দ্র
নয়। পুরো আয়োজনটাই থাকবে অনলাইনে।
বহুদিন অসুস্থ থাকার পর তার এই কাজে ফিরে
আসা এবং শারীরিক অসুস্থতা কাটিয়ে ওঠার প্রাক্কালে নিজেকে আবার সক্রিয় করার চেষ্টা করছেন।
তার প্রতিষ্ঠানের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে
জানানো হয়, প্রতিনিয়ত ফেসবুক ‘আইঅ্যামএমদাদহক’ এই পেইজের মাধ্যমে তিনি তুলে ধরছেন নতুন
আঙ্গিকে তার বিশেষত্ব, পোশাক ও অন্যান্য পণ্য।
এবার তিনি পরিবেশ বান্ধব, রিসাইকেল সুতি
হাতে বানানো কাঁথা যুক্ত প্যাচ-ওয়াক কুইল্ট আনছেন দেশীও আমেজে।
কুইল্টের দাম ৭ হাজার ৫শ’ টাকা। শুধু
তাই নয় বিয়ের জন্য থাকছে ওয়েডিং কুইল্ট ভেলভেট, কাতান সংযুক্ত। দাম ৯ হাজার থেকে ১০
হাজার টাকা।
আরও থাকছে বর্জ্য সুতি সুতায় হাতে কাটা
ও তাঁতে তৈরি খাদি কাপড়ের পঞ্চ। ছেলে ও মেয়েদের
খাদি ও চেক শাল। দাম ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫শ’ টাকা। থাকবে বছর জুড়ে মাসব্যাপি
নতুন নতুন আকর্ষণ। আরও থাকছে গামছা টাই-ডাই তৈরি ফিউশন পোশাক। দাম ২ হাজার থেকে আড়াই
হাজার টাকা।
এছাড়াও রয়েছে বিয়ের পোশাক
দেশি ডুপিয়ান, প্রয়োজনে জামদানী দিয়ে
আচকান- কেউ চাইলে করে দেওয়া যাবে হাতে বানানো পাগড়ি ও মেলানো হালকা ওজনের শাল বা উত্তরীও।
নকশায় থাকবে পছন্দসই জারদোজী, কারচুপি ও এম্ব্রয়ডারি। পাশাপাশি চাইলে থাকছে মানানসই
শাড়ি ও ওড়না। দাম নির্ভর করবে পণ্য ও নকশার ওপর।
ফিরে দেখা
১৯৮৫ সাল থেকে দেশীয় ফ্যাশন জগতে যুক্ত
আছেন এমদাদ হক। সেই সময়ে বিচিত্রা ম্যাগাজিনের ফ্যাশন-বিভাগ থেকে যাত্রা শুরু। এরপর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিপণন বিভাগে পড়াশোনা শেষে যোগ দেন ব্র্যাক’য়ের প্রতিষ্ঠান ‘আরডিপি’তে।
পাঁচ বছর সেখানে কাজ করেন সিল্ক সেরিকালচার চাষের বিভিন্ন প্রক্রিয়া ও হ্যান্ডলুমে
পরীক্ষিত সিল্ক উৎপাদনে।
১৯৯৭ সালে গ্রামীন ব্যাংকের প্রকল্প গ্রামীন
চেকে’র গ্রামীন উদ্যোগে জড়িত হন। কটন টানায় সুতা, জুট, জুট সিল্ক মিশ্রণে নানান কাপড়
তৈরিতে কাজ করে গেছেন সে সময়। বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন আন্তর্জাতিক
ফ্যাশন মেলায়।
সেই বছরেই গ্রামীন উদ্যোগের কর্মকর্তাদের
সঙ্গে শুরু করেন ‘বাংলার মেলা’। তেরো বছর সেই প্রতিষ্ঠান আগলিয়ে পরে তিনি নিজের নামেই
ব্র্যান্ড চালু করেন, নাম ‘স্টুডিও এমদাদ’। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে সেভাবে প্রতিষ্ঠিত
করতে পারেননি নিজের ব্র্যান্ড।
মেধা
এভাবে কটা বছর কেটেছে। তারপর ২০২০ সালে
‘মেধা’, ‘আমরাও পারি’ নামে ফাউন্ডেশন তৈরির পরিকল্পনা নেন।
মেধা’র মূল প্রকল্প হল প্রতিটি মানুষের
শখ, মনের খোরাক জাগিয়ে তোলা ও লালন করা, এক অর্থে চর্চা করা। যা বিশ্বব্যাপি সৃজনশীল
অর্থনীতি নামে পরিচিত। উল্লেখ্য ব্রিটিশ কাউন্সিলের সহায়তায় ঈশিতা আজাদের তত্ত্বাবধানে একটি সৃজনশীল
দল যুক্তরাজ্যে সফরে যান তাদের সৃজনশীলতা দেখা, পর্যালোচনা ও জ্ঞান আহরণের জন্য। যা
পরে বাংলাদেশে প্রয়োগ করা সম্ভব কি-না তা নিয়ে তার সম্ভবনা যাচাই করা। মেধা’র জন্ম
সেখান থেকেই।
অভিনেতা আফজাল হোসেনের তৈরি করা লোগো
ও সচিব নাসির উদ্দিনের দেওয়া ট্যাগলাইনে নিয়ে
মেধা’য় এখন চলছে মনের কথা জানিয়ে চিঠি লেখা ও চিঠি পাঠ।