ক্যাটাগরি

নির্বাচন বানচালে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুললেন কাদের মির্জা

সোমবার সকালে বসুরহাট রূপালী চত্বরে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের নিয়ে আয়োজিত নির্বাচনী সমাবেশে তিনি এই অভিযোগ করেন।

টানা তিন বারের মেয়র কাদের মির্জা আগামী ১৬ জানুয়ারির নির্বাচনে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে নিজের ‘জীবন দিতে প্রস্তুত’ বলে মন্তব্য করেন।

বিভিন্ন নির্বাচনী সভায় নানা বক্তব্য দিয়ে তিনি আলোচনায় এসেছেন। ইতোমধ্যে বিভিন্ন জনসভা ও পথসভায় দেওয়া তার আঞ্চলিক উচ্চারণের বক্তব্য সমালোচকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

সমাবেশে নিজের বড় ভাই সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের প্রসঙ্গ টেনে কাদের মির্জা আঞ্চলিক উচ্চারণে বলেন, “আমাদের মিনিস্টার সাব, উনি এই এলাকার সংসদ সদস্য। এখানে ভোট ডাকাতি হলে-মারামারি হলে-হানাহানি হলে উনার কিছু দায়িত্ব আছে না? উনার ওপর এটা বর্তাইতো ন? এই ঝামিলার বোঝা উনার উপরে বর্তাইতো ন? হেই মিয়ার দুর্নাম অইতো ন?”

সমাবেশে উপস্থিত জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, “তো উনার শুভাকাঙ্ক্ষী কেউ থাকলে উনারে বলি দেন ইয়ানে ফেয়ার ইলেকশনটা কইরবারলাই, নোয়াখালীর এই দুষ্টচক্ররে বলি দিবারলাই।”

নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নানা ‘ষড়যন্ত্র’ হচ্ছে অভিযোগ তুলে কাদের মির্জা বলেন, এই নির্বাচনকে অনিয়মের বিরুদ্ধে আন্দোলনের অংশ হিসেবে নিয়েছেন তিনি।

“এখন নির্বাচনে কালিমা লাগানোর জন্য, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য নানা ষড়যন্ত্র বিভিন্ন জায়গা থেকে হচ্ছে। মাইজদী থেকে হচ্ছে, ফেনী থেকে হচ্ছে।”

এই প্রসঙ্গে তিনি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে উষ্মা প্রকাশ করেন।

“ডিসি সাহেব, এসপি সাহেব, নির্বাচন অফিসার উনারা কী করছেন বুঝি না। যুব মহিলা লীগের পরিচয় দিয়া আমারে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করল। মোবাইল ট্র্যাক করে তার নাম ঠিকানা সব পাওয়া গেছে। আজকে তিন দিন কিছুই হয়নি।”

এখন নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমি স্পষ্ট ভাষায় বলব- যেই কেন্দ্রে কেউ ভোট ডাকাতি করবে, সেই কেন্দ্র সাথে সাথে বন্ধ হবে। প্রয়োজনে ১০ বার ভোট হবে। কিন্তু নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করা চলবে না।”

কাদের মির্জা বলেন, “আল্লাহকে হাজির নাজির জেনে বলছি, যদি নির্বাচনের দিন আপনারা দেখেন আমি অনিয়মের নির্বাচন করছি, আল্লাহার কাছে প্রার্থনা করে বলছি, হে খোদা আমি যদি অনিয়মের ভোটের সাথে সম্পৃক্ত হই, তুমি সেদিনই আমাকে মৃত্যু দেবে।”

একদল ষড়যন্ত্রকারী উত্তেজনা সৃষ্টি করে, অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেন কাদের।

বসুরহাট পৌরসভা ভোটে ‘প্রহসন’ হলে, জাল ভোট পড়লে প্রশাসনকে এর দায়-দায়িত্ব নিতে হবে বলে তিনি হুঁশিয়ার করেন।

“অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে আপনাদেরকেই দায় নিতে হবে। সোজা কথা, আমি আমার রক্ত দিয়ে, জীবন দিয়ে হলেও ১৬ তারিখের নির্বাচন নিরপেক্ষ করব।”

নির্বাচনে পরাজিত হলে প্রতিপক্ষ প্রার্থীকে অভিনন্দন জানিয়ে নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফিরে যাবেন; আবার দলের কর্মকাণ্ড শুরু করবেন বলে জানান।

মেয়র পদপ্রার্থী বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের নাম উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এই মেয়র প্রার্থী বলেন, “যদি কোথাও কারচুপি হয় আমাকে জানাবেন। আমিসহ একসাথে বর্জন করব। আমি আজ নির্বাচন অফিসারের সাথে কথা বলেছি। নির্বাচনের সাথে সংশ্লিষ্ট তারা যদি কোনো অনিয়মের সাথে জড়ায় তাহলে এই কোম্পানীগঞ্জ থেকে তাদের বিদায় নিতে হবে।”

নির্বাচন কমিশনার শহাদাত হোসেন চৌধুরীর নাম উল্লেখ করে কাদের মির্জা বলেন, “শাহাদত সহেব নির্বাচন কমিশনার, অত্যন্ত ভালো মানুষ। উনি আসার কথা ছিল আগামী দিন। অদৃশ্য কারেণ আসছেন না। আজকে আমার সাথে কথা হয়েছে। উনি বলেছেন যে ফেয়ার নির্বাচনের জন্য সকল ব্যবস্থা করবেন।

“যদি না করেন উনি এই এলাকার সন্তান হিসেবে, নির্বাচন কমিশনার হিসাবে উনার দায়িত্ব এড়াবার কোনো সুযোগ আছেনি? আমাদের মিনিস্টার সাবের যেমন নাই, উনারও নাই। উনার এলাকায় গণ্ডগোল হইলে সারাদেশে কইব শাহাদত সাবের এলাকায় গণ্ডগোল হইছে, ওবায়দুল কাদের সাবের এলাকায় গণ্ডগোল হইছে, ভোট চুরি। কইব না?”

এই সময় তিনি দলীয় নেতাদের সমালোচনা করে বলেন, “ফেনীতে একজন উপজেলার চেয়ারম্যানকে প্রকাশ্যে গুলি করে পেট্রোল ঢেলে র্নিমমভাবে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে, কিন্তু আজও বিচার হয়নি। নোয়াখালীতে নিয়োগ বাণিজ্য ও টেন্ডারবাজি চলছে।”