সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তারা উপাচার্যের বাসভবনে দেখা করতে যান; রাত ৯টার দিকে তারা উপাচার্যের বাড়ির প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন।
এই সময় ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান মিলে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন নেতাকর্মীকে দেখা গেছে।
রাত সাড়ে ১১টার দিকে প্রক্টর অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান অনুরোধ করলেও তারা তালা খুলে দেননি।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, “আমরা জানতে পেরেছি সব ধরনের নিয়োগ বাতিল রাখার নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও আজ এডহকে একজনকে সেকশন অফিসার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের কেন চাকরি হচ্ছে না সেটি জানতেই নেতাকর্মীরা গিয়েছিলেন।”
ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফারুক হাসান সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে একটি চিঠি দিয়ে নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে।
“আমরা মনে করি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই চিঠি ১৯৭৩ সালের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের যে অ্যাক্ট আছে সেই অ্যাক্টের পরিপন্থি। উপাচার্য যদি দুর্নীতি করে থাকেন, তাহলে তাকে কেন অপসারণ করা হচ্ছে না? অপসারণ না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ করে কেন রাখা হয়েছে?”
তিনি জানান, তারা এর জবাব চাইতে গিয়েছিলেন; কিন্তু তিনি কোনো সদ্যুত্তর পাননি।
যতক্ষণ না দিতে পারবেন, ততক্ষণ তাকে অবরুদ্ধ রাখবেন বলে জানান তিনি।
অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে উপাচার্যের বাড়ির ভিতরে আটকে থাকা অবস্থায় প্রক্টর অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান উপাচার্যের বরাতে বলেন, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে সুপারিশ করে একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে একজন প্রতিবন্ধী ছেলেকে চাকরি দেওয়ার জন্য। সকালে ওই ছেলেকে এডহকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এজন্য ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা চাকরি চাইতে এসেছিলেন।
“কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ ঘোষণা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তাই উপাচার্য বলেছেন, তার এ বিষয়ে কিছুই করার নেই। এ কারণে তারা হয়ত তালা দিয়েছে।”
চলতি বছরের ৪ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দুর্নীতির তথ্য-উপাত্ত সংবলিত ৩০০ পৃষ্ঠার অভিযোগ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে (ইউজিসি) দিয়েছেন আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের একাংশ।
পরে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে অভিযোগসমূহ তদন্তে ইউজিসি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তদন্ত কমিটি উভয়পক্ষের বক্তব্য উপস্থাপনে উন্মুক্ত শুনানির আয়োজন করে। কিন্তু তাতে উপাচার্য হাজির হননি।
তদন্ত শেষে গত ২১ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় ইউজিসি। পরে গত ১০ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক চিঠিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নিয়োগ স্থগিত করে দেয়।