ক্যাটাগরি

অস্ট্রেলিয়ায় সার্চ ইঞ্জিন সেবা বন্ধের হুমকি গুগলের

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অস্ট্রেলিয়া সরকারের ঐতিহাসিক এই আইন
বাস্তবায়িত হলে সংবাদ কনটেন্টের জন্য দেশটির প্রকাশকদেরও লাভের
ভাগ দিতে বাধ্য থাকবে গুগল, ফেইসবুকসহ অন্য প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো, যারা এ ধরনের কনটেন্ট
প্রকাশ ও প্রচারের মাধ্যমে মুনাফা করে।  

গুগল বলছে, এ ধরনের আইন করলে তা অস্ট্রেলিয়ায় তাদের সেবাকে
বাধাগ্রস্ত করবে। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন, তার দেশের
আইনপ্রণেতারা হুমকিতে পিছু পটবেন না। 

এ আইন হলে গুগল ও ফেইসবুককে অস্ট্রেলিয়ার সংবাদ প্রকাশকদের
সঙ্গে বসে কনটেন্টের মূল্য নির্ধারণের জন্য আলোচনায় আসতে হবে।

গুগল অস্ট্রেলিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেল সিলভা শুক্রবার
সেনেটের শুনানিতে বলেছেন, যে খসড়া নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, সেটাই যদি আইন হিসেবে পাস হয়,
তাহলে অস্ট্রেলিয়ায় গুগল সার্চ বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় তাদের থাকবে না।

প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন, এ বছরই পার্লামেন্টে আইনটি
পাস করার বিষয়ে তার সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

একটা বিষয় আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই। অস্ট্রেলিয়ায় কী করা যাবে,
সেই নিয়ম আমাদের পার্লামেন্টই ঠিক করে দেয়। যারা সেটা মেনে কাজ করতে আগ্রহী, তাদের
আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু কোনো হুমকিতে আমরা নড়ব না।”

বিবিসি লিখেছে, অস্ট্রেলিয়ার অন্য আইনপ্রণেতারাও গুগলের ওই
বক্তব্যকে ‘ব্ল্যাকমেইল’ এবং ‘গণতন্ত্রের ওপর করপোরেট দাদাগিরি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।  

অস্ট্রেলিয়া কেন
এই আইন করতে চায়?

বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের মত অস্ট্রেলিয়াতেও রয়েছে গুগলের সার্চ ইঞ্জিনের
একচ্ছত্র আধিপত্য। দেশটির সরকারের ভাষায়, এটি এখন নিত্য প্রয়োজনীয় জরুরি সেবার মত হয়ে
উঠেছে, আর এই সেবার বাজারে গুগলের তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে
না। 

এখন সার্চে আসা সংবাদ কনটেন্ট মানুষ পড়লে সেখান থেকে গুগল যেহেতু লাভ করছে,
সেহেতু সেই লাভের একটি ন্যায্য ভাগ তাদের সংবাদ প্রকাশকদেরও দেওয়া উচিৎ বলে মনে করছে
অস্ট্রেলিয়র সরকার।

আর গণতন্ত্রের জন্য শক্তিশালী গণমাধ্যম যেহেতু জরুরি, সেহেতু অস্ট্রেলিয়া
সরকার সাংবাদিকতার জন্যও সহায়তা করাকে দায়িত্ব বলে মনে করছে।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০০৫ সলের পর থেকে অস্ট্রেলিয়ার ছাপা পত্রিকার বাজারে
বিজ্ঞাপন বাবদ আয় কমেছে ৭৫ শতাংশ। ফলে সাম্প্রতিক সময়ে অনেক সংবাদমাধ্যম বন্ধ হয়ে গেছে,
অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মী ছঁটাই করতে বাধ্য হয়েছে।

বিবিসি লিখেছে, অস্ট্রেলিয়া সরকারের এই উদ্যোগের জবাবে গুগল তাদের একেবারে
প্রাথমিক সেবা বন্ধের যে হুমকি দিয়েছে, তা সবচেয়ে মারাত্মক হুমকিও বটে। আর অন্য সব
দেশও সতর্কভাবে এই বিতর্কে নজর রাখছে।

এ সপ্তাহের শুরুতে
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধিরা অস্ট্রেলিয়াকে ওই আইন করার উদ্যোগ থেকে সরে
আসার আহ্বান জানায়। তাদের ভাষায়, ওই আইন হলে তা নিশ্চিতভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের দুটি
কোম্পানির জন্য ক্ষতিকর হবে।

গুগল অস্ট্রেলিয়ার
ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেল সিলভা বলছেন, ইন্টারনেট যেভাবে কাজ করে, অনলাইনে তথ্য
যেভাবে মুক্তভাবে সঞ্চালিত হয়, সেই ধারণার সঙ্গেই ‘সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়’ অস্ট্রেলিয়া
সরকারের প্রস্তাবিত ওই আইন।

“এটা হলে আর্থিক এবং
ব্যবস্থাপনার যে ঝুঁকি তৈরি হবে, তাতে অস্ট্রেলিয়ায় আমাদের সেবা চালিয়ে যাওয়ার
কোনো পথ আমরা দেখছি না।”