ক্যাটাগরি

মন্ত্রীদের বক্তব্য সতীনের ছেলেকে বাঘ মারতে পাঠানোর মত: রিজভী

শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন,
“কোনো
কোনো মন্ত্রী যখন বলেন, বিএনপি চাইলে করোনার
টিকা তাদেরকে সবার আগে দেওয়া হবে, তখন এই টিকার প্রতি
মানুষ গভীর ষড়যন্ত্র খুঁজে পায়। টিকা প্রসঙ্গে সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্য সতীনের
ছেলেকে বাঘ মারতে পাঠানোর মত।”

সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনাভাইরাসের টিকার ২০ লাখ ডোজ বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে পাঠিয়েছে ভারত। ওই একই টিকার তিন কোটি ডোজ সরকারিভাবে কিনছে বাংলাদেশ, যার প্রথম চালান ২৫ জানুয়ারির মধ্যে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

বিএনপি শুরু থেকেই বিভিন্নভাবে এই টিকা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে আসছে। টিকার দাম, চুক্তির প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি উপহার হিসেবে
ভারত আসলে কোন টিকা পাঠিয়েছে, তা নিয়েও সন্দেহ
প্রকাশ করছেন তারা।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি একাধিকবার বলেছেন, দেশের সাধারণ মানুষ করোনাভাইরাসের টিকা কীভাবে কতটা পাবে, সে বিষয়ে তার সংশয় আছে। এর প্রতিক্রিয়ায় তথ্যমন্ত্রী হাছান
মাহমুদ গত বুধবার বলেন, বিএনপি আগে
করোনাভাইরাসের টিকা নিতে চাইলে সে ব্যবস্থা করার জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে তিনি
‘অনুরোধ জানাবেন’।

ভারতের উপহার পাঠানো সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনাভাইরাসের টিকার বাক্স।

ভারতের উপহার পাঠানো সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনাভাইরাসের টিকার বাক্স।

আওয়ামী লীগ নেতা হাছানের ওই বক্তব্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করার পাশাপাশি
শুক্রবারের সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন,
রাষ্ট্রপতি
ও প্রধানমন্ত্রী যদি সবার আগে টিকা নেন,
তাতে
জনমনে ‘আস্থা’ বাড়বে।

“আমি রাষ্ট্রপতি ও
প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান জানাব, পৃথিবীর দেশে দেশে
রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা যেভাবে টিকার প্রথম ডোজ নিয়ে মানুষকে আস্থা ও ভরসা
দিচ্ছেন, আশ্বস্ত করছেন আপনারাও সেই
পথ অনুসরণ করুন। তাদের মত আপনারাও সাহসী পদক্ষেপ নিন। টিকা নিয়ে ভ্রান্ত ধারণা
কাটাতে সহায়ক হবে। অনাগ্রহ কাটিয়ে দেশবাসীকে টিকায় আগ্রহী করে তুলবে।”

সরকারের উদ্দেশে এই বিএনপি নেতা বলেন,
“আপনার
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলছেন, ভিআইপিরা আগে নেবে
না, সাধারণ মানুষরা আগে নেবে।
এতে মানুষের মনে গভীর সন্দেহ তৈরি হয়েছে,
টিকাটা
আগে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় যারা আছেন,
সেখান
থেকে শুরু করলে মানুষের মধ্যে আস্থা আসবে। আপনারা আগে টিকা নিলে জনগণ ভরসা পাবে।
এই টিকা নিতে সাহস পাবে গোটা দেশবাসী।”

সরকার শুরু থেকেই কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলায় ‘লেজেগোবরে’ অবস্থা করে ফেলেছে
বলে মন্তব্য করেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব।

তিনি বলেন, “করোনা
ট্রেস-টেস্ট-ট্রিটমেন্ট নিয়ে কেলেঙ্কারির পর এবার করোনা নিয়ে নানা তেলেসমাতির
কারণে টিকাগ্রহণের ব্যাপারেও মানুষের মনে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে, অবিশ্বাস দানা বেঁধেছে।”

নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি
চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া,
কেন্দ্রীয়
নেতা আবদুস সালাম আজাদ, সেলিমুজ্জামান সেলিম, একরামূল হক বিপ্লব উপস্থিত ছিলেন।