মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুক্রবার ৪৩ ওভার ৪ বলে ১৪৮ রানে গুটিয়ে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
নিজের প্রিয় প্রতিপক্ষের বিপক্ষে আবার উজ্জ্বল মিরাজ। তরুণ এই অফ স্পিনার ২৫ রানে নেন ৪ উইকেট, ওয়ানডেতে তার ক্যারিয়ার সেরা। আগের সেরাও ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই, ২৯ রানে ৪ উইকেট পেয়েছিলেন তিনি।
ম্যাচ জুড়ে দুর্দান্ত বোলিং করা মুস্তাফিজ ২ উইকেট নেন ১৫ রানে। আগের ম্যাচের নায়ক সাকিবেরও শিকার দুটি, ৩০ রানে।
সকাল থেকে রোদ পেয়েছে উইকেট। তাই আগের দিনের মতো অতোটা ধরেনি স্পিন। এরপরও তা যেন দুর্বোধ্যই হয়ে রইলো সুনিল আমব্রিস-ওটলিদের কাছে।
টস জিতে জেসন মোহাম্মেদের
ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত ছিল বেশ অবাক করার। তামিম ইকবাল জানান, আগের ম্যাচের মতো এবারও ফিল্ডিংই নিতেন তিনি। যে ভাবনা থেকে আগে বোলিং নিতে চাওয়া, তা পূরণ করেন মুস্তাফিজ-মিরাজ-সাকিবরা।
নিখুঁত লাইন-লেংথে বোলিং করে যাওয়া মুস্তাফিজের বলে রান করার পথ পাচ্ছিলেন না ব্যাটসম্যানরা। মাঝে মধ্যে বল ভেতরে ঢোকানোয় বাঁহাতি এই
বোলারের বিপক্ষে বাড়তি সাবধানতা ছিল তাদের।
আগের ম্যাচের মতো ভেতরে ঢোকা বলেই মুস্তাফিজ নেন প্রথম উইকেট। গালিতে মিরাজের হাতে ধরা পড়েন আমব্রিস।
চতুর্থ ওভারে জোড়া আঘাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চেপে ধরেন মিরাজ। অফ স্টাম্পের বাইরের লেংথ বল জায়গা বানিয়ে কাভারের ওপর দিয়ে খেলতে গিয়ে তামিম ইকবালের হাতে ধরান পড়েন কেয়র্ন ওটলি। ভুল লাইনে খেলে বোল্ড হয়ে যান জশুয়া দা সিলভা।
সাকিবকে উইকেট উপহার দেন আন্দ্রে ম্যাককার্থি। অনেকটা যেন প্রথম ম্যাচের পুনরাবৃত্তি। বাঁহাতি স্পিনারের বলে একইভাবে দৃষ্টিকটু স্লগ সুইপ করে বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি।
আগের ম্যাচে প্রতিরোধ গড়া কাইল মেয়ার্স খুলতে পারেননি রানের খাতা। অপ্রয়োজনীয় এক রান আউটে ফিরেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। ৪১ রানে ৫ উইকেট হারানো ওয়েস্ট ইন্ডিজের জন্য তখন একশ রানই দূরের পথ।
শুরু থেকে আস্থার সঙ্গে খেলছিলেন এনক্রুমা বনার। হাসান মাহমুদের করা শরীরের বেশ কাছের বল কাট করার চেষ্টায় বোল্ড হয়ে ফিরেন এই অলরাউন্ডার। পরের ওভারে জেসনকে এলডিব্লিউর ফাঁদে ফেলেন সাকিব।
টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যর্থ রেমন রিফার। মিরাজের বলে সফল এলবিডব্লিউর রিভিউ নিয়ে তাকে ফেরায় বাংলাদেশ। এরপর শুরু হয় রভম্যান পাওয়েলের লড়াই। শেষ দুই ব্যাটসম্যানকে নিয়ে দলকে দেড়শ রানের কাছে নিয়ে যান তিনি।
নবম উইকেটে তাকে দারুণ সঙ্গ দেন আলজারি জোসেফ। তিন চারে ১৭ রান করা এই টেল এন্ডার ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে সফরকারীদের সর্বোচ্চ ৩২ রানের জুটিটি ভাঙেন মুস্তাফিজ।
এরপর আকিল হোসেনকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন পাওয়েল। পেসারদের ভালোভাবেই সামলাচ্ছিলেন তারা। নিজের শেষ ওভারে বোলিংয়ে আসা মিরাজকে বেরিয়ে এসে ওড়াতে গিয়ে বলের নাগাল পাননি পাওয়েল। বেলস ফেলে দেন মুশফিক।
৬৬ বলে দুই চার ও এক ছক্কায় ৪১ রান করে ফিরেন পাওয়েল।
টানা দুই ম্যাচে উইকেটশূন্য রুবেল। তবে আগের ম্যাচের চেয়ে এদিন লাইন-লেংথে অনেক বেশি ধারাবাহিক ছিলেন তিনি। অভিষেকে আলো ছড়ানো হাসান এ দিন ভুগেছেন বেশ। খরুচে বোলিংয়ে ৫৪ রান দিয়ে নিয়েছেন একটি উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৪৩.৪ ওভারে ১৪৮ (আমব্রিস ৬, ওটলি ২৪, জশুয়া ৫, ম্যাককার্থি ৩, জেসন ১১, মেয়ার্স ০, বনার ২০, পাওয়েল ৪১, রিফার ২, জোসেফ ১৭, আকিল ১২*; মুস্তাফিজ ৮-৩-১৫-২, রুবেল ৭-০-২৩-০, হাসান ৯-০-৫৪-১, মিরাজ ৯.৪-০-২৫-৪, সাকিব ১০-০-৩০-২)।