ক্যাটাগরি

প্রধানমন্ত্রীর ঘর উপহার: দেশজুড়ে আনন্দধারা

তালিকাভুক্ত প্রায় নয় লাখ পরিবারের মধ্যে প্রথম দফায় জমিসহ ৬৬ হাজার ১৮৯টি ঘরের মালিকানা বুঝিয়ে দেওয়া হয় শনিবার।


গৃহহীনদের ঘর উপহার সবচেয়ে বড় উৎসব: প্রধানমন্ত্রী
 

দুই শতক জায়গার উপর নিয়ে দুইটি শোবার ঘর, রান্নাঘর ও বাথরুম। ইটের দেয়াল, উপরে টিনের চাল। আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর প্রতিটি ঘরের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা।

এ বিশাল কর্মযজ্ঞের প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন আমাদের জেলা প্রতিনিধিরা।

বাগেরহাট

পরের জমিতে ঘর বেঁধে স্ত্রী সন্তান নিয়ে বাস করা বাগেরহাট সদর উপজেলার শ্রীঘাট গ্রামের তরিকুল ইসলামের কথায় উঠে আসে কীভাবে তারভাগ্যে জুটল এ ঘর।

তিনি বলেন, একদিন এলাকায় মাইকের শব্দ কানে এল। বলা হচ্ছিল, যাদের জমি নাই, ঘরও নাই তাদের ঘর দেওয়া হবে। তাদের নির্ধারিত দিনে ইউনিয়ন পরিষদে যেয়ে নামের তালিকা জমা দিতে বলা হয়।

“আমি এই সংবাদ পেয়ে ইউনিয়ন পরিষদে যেয়ে আমার নাম জমা দেই। এরপর একদিন ইউনিয়নের সব ভূমি ও গৃহহীনদের উপস্থিতিতে প্রশাসন লটারির মাধ্যমে নির্বাচন করে। ওই লটারিতে আমার ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায়।”

ভ্যানরিকশা চালক তরিকুল আরও বলেন, স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে আমার ছোট সংসার। লটারিতে নিজের একটা স্থায়ী বাসস্থান জুটে যাওয়ায় আমি দারুণ খুশি।

বাগেরহাটের ডিসি ফয়জুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে ভূমি ও গৃহহীন পরিবারকে ঘরের চাবি ও জমির দলিল হস্তান্তর করেছেন। তারই অংশ হিসেবে বাগেরহাট জেলার নয়টি উপজেলায় ৪৩৩টি পরিবার এ ঘর পাবে।

“এরমধ্যে আমরা আজ শনিবার জেলার ৩৩৮টি পরিবারকে ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি ঘরগুলো তৈরির কাজ চলছে। খুব শিগগির তা হস্তান্তর করা হবে।”

উপকূলীয় বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলায় ১৯৭টি, বাগেরহাট সদরে ৫৪টি, কচুয়ায় ৩৬টি, রামপালে ১০টি, মোংলায় ৫০টি, মোল্লাহাটে ৩৫টি, চিতলমারিতে ১৭টি, ফকিরহাটে ৩০টি এবং মোরেলগঞ্জে ৬টি পরিবার এ ঘর পাচ্ছে।

যশোর

যশোরে আটটি উপজেলায় প্রথম ধাপে ৬৬৬টি পরিবারকে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক জমিসহ ঘর প্রদান করা হয়েছে।

শনিবার হাতে জমিসহ নতুন ঘর পেয়ে উচ্ছ্বসিত সুবিধাভোগীরা ‘মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দেওয়ায়’ প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

যশোরের আট উপজেলায় এক হাজার ৭৩টি পরিবারকে জমিসহ নতুন ঘর দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এর মধ্যে শনিবার প্রথম ধাপে ৬৬৬টি পরিবারকে জমি ও ঘর প্রদান করা হলো। বাকি ৪০৭ পরিবারকে দ্রুত জমিসহ ঘর হস্তান্তর করা হবে বলে প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

প্রথম পর্যায়ে যশোর সদর উপজেলায় ২৯০টি, ঝিকরগাছায় ১৯টি. চৌগাছায় ২৫টি, মণিরামপুরে ১৯৯টি, অভয়নগরে ৫৭টি, কেশবপুরে ১২টি ও শার্শা উপলোয় ৫০টি জমিসহ ঘর বুঝে পেয়েছেন সুবিধাভোগীরা।

উপকারভোগী শাহিনুর বেগম বলেন, “আমার জায়গা জমি ছিলে না। পরের বাড়ি কাজকর্ম করতাম ও ভাড়া বাড়িতে থাকতাম। জীবনে অনেক কষ্ট করেছি। এখন আমাদের মা জননী হাসিনা জায়গা দিয়েছে, ঘর দিয়েছে- আমি তাতে অনেক খুশি। তার জন্য নামাজ পড়ে মোনাজাত করব। আমাদের মতো গরিবদের পাশে যেন সে সারা জীবন থাকতে পারে। আমাদের চোখের পানিটা যেন মুছে যায়। দোয়া করি প্রধানমন্ত্রী সারা পৃথিবীর কাছে সম্মান পায়।”

হাবিল উদ্দীন নামে অপর একজন সুবিধাভোগী বলেন, “আমাদের সংসারে পাঁচজন লোক। মাঠে ঘাটে কাজ করে খাই। আমার কোনো জমি নেই। প্রধানমন্ত্রী জমি দেছে, ঘর দেছে। এ পেয়ে আমি খুব খুশি। বিনামূল্যে জমি-ঘর পাবো কোনোদিন ভাবিনি।”

স্বপন শেখ নামে আরেকজন বলেন, ‘আমার বাড়ি রূপদিয়া। আমরা পরের ভিটায় থাকি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমারে জমিসহ ঘর দেছে। আমার সন্তানদের নিয়ে পরের জমিতে থাকতি হবে না। এখন আমি আর ভূমিহীন ঘরহীন না। আমি প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘায়ু কামনা করি। তিনি যেন মানুষের কল্যাণে আরো কাজ করতে পারেন।’

চাঁদপুর

উপহার পেয়ে খুবই আনন্দিত চাঁদপুর সদরের উপকারভোগীরা।

প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিয়ে উপকারভোগী মেঘনাথ ত্রিপুরা বলেন, “ঘর পেয়ে খুবই খুশি হলাম। আমার ঘর বাড়ি ছিল না। প্রধানমন্ত্রী দেয়ার কারণে আমার এখন সবকিছুই হল।”

আরেক উপকারভোগী সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমার ঘর-বাড়ি নদীতে পাঁচবার ভাঙা দিয়েছে। এরপর একজায়গায় আশ্রয় নিয়ে ছিলাম। এখন পরিবার পরিজন নিয়ে মাথা গোজার ঠাঁই হয়েছে।

হাবিবুর রহমান বলেন, শুকরিয়া আদায় করছি এবং প্রধামন্ত্রীর জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করছি।

রাস্তার মাটি কাটার শ্রমিক চামেলী গৃহহীন ত্রিপুরা বলেন, স্বামীর রোজগার দিয়ে খুবই কষ্টে দিন কাটিয়েছি। এখন নিজেও কাজ করি।

সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের বাসিন্দা পিংকি রানী ত্রিপুরা বলেন, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে মাথা গোজার ঠাঁই ছিল না। প্রধামন্ত্রী ঘরের ব্যবস্থা করায় তাকে ধন্যবাদ জানাই।

চাঁদপুরে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর পেয়েছেন ১১৫টি পরিবার।

নওগাঁ

নওগাঁয় এক হাজার ৫৬টি পরিবার পেল ঘর।

নওগাঁ সদর উপজেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে উপকারভোগীদের মাঝে ঘরের কাগজপত্র হস্তান্তর করা হয়।

নওগাঁ জেলা প্রশাসক হারুন-অর-রশীদ বলেন, জেলায় ‘ক’ ও ‘খ’ শ্রেণির গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারের সংখ্যা ৮ হাজার ৪৯৩টি। প্রথম পর্যায়ে জেলার এক হাজার ৫৬টি পরিবারকে দুই শতাংশ খাস জমি বন্দোবস্ত পূর্বক গৃহ প্রদান করা হচ্ছে।

“অন্যের বাড়িতে ও রাস্তার পাশে ঝুঁপড়ি ঘরে, স্বামী পরিত্যক্তা ও বিধবা, দিনমজুর, ভিক্ষুক ও প্রতিবন্ধীদের অগ্রধিকার দেওয়া হয়েছে।”

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় এ জেলার ১১টি উপজেলায় এক হাজার ৫৬টি পরিবার ঘর পেয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১১০টি, বদলগাছীতে ৪৮টি, মহাদেবপুরে ৩৪টি, আত্রাইয়ে ১৭৫টি, রানীনগরে ৯০টি, মান্দায় ৯০টি, সাপাহারে ১২০টি, নিয়ামতপুরে ৭১টি, পোরশায় ৫৪টি, ধামইরহাটে ১৫০টি এবং পত্নীতলায় ১১৪টি ঘর রয়েছে।

এগুলোর মধ্যে ভিক্ষুক পরিবার ৩১টি, প্রতিবন্ধী ১৫টি, অন্যের বাড়িতে-রাস্তার পাশে ও খোলা জায়গায় ঝুপড়ি ঘরে থাকা ১১টি, স্বামী পরিত্যক্তা ও বিধবা ৫৫টি, দিনমজুর ১২টি, আদিবাসী ৯১টি এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পরিবার রয়েছে ৭৩টি।

মান্দা উপজেলার ভূমিহীন তাহমিনা বেগম অন্যের জায়গায় বেড়ার ঘর করে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করে।

তিনি বলেন, “এখন নতুন বাড়িতে স্বামী-সন্তান নিয়ে উঠব। দুবেলা দুমুঠো খেয়ে ঘুমাতে পারব নিশ্চিন্তে।”

অন্যের বাড়িতে স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করা সদর উপজেলা বর্ষাইল ইউনিয়নের বাচারী গ্রামের দিনমজুর রেজাউল ইসলাম বলেন, “ঘরগুলো অনেক সুন্দর হয়েছে।

“কয়েকদিনের মধ্যে ঘর বুঝিয়ে দেয়া হবে। আল্লাহর রহমতে নিশ্চিতে ঘরে বসবাস করতে পারব।”

দুইটি শোবার ঘর, একটি টয়লেট, রান্নাঘর, কমনস্পেস ও একটি বারান্দা নিয়ে গড়া আধাপাকা প্রতিটি গৃহ নির্মাণে বরাদ্দ ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭১ হাজার টাকা।

চুয়াডাঙ্গা

চুয়াডাঙ্গা জেলায় জমি ও ঘর পেয়েছে ১৩৪ গৃহহীন পরিবার।

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠান থেকে ভূমি ও ঘরহীনদের জমির দলিল ও ঘরের চাবি হস্থান্তর করা হয়।

জেলার চারটি উপজেলার মধ্যে সদরের ৩৪, আলমডাঙ্গার ৫০, দামুড়হুদার ৩২ ও জীবননগরের ১৮ পরিবারকে দেওয়া হয় আধাপাকা নতুন ঘর।

চুয়াডাঙ্গা ডিসি নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, এক হাজার ১৩১ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে ঘর ও জমি দেওয়া হবে। মুজিববর্ষের মধ্যেই নির্ধারিত ভূমিহীন ও গৃহহীনরা ঘর পাবেন। শুরুতে দেওয়া হয়েছে ১৩৪ পরিবারকে।

ঘর পেয়ে আলোকদিয়া ইউনিয়নের হাতিকাটা গ্রামের রেহেনা বেগম বলেন, “আমারা সরকারি জমিতে থাকতাম। এখন ঘর ও নিজের জমি হল। খুব ভাল লাগছে। কল (টিউবওয়েল) পোতা হলে এবং বিদ্যুত লাইন দিলে তাড়াতাড়িই ওই ঘরে উঠব।”

হাতিকাটা গ্রামের ইকরামুল হকের জানান, তার ভাই তরিকুল ঘর পেয়েছে।

“আমরা খুবই খুশি। পাকা ঘরে থাকা যাবে।“

মুন্সীগঞ্জ

মুন্সীগঞ্জের ছয়টি উপজেলার ৫০৮ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার শনিবার ঘর পেয়েছে।

‘ক’ শ্রেণির পরিবারের অন্তর্ভুক্ত ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল ও অসহায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ৫০৮টি পরিবার পাবে দুই শতাংশ জমির দলিল এবং এক লাখ ৭১ হাজার টাকা ব্যায়ে নির্মিত দুই কক্ষ বিশিষ্ট আধাপাকা ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়।

এ ৫০৮টি গৃহের মধ্যে সদর উপজেলায় ১০০টি, গজারিয়া উপজেলায় ১৫০টি, লৌহজং উপজেলায় ১৪৩টি, সিরাজদিখান উপজেলায় ২৫টি, টঙ্গীবাড়ি উপজেলায় ২০টি, শ্রীনগর উপজেলায় ৭০টি পরিবার জমির দলিলসহ এসব ঘর পেয়েছে।

ঠিকানা বিহীন পরিবারগুলো স্থায়ী ঠিকানা পাওয়ায় আনন্দে বিভোর এখন।

জয়পুরহাট

মুজিববর্ষ উপলক্ষে জয়পুরহাট জেলায় ১৬০টি পরিবারকে মাঝে জমি ও গৃহ প্রদান করা হয়েছে।

শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ কর্যক্রমের উদ্বোধন শেষে জেলার পাঁচটি উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ১৬০টি পরিবারের মাঝে নবনির্মিত এসব বাসগৃহের দলিল হস্তান্তর করা হয়।

গৃহহীনদের জন্য তৈরি প্রধানমন্ত্রীর উপহার হস্তান্তর

বসত ঠিকানা হলো রাঙামাটির ২৬৮ পরিবারের

রাঙামাটি

ডিসি মামুনুর রশিদ জানান, রাঙামাটির ভূমিহীন ও গৃহহীন ২৬৮টি পরিবারকে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।

প্রথম দফায় রাঙামাটি সদর উপজেলায় ৬০, কাপ্তাই উপজেলায় ৩০, রাজস্থলী উপজেলায় ৬২, বরকল উপজেলায় ১৯, বাঘাইছড়ি উপজেলায় ৩৫, লংগদু উপজেলায় ৩৪ ও নানিয়ারচর উপজেলায় ২৮টিসহ ২৬৮টি ঘর নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।

তিনি আরও জানান, রাঙামাটি জেলায় ৭৩৬টি বসত-ঘর নির্মাণের বরাদ্দ এসেছে। প্রধম ধাপে আমরা ‘ক’শ্রেণির (জমি নেই, ঘর নেই) ২৬৮টি পরিবার ঘর বুঝিয়ে দিচ্ছি। বাকি ঘরগুলোও নির্মাণাধীন রয়েছে।

দিনাজপুর

ভূমিহীন ও গৃহহীন জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসনে ‘আশ্রায়ন প্রকল্প’র আওতায় দিনাজপুর জেলার ১৩টি উপজেলায় তিন হাজার ২২টি পরিবারকে ঘরের চাবি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ডিসি মাহমুদুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রথম পর্যায়ে ৪ হাজার ৪৭৬টি পরিবার বাড়ি পাবেন। তবে নির্মান শেষ করা ৩ হাজার ২২ জনকে শনিবার ঘর প্রদান করা হয়েছে। অবশিষ্ট ঘর নির্মাণ শেষ হলেই পর্যায়ক্রমে হস্তান্তর করা হবে।

টাঙ্গাইল

এ জেলার ১২টি উপজেলার ৬০৭টি পরিবার আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ এর কবুলিয়ত দলিলসহ নব-নির্মিত বাসগৃহ পেয়েছেন বলে টাঙ্গাইলের ডিসি ড. মো. আতাউল গণি জানিয়েছেন।

টাঙ্গাইল জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে উপকারভোগীদের হাতে দলিল তুলে দেওয়া হয়েছে।

কুষ্টিয়া

কুষ্টিয়ার ৬টি উপজেলার ১৫৭টি পরিবার শেখ হাসিনার উপহার জমিসহ দুই কক্ষ বিশিষ্ট ঘর পেয়েছেন।

উপকারভোগীদের এসব ঘরের চাবি, জমির কাগজ বুঝিয়ে দেন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

এ উপলক্ষে সকালে মিরপুর উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

জেলা প্রশাসন থেকে জানায়, আশ্রয়ন প্রকল্প-২ প্রথম ধাপে কুষ্টিয়া জেলার ১৫৭টি গৃহহীন পরিবারের মধ্যে সদর উপজেলায় ১টি, মিরপুর উপজেলায় ৫৬টি এবং ভেড়ামারা উপজেলায় ১০০টি ঘর দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া একই প্রকল্পের আরও ১৮০টি গৃহ নির্মাণের কাজ চলছে। এসব নির্মাণাধীন গৃহগুলোর মধ্যে সদর উপজেলায় ৩২টি, কুমারখালী উপজেলায় ৫৭টি, খোকসা উপজেলা ৩০টি এবং দৌলতপুর উপজেলায় ৬১টি।

বরিশাল

বরিশাল জেলার ভূমি ও গৃহহীন এক হাজার নয়টি পরিবারকে মাথা গোজার জন্য ঘর দিয়েছে সরকার।

শনিবার জেলার ডিসি জসিম উদ্দিন হায়দার জানান, মুজিববর্ষ উপলক্ষে বরিশালের ১ হাজার ৫শ’ ৫৬টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও ঘর দেওয়া হবে।

“আজ ১ হাজার ৯টি পরিবারের হাতে জমি ও ঘরের কাগজ তুলে দেওয়া হয়েছে। অবিশিষ্ট ৫৪৭টি গৃহ নির্মাণের কাজ আগামী ১৭ মার্চের মধ্যে শেষ হবে। জমি ও ঘর পেয়ে খুশি সুবিধাভোগীরা।”

পঞ্চগড়

এ জেলায় ১ হাজার ৬৮ গৃহহীন পরিবারকে সেমিপাকা ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে শনিবার।

ডিসি ড. সাবিনা ইয়াসমিন জানান, সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত ১ হাজার ৫৭ পরিবারের মধ্যে পঞ্চগড় সদর উপজেলায় ২০৮, দেবীগঞ্জে ৫৮২, বোদায় ৫৫, আটোয়ারীতে ৭০ এবং তেঁতুলিয়া উপজেলায় ১৪২টি পরিবারকে এ ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়।

এছাড়া স্থানীয়ভাবে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাদের অর্থায়নে আরও ১১টি পরিবারসহ মোট ১ হাজার ৬৮ পরিবারকে সেমিপাকা ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয় বলে জানান তিনি।

এ উপলক্ষে সদর উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের জোছনা বেগম, তসলিমউদ্দিন, মমতাজ আলীসহ ১৮ জনের হাতে জমির কবুলিয়াত দলিল, নামজারি খতিয়ান, ডিসিআর এবং গৃহের চাবি হস্তান্তর করা হয়।

এছাড়াও বাকি উপকারভোগীদের বাড়িতে গৃহের চাবি পৌছে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়।

একইভাবে জেলার তেঁতুলিয়া, আটোয়ারি এবং বোদা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে জমির কবুলিয়াত দলিল, নামজারি খতিয়ান, ডিসিআর এবং গৃহের চাবি হস্তান্তর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

নাটোর

নাটোর জেলার ৫৫৮টি পরিবার দুই শতক জমিসহ একটি করে আধাপাকা বাড়ির মালিক হলেন শনিবার।

এদের মধ্যে ঝুরমান বেওয়া (৬৪) নামের এক গৃহহীন বিধবা আশ্রয়ণ প্রকল্পের জন্য জমি দান করে একটা বাড়ি পেয়েছেন।

বাগাতিপাড়া উপজেলায় নতুন বাড়ির পেয়ে ঝুরমান বেওয়া বলছেন, সরকার ২৯ বছর আগে আমাক ৯৭ শতক খাস জমি দিছিলো। টাকার অভাবে এতদিন বাড়ি করতে পারিনি। তাই ৮০ শতক জমি অন্যদের ঘর তোলার জন্য সরকারকে ফিরত দিছিনু। সরকার খুশি হয়ে আজ আমাক একটা নতুন বাড়ি উপহার দিছে। খুব ভালো লাগছে।

শনিবার নাটোর সদর উপজেলা মিলনায়তনসহ প্রতিটি উপজেলা মিলনায়তনে গৃহ প্রদানের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। 

সদর উপজেলা মিলনায়তনে সুবিধাভোগীদের হাতে চাবি ও দলির তুলে দিয়ে  ডিসি শাহরিয়াজ বলেন, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে ৩৯৪ বর্গফুট আয়তনের ৫৫৮টি নতুন আধাপাকা বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে।

৫৫৮টি বাড়ির মধ্যে সদরে ১৬২টি,সিংড়ায় ৬০টি, গুরুদাসপুরে ৫০টি,বড়াইগ্রামে ১৬০টি, লালপুরে ৪২টি,বাগাতিপাড়ায় ৪৪টি এবং নলডাঙ্গায় ৪০টি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

গাইবান্ধা

গাইবান্ধা জেলার সাতটি উপজেলায় প্রথম পর্যায়ে ৮৪৬টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার পেল সেমিপাকা বাড়ি।

শনিবার সাত উপজেলায় উপজেলা নির্বাহীরা সুবিধাভোগীদের হাতে এসব ঘরের চাবি ও দলিল তুলে দেন।

এরমধ্যে গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ১০৫টি, সুন্দরগঞ্জে ২৭২টি, গোবিন্দগঞ্জে ১২০টি, সাদুল্লাপুরে ১৭৯টি, ফুলছড়িতে ৭৫টি, সাঘাটায় ৩৫টি এবং পলাশবাড়ী উপজেলায় ৬০টি পরিবার এ বাড়ি পান বলে জানান ডিসি আব্দুল মতিন।

ঘরের চাবি ও দলিল হাতে পেয়ে সাদুল্লাপুর উপজেলার পুরাণ লক্ষ্মীপুর গ্রামের লতিফা বেগম বলেন, “কোনো দিন স্বপ্নেও ভাবি নাই, হামার একটা পাকা ঘর হবে।”

সাদুল্লাপুর খেয়াঘাট গ্রামের হায়দার আলী বলেন, “জমি আর পাঁকা ঘর একসাতে যার জন্যে (কারণে) পানু (পেলাম) আল্লা তাক জ্যান (যেন)  যুগ যুগ ধরি ভালো থোয় ( রাখে) ।”