ক্যাটাগরি

বাংলাদেশে ‘কোভ্যাক্সিনের’ ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আবেদন

ভারত সরকার এরইমধ্যে এ টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। তবে
ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বা মানুষের
ওপর তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ তথ্য না আসায় উদ্বেগ রয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মধ্যে।

সপ্তাহ দুয়েক আগে ভারত সরকার যে গণ টিকাদান শুরু করেছে, সেখানে সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিন অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা কোভিশিল্ডের
পাশাপাশি কোভ্যাক্সিনও দেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত শুধু অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। এরইমধ্যে সেরাম ইনস্টিটিউটের উৎপাদিত ওই টিকার ২০ লাখ ডোজ ভারত সরকারের উপহার হিসেবে ঢাকা পৌঁছেছে। 

দেশের নাগরিকদের
একটি বড় অংশের জন্য টিকার সংস্থানে বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টার মধ্যেই ভারত বায়োটেকের টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমোদন চাওয়ার খবর এল।

ট্রায়ালের নৈতিক অনুমোদনের জন্য এরইমধ্যে ভারতীয় ওই কোম্পানি বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল-বিএমআরসিতে আবেদন করেছে।  

বিএমআরসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী শুক্রবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রায় সপ্তাহ দুয়েক আগে ভারত বায়োটেকের টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের আবেদন জমা পড়েছে। আবেদনটি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য বিএমআরসির এথিক্যাল রিভিউ কমিটিতে পাঠানো হয়েছে।

“তারা তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের জন্য আমাদের কাছে আবেদন করেছে। এ বিষয়টি আমাদের বিবেচনাধীন আছে।”

আবেদনের সঙ্গে সব তথ্য না আসায় রিভিউ কমিটি এ সংক্রান্ত আরও কিছু তথ্য ভারত বায়োটেকের কাছে জানতে চেয়েছে বলে জানান তিনি।

“তারা এখনও নথিগুলো দেয়নি। সে কারণে আবেদনটা পূর্ণাঙ্গ হয়নি,” বলেন বিএমআরসির চেয়ারম্যান।

ভারত বায়োটেক ও ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক রিসার্চ মিলে কোভ্যাক্সিন তৈরি করেছে। এরইমধ্যে এই টিকার প্রথম দুই ধাপের ট্রায়াল শেষ হয়েছে। গত নভেম্বরে ভারতে তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শুরু হয়, এখনও তা চলছে।

তার মধ্যেই গত ৩ জানুয়ারি ভারত সরকার স্থানীয়ভাবে উদ্ভাবিত এই টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয়।

ভারতীয় এই টিকার পাশাপাশি চীনের আনহুই ঝিফেই লংকম বায়োফার্মাসিউটিক্যালসও বাংলাদেশে তাদের উৎপাদিত টিকার তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা করতে চাইছে।

চীনা দূতাবাসের মাধ্যমে গত ১০ ডিসেম্বর তারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য আবেদন করে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সেই আবেদন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠিয়েছে।

করোনাভাইরাসের টিকা পেতে সারা বিশ্বেই এখন জোর তৎপরতা চলছে। বাংলাদেশ সরকার এখন পর্যন্ত সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার তিন কোটি ডোজ পাওয়ার বন্দোবস্ত করেছে।

আগামী ২৫ জানুয়ারি প্রথম চালানে ৫০ লাখ ডোজ টিকা আসার কথা রয়েছে। ছয় মাসের মধ্যে বাকি টিকা আসবে।

এর বাইরে নিম্ন ও মধ্যম
আয়ের দেশগুলোকে টিকা সরবরাহে গঠিত আন্তর্জাতিক জোট কোভ্যাক্স থেকে ৬ কোটি ৮০ লাখ ডোজ টিকা পাওয়ার আশা করছে বাংলাদেশ। কোভ্যাক্স
থেকে ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা দেওয়র প্রস্তাবে বাংলাদেশ সম্মতিও দিয়েছে।

দেশের মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় টিকার সংস্থানে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি মডার্না, ফ্রান্সভিত্তিক সানোফির সঙ্গেও যোগাযোগ করছে সরকার। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হলে রাশিয়ার স্পুৎনিক টিকা আনার বিষয়টিও সরকারের বিবেচনায় রয়েছে স্বাস্থ্য
অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।