কেন্দ্র সরকারের সঙ্গে বারবার বৈঠকের পরও কোনও মীমাংসা না হওয়ায় কৃষকরা ট্রাক্টর মিছিলের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছন। প্রজাতন্ত্র দিবসকে সামনে রেখে তারা সোমবার সারি সারি ট্রাক্টর নিয়ে অবস্থান নিয়েছেন ভারতের দীর্ঘতম জাতীয় হাইওয়ে ৪৪ এ।
পাঞ্জাবের লুধিয়ানা থেকে ট্রাক্টর চালিয়ে আসা এক প্রতিবাদী কৃষক বলেন, “আমরা মোদীকে (প্রধানমন্ত্রী) একটি শিক্ষা দিতে চাই, যা তিনি কখনওই ভুলতে পারবেন না।”
ভারতের কৃষক আন্দোলন: অচলাবস্থা কাটেনি, বুধবার ফের বৈঠক
কৃষক আন্দোলন: মোদীর মায়ের কাছে পাঞ্জাবের কৃষকের খোলা চিঠি
প্রজাতন্ত্র দিবসে শান্তিপূর্ণ ট্রাক্টর মিছিল করার জন্য কৃষক সংগঠন দিল্লি পুলিশের সঙ্গে চুক্তিও করেছে। দিল্লির তিনটি সীমান্ত এলাকা সিংঘু, টিকরি ও গাজিপুর থেকে এই মিছিলের পরিকল্পনা রয়েছে কৃষকদের।
পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা, পাঞ্জাব, রাজস্থান এবং মধ্যপ্রদেশ থেকে শত শত কৃষক এই ট্রাক্টর প্যারেডের জন্য দিল্লি পৌঁছেছেন।
ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসে রাজধানীর রাজপথে আয়োজন করা হয় কুচকাওয়াজ, বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। মঙ্গলবার এই আয়োজনের বিপরীতে কৃষকরা ট্রাক্টর মিছিল বের করে তাদের শক্তি জানান দেবেন সরকারকে।
দিল্লিতে লাখ লাখ ট্রাক্টর প্রবেশ করবে বলে জানিয়েছে কৃষকরা। ট্রাক্টরগুলো শহরের একটি নির্দিষ্ট অংশ ঘুরে আবার বেরিয়ে যাবে। দিল্লি সীমান্ত ছাড়াও, গোটা ভারত জুড়ে কৃষকদের নিজ নিজ জেলাতেও ট্রাক্টর মিছিলের পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রত্যেক ট্রাক্টরে জাতীয় পতাকা থাকবে এবং মিছিলে দেশভক্তি ও আঞ্চলিক গান বাজানো হবে বলে জানিয়েছে ভারতীয় পত্রিকাগুলো। মিছিল শান্তিপূর্ণ রাখার জন্য কৃষক সংগঠন থেকে সদস্যদের নির্দেশনা দিয়ে বলা হয়েছে, “মনে রাখবেন আমাদের লক্ষ্য দিল্লি জয় করা নয়, দেশের মানুষের হৃদয় জয় করা।”
ভারতের নয়া কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে অনড় কৃষকরা
ভারতের দিল্লি-জয়পুর মহাসড়ক অবরোধ আন্দোলনকারী কৃষকদের
ভারতের ২ দশমিক ৯ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতির প্রায় ১৫ শতাংশই কৃষির উপর নির্ভরশীল; দেশটির ১৩০ কোটি জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি এ খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
কৃষকদের আশঙ্কা, সরকারের নতুন কৃষি সংস্কার আইনগুলো ভারতের নিয়ন্ত্রিত বাজারব্যবস্থাকে ভেঙে দেবে এবং সরকারও ধীরে ধীরে নির্ধারিত মূল্যে গম ও ধান কেনা বন্ধ করে দেবে; যার ফলশ্রুতিতে তাদেরকে ফসল বেচতে বেসরকারি ক্রেতাদের সঙ্গে দরকষাকষিতে নামতে হবে।
আইনগুলো এভাবে জীবন-জীবিকাকে অনিশ্চিত অবস্থার দিকে ঠেলে দেবে দাবি করে ভারতের কৃষকরা আইনগুলো বাতিল, ফসল কিনতে সরকারের বাধ্যবাধকতা বহালসহ আরও বেশ কিছু দাবি জানিয়েছেন।