প্রস্তাবিত
সেই আইনে বয়লারের গা থেকে নিবন্ধন নম্বর অপসারণ, পরিবর্তন, বিকৃত বা অদৃশ্য করে অন্য
বয়লার ব্যবহার করলে জেল-জরিমানার বিধান রাখা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার জাতীয় সংসদে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘বয়লার আইন, ২০২০’ এর
খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।
সভা শেষে
মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ১৯২৩ সালের
আইন দিয়ে বয়লার চালানো হচ্ছে এতদিন। অনেক কিছু পরিবর্তন হয়েছে বলে নতুন আইন করা হচ্ছে।
“শিল্প
কারখানার বয়লার দুর্ঘটনার ঝুঁকি হ্রাস, বয়লার ব্যবহারে সচেতনতা বৃদ্ধি; মানসম্মত বয়লার
তৈরি, আমদানি, ব্যবহার ও পরিচালনা এবং শিল্প কারখানার নিরাপদ কর্মপরিবেশ সৃষ্টির জন্য
নতুন আইন করা হচ্ছে।”
খসড়ায়
বলা হয়েছে, এ আইনের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য প্রধান বয়লার পরিদর্শক এবং বয়লার পরিদর্শক
থাকবেন। বয়লার বোর্ড থাকবে, সেখানে একজন চেয়ারম্যান এবং দুইজন সদস্য থাকবেন।
প্রধান
পরিদর্শক শুনানির সুযোগ দিয়ে এক লাখ টাকা এবং দ্বিতীয়বার এই অপরাধ করার জন্য দ্বিগুণ
জরিমানা করতে পারবেন বলে জানান আনোয়ারুল।
তিনি
বলেন, কোনো মালিক বা ব্যক্তি বয়লারের গায়ে স্থায়ীভাবে চিহ্নিত বা সংযোজিত নিবন্ধন
নম্বর অপসারণ, পরিবর্তন, বিকৃত ও অদৃশ্য করে অন্য কোনো বয়লার ব্যবহার করলে দুই বছরের
কারাদণ্ড, দুই লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে মোবাইল কোর্ট আইনও
প্রযোজ্য হবে।
আনোয়ারুল
জানান, বয়লার বোর্ডের চেয়ারম্যান থাকবেন শিল্প সচিব। প্রধান পরিদর্শক নিবন্ধন রেজিস্ট্রেশন
দেবেন।
সচিব
বোর্ডের প্রধান হলে বোর্ড প্রধান হিসেবে তার জবাবদিহিতা কীভাবে নিশ্চিত হবে, সেই প্রশ্নে
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “কেবল তো এটার নীতিগত অনুমোদন হল, এ বিষয়টি আইন মন্ত্রণালয়কে
লিখব।”
করপোরেশনগুলোকে কর্তৃপক্ষের অধীনে আনার প্রয়োজনীয়তা
যাচাইয়ে কমিটি
সব করপোরেশনগুলোকে
একটি কর্তৃপক্ষের অধীনে আনার প্রয়োজনীয়তা আছে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে আগের
একটি কমিটি পুনর্বিন্যাস করে দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সরকারি
করপোরেশন (ব্যবস্থাপনা সমন্বয়) আইন প্রণয়নের আবশ্যকতা নিরূপণের বিষয়ে ২০১৫ সালের ৯
ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিসভা থেকে গঠিত কমিটি পুনর্গঠনের প্রস্তাব সোমবারের মন্ত্রিসভা বৈঠকে
অনুমোদন দেওয়া হয়।
অর্থমন্ত্রীকে
সভাপতি করে আগের কমিটিতে বাণিজ্য, শিল্প, বস্ত্র ও পাট, পরিকল্পনা এবং জ্বালানি ও বিদ্যুৎমন্ত্রীকে
সদস্য করা হয়েছিল।
ওই কমিটির
দায়িত্ব ছিল, সরকারের করপোরেশনগুলোর ব্যবস্থাপনায় একটি কর্তৃপক্ষের অধীনে আনা যায় কি
না এবং এক্ষেত্রে শিল্প মন্ত্রণালয়কে ‘লিড মন্ত্রণালয়’ করা যায় কি না, সে বিষয়ে মতামত
দেওয়া।
আনোয়ারুল
বলেন, “এ বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো অগ্রগতি হয়নি। ২০১৯ সালে অর্থমন্ত্রীর কাছে যখন এটা উপস্থাপন
করা হয়, উনি একটা পর্যবেক্ষণ দেন যে এটা যেহেতু আগের সংসদের ছিল, এখন নতুন সংসদ ও মন্ত্রিসভা
এসেছে, তাই এটাকে আবার মন্ত্রিসভায় পাঠানো হোক।
“১৯টি
মন্ত্রণালয়ের ৫০টি করপোরেশন আছে, সব করপোরেশনই আইন দিয়ে গঠিত হয়েছে, কিন্তু জেনারেল
একটা স্ট্রাকচার, ব্যবস্থাপনা, দায়িত্ব-কর্তব্য এগুলোর যেন একটা মিল থাকে। সেজন্য এই
কমিটি পুনর্বিন্যাস করে সেখানে কৃষিমন্ত্রীকে যুক্ত করা হয়েছে।”
মন্ত্রিপরিষদ
সচিব জানান, আগের মতই অর্থমন্ত্রীকে ওই কমিটির সভাপতি করা হয়েছে। এখন কমিটি সভা করে
দেখবে এ বিষয়টির আদৌ প্রয়োজন আছে কি না।