ক্যাটাগরি

সনজীদা খাতুন ও সাজ্জাদ আলী জহির পাচ্ছেন ভারতের ‘পদ্মশ্রী’

প্রজাতন্ত্র
দিবস উপলক্ষে ভারত সরকার সোমবার চলতি বছরের পদ্ম বিভূষণ, পদ্ম ভূষণ ও পদ্মশ্রী খেতাবের
জন্য মনোনীতদের নাম ঘোষণা করে।

জাপানের
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবেসহ মোট সাতজনকে এবার পদ্ম বিভূষণ খেতাব দিচ্ছে ভারত। পদ্ম ভূষণ পাচ্ছেন দশজন। আর সনজীদা খাতুন
ও সাজ্জাদ আলী জহিরসহ মোট ১০২ জন পাচ্ছেন ‘পদ্মশ্রী’।

শিল্পকলা,
শিক্ষা, বাণিজ্য, সাহিত্য, বিজ্ঞান, খেলাধুলা, সমাজসেবা ও সরকারি ক্ষেত্রে
বিশেষ অবদানের জন্য ভারত সরকার এই সম্মাননা দেয়।

রবীন্দ্রসংগীত
শিল্পী, লেখক, গবেষক, সংগঠক ও শিক্ষক সনজীদা
খাতুন এ সম্মাননা পাচ্ছেন
শিল্পকলায়। আর সেক্টর কমান্ডার্স
ফোরামের সাবেক উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাজ্জাদ আলী জহির এ পদক পাচ্ছেন
‘পাবলিক অ্যাফেয়ার্স’ শাখায়।

৮৮
বছর বয়সি সনজীদা খাতুন ছায়ানটের পাশাপাশি জাতীয় রবীন্দ্র সংগীত সম্মিলন পরিষদেরও প্রতিষ্ঠাতা
সদস্য। প্রচলিত ধারার বাইরে ভিন্নধর্মী একটি শিশুশিক্ষা প্রতিষ্ঠান নালন্দার সভাপতির
দায়িত্বও পালন করছেন তিনি।

ড.
কাজী মোতাহের হোসেনের মেয়ে সনজীদার জন্ম ১৯৩৩ সালের ৪ এপ্রিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক ও রবীন্দ্র ভারতী থেকে স্নাতকোত্তর করে ১৯৭৮ সালে সেখান
থেকেই তিনি পিএইচডি করেন।

দীর্ঘদিন
অধ্যাপনার পর সনজীদা খাতুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ থেকে অবসর
নেন।

একুশে
পদক, বাংলা একাডেমী সাহিত্য পুরস্কার, রবীন্দ্র স্মৃতি পুরস্কারে (পশ্চিমবঙ্গ,
ভারত) ভূষিত সনজীদা ১৬টি বইও লিখেছেন।

তার
পদ্মশ্রী পদক প্রাপ্তির খবরে এক বিবৃতিতে ছায়ানট বলেছে, “তার এই অর্জনে ছায়ানট
গৌরব বোধ করছে। এই অর্জন তার আজীবন শুদ্ধ সংস্কৃতি-সাধনার স্বীকৃতি।”

ছায়ানটকে
এগিয়ে নিতে তার অবদানকে স্মরণ করে বিবৃতিতে বলা হয়, “ছায়ানটের প্রতিষ্ঠাকাল থেকে এই
সংগঠনের মাধ্যমে বাঙালির স্বাধিকার অর্জন ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সাংস্কৃতিক
ভিত তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। এখন পর্যন্ত তার প্রজ্ঞা আমাদের পথনির্দেশনা দিয়ে
যাচ্ছে। আমরা মনে করি, এই অর্জন সমগ্র বাঙালির এবং বাংলাদেশের মানুষের।”

মুক্তিযুদ্ধ
গবেষক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী সাজ্জাদ আলী জহিরের জন্ম ১৯৫১ সালের ১১
এপ্রিল। ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করে ১৯৬৯ সালে তিনি পাকিস্তান
সেনাবাহিনীতে যোগ দেন।

১৯৭১
সালে ৭৮ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারিতে কমিশন পাওয়া সাজ্জাদ জহির একাত্তরে বাঙালির মুক্তিসংগ্রাম
চলাকালে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ত্যাগ করে জুম্মু-কাশ্মীর সীমান্ত পেরিয়ে দেশে আসেন
এবং জেড ফোর্সের অধীনে দ্বিতীয় গোলন্দাজ বাহিনীর উপ-অধিনায়ক হিসেবে বৃহত্তর সিলেট
অঞ্চলে যুদ্ধে যোগ দেন।

বড়লেখা
ও শমসেরনগর যুদ্ধে অসীম সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার সাজ্জাদ জহিরকে বীর প্রতীক খেতাবে
ভূষিত করে।

১৯৮২
সালে সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যাওয়া সাজ্জাদ আলী জহির ২০১৩ সালে স্বাধীনতা পদক পান।
তিনি একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় কমিটির একজন সদস্য।