মঙ্গলবার
অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) বিষয়ক ওয়ান হেলথ গ্লোবাল লিডার্স গ্রুপের উদ্বোধনী সভায় দেওয়া রেকর্ড করা বক্তব্যে তিনি ছয়টি প্রস্তাব তুলে ধরেন।
আইনের
কঠোর বাস্তবায়ন, প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ওষুধ বিক্রি বন্ধ করা এবং এএমআর সংক্রান্ত গবেষণা জোরদার করার কথা রয়েছে এসব প্রস্তাবের মধ্যে।
শেখ
হাসিনা বলেন, “এক বছরের বেশি
সময় ধরে মানবজাতি কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে
এক মহাসঙ্কট মোকাবেলা করছে। নীরবে বেড়ে ওঠে যে জীবাণু, তা
প্রতিরোধের ওষুধ অকার্যকর হলে আধুনিক ওষুধের যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি
এ পর্যন্ত হয়েছে, তা বিপন্ন হতে
পারে।”
প্রধানমন্ত্রী
বলেন, “এই মুহূর্তে আমরা
যদি অ্যান্টিবায়োটিকের বেপরোয়া ও নির্বিচার ব্যবহার
নিয়ন্ত্রণ করতে না পারি, তবে
আমরা ভবিষ্যতে আরও ঘন ঘন এবং
আরও মারাত্মক মহামারী দেখতে পাব। বিশ্ব সম্প্রদায় অবিলম্বে পদক্ষেপ না নিলে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল
রেজিস্ট্যান্স মানবজাতির অস্তিত্বের জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে
দাঁড়াবে।”
বিশ্ব
স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও), খাদ্য ও কৃষি সংস্থা
(এফএও) এবং বিশ্ব প্রাণী স্বাস্থ্য সংস্থা (ওআইই) সুইজারল্যান্ডের জেনিভায় এ সভার আয়োজন
করে।
বারবাডোসের
প্রধানমন্ত্রী মিয়া আমোর মোটলি এবং ডাব্লিউএইচও, এফএও এবং ওআইইর মহাপরিচালকরা অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
শেখ
হাসিনা বলেন, ১৯৯৮ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য পরিষদে জীবাণুর ওষুধ প্রতিরোধী হয়ে ওঠার বিরুদ্ধে লড়াই করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু সেই লক্ষ্যে পৌঁছানোর পথে এখনও অনেক দূরে রয়েছে বিশ্ব। তাই জনস্বাস্থ্য, প্রাণিসম্পদ, মৎস্য ও কৃষি খাতে
অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল
এজেন্টের যৌক্তিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
“সম্ভাব্য
বিপর্যয় রোধ করতে আমি অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এজেন্ট উৎপাদন, মান নিয়ন্ত্রণ এবং বিপণন নিয়ন্ত্রণের জন্য কঠোরভাবে আইন ও বিধি প্রয়োগের
পরামর্শ দিতে চাই।”
দ্বিতীয়
প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানব, মৎস্য ও প্রাণীর জন্য
ব্যাপকভাবে পরীক্ষাগার ভিত্তিক নজরদারি ব্যবস্থা স্থাপন করা দরকার।
তৃতীয়ত,
অনুমোদিত ব্যক্তির প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল পণ্য বিক্রি কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব করেন প্রধানমন্ত্রী।
চতুর্থ
প্রস্তাবে তিনি বলেন, এএমআর সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দসহ মৌলিক, পরীক্ষামূলক এবং পরিচালনামূলক গবেষণা জোরদার করতে হবে।
পঞ্চম
প্রস্তাবে অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল পণ্যের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের জন্য উচ্চ পর্যায়ের অ্যাডভোকেসি, যোগাযোগ এবং সামাজিক উদ্বুদ্ধকরণ ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং ষষ্ঠ প্রস্তাবে এ সংক্রান্ত নীতির
কঠোর বাস্তবায়নের জন্য বিশ্ব নেতাদের রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং এফএও, ওআইই, ডাব্লিউএইচও, জাতিসংঘ পরিবেশ সংস্থা এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থাগুলোকে
সম্পৃক্ত করার কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী
আশা প্রকাশ করেন, দুই দিনব্যাপী এই আলোচনা তাৎক্ষণিক
ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে কর্মপরিকল্পনা স্থির করতে বিশ্ব নেতাদের জন্য সহায়ক হবে।
তিনি
বলেন, “আমাদের সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই গ্রুপ বিষয়টিকে
একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট উদ্বেগ হিসাবে বিবেচনা করবে এবং এই মারাত্মক সঙ্কট
কাটিয়ে উঠতে সুস্পষ্ট সুপারিশ উপস্থাপন করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”