ক্যাটাগরি

প্রস্তুতি শেষ, চট্টগ্রামে ‘ভালো’ ভোটের আশায় ইসি

ভোটের আগের মঙ্গলবার কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে সব শেষ বক্তব্য সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন।

এই নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিতের পাশাপাশি সুষ্ঠু ভোট আয়োজনে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

“কমিশন থেকে প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। বিশেষ করে যেহেতু রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে সমস্ত দায়িত্ব ন্যাস্ত করা আছে, সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোক, রিটার্নিং অফিসার, পোলিং অফিসার এবং যেহেতু ইভিএমে ভোট হচ্ছে, তাই ইভিএমের কারিগরি সহায়তা দেওয়ার জন্য সবাই এখন চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন।

“পূর্ণ প্রস্তুতি শেষ। আমরা আশা করি, একটা সুষ্ঠু এবং প্রতিযোগিতামূলক শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ জন্য যা যা উদ্যোগ নেওয়া দরকার তা নেওয়া হয়েছে। আশা করি কালকে একটা ভালো নির্বাচন দেখবেন।”

সচিব জানান, রিটার্নিং অফিসার এবং পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চাহিদা দিয়েছে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সে পরিমাণ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে এবং তাদের কাছে বাজেটও দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রতি ওয়ার্ডে একজন করে নির্বাহী হাকিম থাকবেন। কেউ শাস্তিযোগ্য অপরাধ করলে তাকে শাস্তি দিতে প্রতি দুইটি ওয়ার্ডের জন্য একজন করে বিচারিক হাকিম থাকবেন।

তিনি বলেন, “শহরে প্রবেশের রাস্তাগুলোতে পুলিশি পাহারা থাকবে, যাতে ভোটার ছাড়া অন্য কোনো লোকজন ভোটকেন্দ্রে এসে গণ্ডগোল করতে না পারে বা ভোটকেন্দ্রের বাইরেও যাতে আইনশৃঙ্খলায় কোনো রকম বাধার সৃষ্টি করতে না পারে।”

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

সতর্ক ইসি, শঙ্কা নেই

নির্বাচনী প্রচারণায় বেশ কয়েকবার সংঘতের প্রেক্ষাপটে সহিংসতা নিয়ে শঙ্কা থাকিলেও এখন তা নেই বলে চজানান সচিব।

“এটা প্রথম দিকে হয়েছিল। তারপর সেখানে সবাই খুব সতর্ক হয়ে গেছেন। এরপর আল্লাহর রহমতে আর কোনো ঘটনা ঘটেনি। আমরা আশা করি ওই ধরনের কোনো ঘটনা আর ঘটবে না। যাতে না ঘটে তার জন্য ওই প্রস্তুতি। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ হাজারের উপরে সেখানে নিয়োজিত আছে। ওই ধরনের আর কোনো ঘটনা ঘটবে না বলেই আমরা মনে করি।”

সচিব জানান, সাধারণ ভোটকেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৬ জন করে এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮ জন করে মোতায়েন থাকবে। টহল ছাড়াও কিছু কিছু এলাকা নিয়ে জোনের মতও থাকবে। পাঁচ বা দশ কেন্দ্র নিয়ে একটি জোন থাকবে, সেখান থেকে প্রয়োজনে যেন সহযোগিতা করতে পারেন।

এই নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ২০ জন বিচারিক হাকিম এবং ৪০ জন নির্বাহী হাকিম নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

সমান সুযোগ ও স্বাস্থ্যবিধি

এক প্রশ্নে সচিব মো. আলমগীর বলেন, “এ নির্বাচনে অনেকগুলো দল অংশগ্রহণ করেছে। … নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হল লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে দেওয়া অর্থাৎ সবার জন্য সমান সুযোগ করে দেওয়া, যাতে ভোটাররা ভোট দিতে আসতে পারে, ভোট দিতে পারে, কেউ যাতে বাধা না দেয়। সে জন্যই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাখা হয়েছে। এটাই সবার জন্য সমান সুযোগ।”

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ভোটে নির্দেশনা তুলে ধরে তিনি বলেন, “স্বাস্থ্যবিধি যা মেনে চলা দরকার সব মেনে চলার নির্দেশনা দেওয়া আছে। ভোটার যখন লাইনে দাঁড়াবেন তখন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দাঁড়াবেন। ইভিএমে ভোট দেওয়া হবে, তাই ভোট দেওয়ার আগে এবং পরে হাত হ্যান্ডওয়াম করে নেবেন। আর সবাইকে মাস্ক পড়ে যেতে হবে। মাস্ক ছাড়া কেউ গেলে তাকে ভোট দিতে দেওয়া হবে না বা দায়িত্বপালন করতে দেওয়া হবে না।”

গত বছর মার্চে করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে ২৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটিতে ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মহামারীর কারণে এর এক সপ্তাহ আগে স্থগিত করা হয় চট্টগ্রাম সিটি ভোট।

নির্ধারিত মেয়াদের মধ্যে ভোট করতে না পারায় প্রশাসক নিয়োগ করা হয় এ সিটিতে। ছয় মাসের জন্য প্রশাসকের মেয়াদ শেষ হবে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে।

এর আগেই ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ভোট হচ্ছে।