আবু ধাবির শেখ জায়েদ
স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার সিরিজের তৃতীয়
ও শেষ ম্যাচে ৩৬ রানে জিতেছে আফগানরা। রশিদের স্পিনে ২৬৭ রানের লক্ষ্য তাড়ায় অ্যান্ডি বালবার্নির দল গুটিয়ে গেছে ২৩০ রানে।
ব্যাট হাতে আফগানিস্তান ইনিংসের সর্বোচ্চ ৪৮ রান করা রশিদ পরে বল হাতেও ছিলেন দুর্দান্ত। এই লেগ স্পিনার ২৯ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। ব্যাটে-বলে নিজেকে মেলে ধরে হয়েছেন ম্যাচ সেরা।
রান তাড়ায় আয়ারল্যান্ডকে প্রায় একাই
টেনেছেন স্টার্লিং। ৯ চার ও ৬ ছক্কায় খেলেছেন ১১৯ বলে ১১৮ রানের ইনিংস। টানা
দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করেও দলকে জেতাতে না পারার হতাশা
সঙ্গী হলো তার। দলের
আর কেউ পারেননি ৩০ রানও পার করতে।
স্টার্লিংয়ের এটি ১২তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। আয়ারল্যান্ডের হয়ে যা সর্বোচ্চ। আগের ম্যাচে ১২৮ রানের ইনিংস
খেলে তিনি বসেছিলেন দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি করা উইলিয়াম পোর্টারফিল্ডের পাশে। এবার তাকে
ছাড়িয়ে শীর্ষে এই ওপেনার।
আফগান স্পিনারদের বিপক্ষে আয়ারল্যান্ড উইকেট হারিয়েছে নিয়মিত বিরতিতে। সেখানে দুর্দান্ত ব্যাটিং ঝলক দেখান
স্টার্লিং। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ৩৮ বলে তুলে
নেন ফিফটি। পরে কিছুটা মন্থর হয়ে পড়লেও
সেঞ্চুরি আসে ১০১ বলে।
ওপেনার জেমস ম্যাককলাম ও তিনে নামা আইরিশ
অধিনায়ক বালবার্নি যেতে পারেননি দুই অঙ্কের ঘরে। এরপর হ্যারি টেক্টরকে নিয়ে এগোতে
থাকেন স্টার্লিং।
২৪ রান করা টেক্টরকে বোল্ড করে ৬১ রানের জুটি ভাঙেন
রশিদ। এরপর কার্টিস ক্যাম্পারকে দ্রুত ফিরিয়ে দেন তিনি।
স্টার্লিং রানের চাকা সচল রাখেন। লর্কান টাকারকে নিয়ে এগোতে থাকেন
লক্ষ্যের দিকে। কিন্তু তাকে
বোল্ড করে থামান
মুজিব-উর-রহমান। প্রায়
শেষ হয়ে যায় আইরিশদের জয়ের আশাও।
টাকার, সিমি সিংরা চেষ্টা চালালেও শেষ পর্যন্ত হোয়াইটওয়াশ এড়াতে পারেনি আয়ারল্যান্ড।
এর আগে টস হেরে
ব্যাটিংয়ে নেমে আফগান
দুই ওপেনার শুরু
থেকেই প্রতিপক্ষের বোলারদের ওপর চড়াও হন। কিন্তু ঝড়ের
আভাস দেওয়া রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও জাভেদ
আহমাদির ইনিংস অল্পতেই থেমে যায়।
৪ চার ও এক ছক্কায় ১০ বলে ২২ রান করে গুরবাজ ফেরেন ক্রেইগ ইয়াংয়ের বলে বোল্ড
হয়ে। পরের ওভারে
আহমাদি ও আগের
ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান রহমত শাহকে বিদায় করেন
এই পেসার।
ইনিংসের পঞ্চম ওভারেই ৪৪ রানে ৩ উইকেট
নেই আফগানদের। এই বিপর্যয়ে দলের হাল ধরেন
আসগর আফগান। কিন্তু তাকে
সঙ্গ দিতে পারেননি হাশমতউল্লাহ শাহিদি।
পঞ্চম উইকেট জুটিতে মোহাম্মদ নবিকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়েন আফগানিস্তান অধিনায়ক। দলের একমাত্র অর্ধশত রানের জুটি
তাদের।
নবিকে এলবিডাব্লিউ করে ৫১ রানের জুটি ভাঙেন
সিমি সিং। এই অফ স্পিনার পরে থামান
আসগরকেও। ১৬৩ রানে
৭ উইকেট হারানো আফগানদের তখন দুইশ
রান নিয়েই শঙ্কা। গুলবাদিন নাইব ও মুজিবের সঙ্গে
দুটি ভালো জুটিতে দলকে আড়াইশ রানে
নিয়ে যান রশিদ। ৪০ বলে খেলা তার ৪৮ রানের ইনিংসে তিনটি করে চার ও ছক্কা।
সিরিজ জুড়েই দারুণ ধারাবাহিক ছিলেন স্টার্লিং। দুই সেঞ্চুরিতে করেছেন সিরিজের সর্বোচ্চ ২৮৫ রান। হয়েছেন সিরিজ
সেরা ক্রিকেটার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান: ৫০ ওভারে ২৬৬/৯ (গুরবাজ ২২, আহমাদাই ১৯, রহমত
১০, আসগর ৪১, নবি ৩২, নাইব
৩৬, নাজিবউল্লাহ ০, রশিদ ৪৮, মুজিব
১৮*, নাভিন ১০*; ইয়াং ৮-০-৬১-৩, অ্যাডায়ার ৭-০-৫২-০, ম্যাকব্রাইন ১০-২-২২-১, লিটল
৭-১-২৭-১, সিমি ১০-১-৩৭-৩, টেক্টর ৮-০-৫২-১)।
আয়ারল্যান্ড: ৪৭.১ ওভারে
২৩০ (স্টার্লিং ১১৮, ম্যাককলাম ৩, বালবির্নি ৫, টেক্টর ২৪, ক্যাম্পার ১২, টাকার
২২, সিমি ২০, অ্যাডায়ার ২, ম্যাকব্রাইন ১৬, ইয়াং ০, লিটল ০*; নাভিন
৭.১-০-৪৫-১, মুজিব
১০-০-৪৩-২, নবি ১০-০-৫৩-১, নাইব ৩-০-২৩-০, রশিদ
৯-০-২৯-৪, আহমাদাই ৮-০-৩৫-০)।
ফল: আফগানিস্তান ৩৬ রানের
জয়ী
সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজ
৩-০ তে জয়ী আফগানিস্তান
ম্যান অব দা ম্যাচ: রশিদ খান
ম্যান অব দা সিরিজ: পল স্টার্লিং