বুধবার বিকালে গণভবন
থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে করোনাভাইরাস টিকাদান
কর্মসূচির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
ওই অনুষ্ঠানে করোনাভাইরাস
মোকাবেলায় পাঁচজন সম্মুখযোদ্ধাকে টিকা দেওয়া হয়।
এই টিকার মাধ্যমে দেশের মানুষ করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
এদের মধ্যে সর্বশেষ
টিকা গ্রহণকারী হিসেবে সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরান হামিদ অন্য চারজনের মতোই
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করে টিকা নিতে যান।
টিকা নিতে তিনি ভয়
পাচ্ছেন কি না, জানতে চান শেখ হাসিনা।
তার টিকা নেওয়া শেষে
প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, “হয়ে গেল? ঠিক আছে?”
এরপর কয়েক মুহূর্ত
নীরব থেকে তিনি বলেন, “ইচ্ছে হচ্ছে আমরাও গিয়ে নিয়ে আসি। শেষে আগে আগে নিলে বলবে, আগে
নিজেই নিল, কাউকে দিল না। সবাইকে দিয়ে নেই। তারপরে…।”
অনুষ্ঠান চলাকালে টিকা
নেওয়া পাঁচজনের সঙ্গেই কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
কুর্মিটোলা হাসপাতালের
সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু ভেরোনিকা কস্তা টিকা নিতে যাওয়ার সময় তাকে প্রশ্ন করেন,
“তোমার ভয় লাগছে না তো? ভয় পাচ্ছ না তো?”
জবাবে রুনু বলেন, “না,
ম্যাডাম।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার বিকালে করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি টিকা নিয়ে সংশয় প্রকাশকারীদের কঠোর সমালোচনা করেন।
কিছুক্ষণ টিকা দেওয়া
প্রত্যক্ষ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “হয়ে গেল? রুনু, তোমাকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। তুমি
সুস্থ থাক, ভালো থাক। আরও অনেক রোগীর সেবা কর। সেই দোয়া করি।”
এরপর রুনু ‘জয় বাংলা’
স্লোগান দিলে প্রধানমন্ত্রীও তার সঙ্গে হাত তুলে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন।
তারপর কুর্মিটোলা হাসপাতালের
চিকিৎসক ডা. আহমেদ লুৎফুল মোবেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সালাম বিনিময় করে টিকা নিতে যান।
টিকা নেওয়ার পর চিকিৎসক
মোবেনও ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিলে প্রধানমন্ত্রীও তার সঙ্গে তাল মেলান।
তারপর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের
অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা টিকা নিতে গেলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “নার্ভাস
লাগছে না তো নাসিমা?”
জবাবে নাসিমা সুলতানা
বলেন, “না, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঠিক আছে।”
ট্রাফিক পুলিশ সদস্য
দিদারুল ইসলাম টিকা নিতে গেলে প্রধানমন্ত্রী মহামারীর মধ্যে পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা
করে বলেন, “তোমরা অনেক কাজ করেছ। পুলিশ এত সার্ভিস দিয়েছে যে তা বলার মতো না। অনেক
সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে।”
দিদারুল টিকা নিতে
ভয় পাচ্ছেন কি না, তাও জানতে চান প্রধানমন্ত্রী।
প্রথম যে পাঁচজন টিকা নিয়েছেন তাদের সঙ্গে কথা বলে সাহস যুগিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
টিকা নেওয়া শেষে দিদারুল
বলেন, “ধন্যবাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এইটুকু সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। দেশ ও জনগণের সেবক
হিসেবে নিজে করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে চাই। ‘জয় বাংলা’, ‘জয় বঙ্গবন্ধু’।”
এই সময় কুর্মিটোলা
জেনারেল হাসপাতাল প্রান্তে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেকসহ ঊর্ধ্বতন
কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিন হাসপাতালে ওই
পাঁচজনসহ মোট ২৬ জনকে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া হয়েছে। এরপর বৃহস্পতিবার ঢাকার পাঁচটি
হাসপাতালের ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে টিকা দেওয়া হবে।
টিকা দেওয়ার পর সপ্তাহখানেক
তাদের পর্যবেক্ষণ করা হবে। সব ঠিক থাকলে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে টিকাদান কার্যক্রম
শুরু হবে।