ক্যাটাগরি

পান্তের পথে হেঁটে বাংলাদেশে সাফল্যের খোঁজে ব্ল্যাকউড

বাংলাদেশ সফরে খর্বশক্তির এই ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের মিডল অর্ডারের সবচেয়ে বড় ভরসা ব্ল্যাকউড। দারুণ ফর্মেও আছেন ২৯ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। সম্প্রতি নিউ জিল্যান্ড সফরে দল বিধ্বস্ত হলেও প্রথম টেস্টে
তিনি উপহার দেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। পরের টেস্টে করেন ফিফটি। এর আগে জুলাইয়ে ইংল্যান্ড সফরে ফিফটি করেছিলেন ওল্ড ট্র্যাফোর্ড টেস্টে। সাউথ্যাম্পটন টেস্টে চতুর্থ ইনিংসে তার ৯৫ রানের অসাধারণ ইনিংসে দল পায় দুর্দান্ত জয়।

চতুর্থ ইনিংসে ওই সাফল্যের সূত্রেই এলো সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া সফরে পান্তের বিরোচিত ব্যাটিংয়ের প্রসঙ্গ। ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে পান্তের পাশাপাশি ব্ল্যাকউড বললেন ভারতের আরেক তরুণ ব্যাটসম্যান শুবমান গিলের কথাও।

“রিশাভ পান্ত ও শুবমান গিলের সঙ্গে পরিচয় আছে আমার। গিলের সঙ্গে কখনও কখনও ইনস্টাগ্রামে কথা হয় আমার। ব্যক্তিগতভাবে ওদেরকে চিনি। ক্যারিবিয়ানে ‘এ’ দলের সিরিজের সময় গিলের বিপক্ষে খেলেছি। ওর সঙ্গে কথা হয়, দারুণ ছেলে বলেই মনে হয়। নিশ্চিতভাবেই সে ভারতের ভবিষ্যতের একজন।”

“ভারত-অস্ট্রেলিয়ার সিরিজ আমি দেখেছি। চতুর্থ ইনিংসে (শেষ টেস্টে) যখন এক ঘণ্টা বাকি আছে, আমি নিজেকেই বলছিলাম, পান্ত টিকে থাকলে ভারত জিতে যাবে। আমার মনে হয়, আমাদের দুজনের ব্যাটিংয়ের ধরন একই। সে রানের পেছনে ছোটে এবং বোলারদের চাপে রাখে। আমি একইভাবে ব্যাট করি।”

শুধু তরুণরাই নয়, ভারতের সবচেয়ে বড় তারকার কাছ থেকে পরামর্শ পাওয়ার গল্পও শোনালেন ব্ল্যাকউড।

“বিরাট কোহলির সঙ্গেও কয়েকবার কথা হয়েছে আমার, সামাজিক যোগাযোগ
মাধ্যমে। সবশেষবার যখন ক্যারিবিয়ানে সফরে গেল ভারত, জ্যামাইকায় অতিরিক্ত ফিল্ডারের দায়িত্ব পালন করেছিলাম, ম্যাচ শেষে অল্প একটু আলাপ হয়েছিল তার সঙ্গে।”

“তাকে বলেছিলাম, ‘আমার অনেক ফিফটি, কিন্তু সেঞ্চুরি ১টি।’ সে বলল, ‘ওই সেঞ্চুরিতে কতগুলো বল খেলেছিলে?’ বললাম, ‘২১২টির মতো।’ সে বলল, ‘এই তো। কিছু সময় উইকেটে কাটালেই রান করতে পারবে।’ ওই আলোচনার পর আমি নিজেকে বলেছি, যদি ২০০-৩০০ বল খেলতে পারি, আমার যে খেলার ধরণ, তাতে যে কোনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষ ও যে কোনো জায়গায় রান করতে পারি।”

নিজের মতো খেলেই বাংলাদেশের স্পিন চ্যালেঞ্জে জিততে চান তিনি। টেস্ট সিরিজের আগে মানসিক প্রস্তুতিই তার মতে বেশি জরুরি।

“এই ধরনের উইকেট খুব ধীরগতির। মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে আমাকে, কারণ টেকনিক্যালি খুব বেশি কিছু করার সুযোগ এখন নেই। মানসিকভাবে আমি জানি, উইকেট খুবই মন্থর হবে এবং স্পিন করবে। মানসিকভাবে যখন আমি প্রস্তুত, তখন আমার সব ভালো। সবকিছু তখন আপনাআপনি ঠিক হয়।”

“নেটে ভালো ব্যাটিং করছি। এখন মাঠেও সেটি বয়ে নিতে চাই। মাঠে নেমে খেলতে তর সইছে না আমার। বেশ অনেকদিন হয়ে গেল বাংলাদেশে আছি, তাই খেলতে মুখিয়ে আছি।”

গত ইংল্যান্ড সফরে সাফল্য পাওয়ার আগে বাজে ফর্মের কারণে বেশ কিছুদিন দলের বাইরে থাকতে হয়েছিল তাকে। তখন আন্দ্রে রাসেলের সঙ্গে কথা বলে নিজের দর্শন ও ভাবনায় বড় পরিবর্তন এসেছে বলে জানালেন ব্ল্যাকউড।

“রাসেলের সঙ্গে অনেক কথা হয়েছিল আমার। আমরা বেশ ঘনিষ্ঠ। ইনিংস চালিয়ে যাওয়া ও আরও শতরান করার পথ খুঁজছিলাম আমি। মূলত শট নির্বাচন নিয়েই কথা বলেছিলাম আমরা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে যখন খেলতে শুরু করেছিলাম, আমি ছিলাম তরুণ ও রোমাঞ্চিত। আমার ধরণ ছিল প্রচুর শট খেলে বোলারদের চাপে ফেলা।”

“আস্তে আস্তে শিখলাম, এক-দুই ওভারেই সেঞ্চুরি হয়ে যাবে না। আমাকে উইকেটে সময় কাটাতে হবে। রাসেলের সঙ্গে অনেক কথা বলেছি। সে আমাকে বেশ কিছু দিক দেখিয়েছে, যা করা উচিত। শুধু টি-টোয়েন্টি নিয়েই নয়। সে কেবল একটিই টেস্ট খেলেছে, কিন্তু ক্রিকেট নিয়ে সে জানে অনেক।”