সিটি
করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা পর বুধবার সন্ধ্যায় মহানগর
বিএনপির কার্যালয়ের সামনের মাঠে দলীয় মেয়রপ্রার্থী শাহাদাত হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে সংবাদ
সম্মেলনে এসে একথা বলেন তিনি।
বিএনপি
মেয়রপ্রার্থী জয়ী হলে তা মেনে নেবেন কি না- এক সাংবাদিক এই প্রশ্ন করলে তার উদ্দেশে
আমীর খসরু বলেন, “তোমার মুখে ফুল চন্দন পড়ুক।”
বিএনপির
স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “যেটা নির্বাচনই হয় নাই, সেটা প্রত্যাখানের কী আছে। চট্টগ্রামে
কোনো নির্বাচন হয়নি, তা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
“আমাদের
নির্বাচন আওয়ামী লীগের সাথে হয়নি, হয়েছে আওয়ামী প্রশাসন, আওয়ামী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সাথে।”
বিক্ষিপ্ত
সংঘাত, গোলাগুলিতে একজনের প্রাণহানির মধ্যদিয়ে দিনব্যাপী ভোটগ্রহণ শেষ হয়।
বিএনপি
সকাল থেকে অভিযোগ করে আসছে, তাদের সমর্থক, এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
অন্যদিকে
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাদের দাবি, সুষ্ঠু নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিএনপি নানা
অভিযোগ তুলছে।
আমীর
খসরু বলেন, “চট্টগ্রাম মহানগরীর মেয়র নির্বাচনে আওয়ামী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন
তাদের দায়িত্ব অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছে।
“অবৈধ
সরকারের অধীনে, অবৈধ নির্বাচন কমিশনের অধীনে বিএনপির নির্বাচন করার একমাত্র উদ্দেশ্য
ছিল-আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। আমাদের কমিটমেন্ট গণতন্ত্রের প্রতি।”
এজন্য
সব জেনেশুনেই বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের নির্বাচন
নিয়ে চরম দুর্বলতা রয়েছে, জনগণের কাছে ভোট চাওয়া তাদের দুর্বলতা। সেটা আজকে আবার প্রমাণ
করেছে তারা।”
আওয়ামী
লীগ গত কয়েকদিনে চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনকে ঘিরে নগরীকে সন্ত্রাসীদের মিলনমেলায় পরিণত
করেছে বলে অভিযোগ করেন আমীর খসরু।
তিনি
বলেন, “চট্টগ্রামের উত্তর-দক্ষিণের বিভিন্ন এলাকা থেকে নিয়ে এসেছে। খোলামেলাভাবে তারা
অস্ত্রের মহড়া দিয়েছে। নির্বাচনে প্রত্যেকটি কেন্দ্রে ছিল বহিরাগতদের আনাগোনা।
“তারা
কেন্দ্র দখলের পাশাপাশি আমাদের দলীয়কর্মী, এজেন্টদের মারধর করেছে এবং বের করে দিয়েছে।
সিটি নির্বাচনকে ঘিরে কমপক্ষে ২০টি মামলায় বিএনপির কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে আসামি করেছে।”
সিটি
নিার্বচনে আওয়ামী লীগের হামলায় কাউন্সিলর প্রার্থী, এজেন্ট, নেতাকর্মী মিলিয়ে দুইশ
জনের মতো আহত হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
বর্তমান
সরকার-প্রশাসন ইভিএম পদ্ধতির ভোটকেও বিতর্কিত করেছে বলে মন্তব্য করেন আমীর খসরু।
তিনি
বলেন, “কিছুদিন আগে ইভিএমে মক ভোটিং করেছে। এবার তারা রাতে ইভিএমে ভোটও চুরি করেছে।
কিছু মেশিনে ধানের শীষের প্রতীকও ছিল না। কিছুতে ধানের শীষে ভোট দিলে আম প্রতীকে ভোট
যাচ্ছে। তারা ইভিএমকে পুরোপুরি ব্যবহার করেছে ভোট চুরিতে।”
সাবেকমন্ত্রী
আমীর খসরু বলেন, “এ সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনই হয় না। একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক
সরকারের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার হতে হবে।”
সংবাদ
সম্মেলনে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী ও দলটির চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির আহবায়ক শাহাদাত হোসেন
বলেন, “নির্বাচনে বিএনপির এজেন্ট, জনগণ সম্পূর্ণ অসহায় ছিল। আজকের নির্বাচন নির্যাতনে
পরিণত হয়েছে বলে মনে করি। রিটার্নিং কর্মকর্তাকে অভিযোগ দিয়েছিলাম। তাকে ব্যবস্থা নিতেও
বলেছি।
বর্তমান
সরকার নির্বাচনকে ‘ভোট ডাকাতির কালচারে’ পরিণত করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম
সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ভোট ডাকাতির ইতিহাস আবারও উন্মোচিত করেছে আওয়ামী
লীগ।”