বুধবার সকাল থেকে সেখানে দফায় দফায় এই তিন পক্ষের সংঘর্ষে ২১
জন আহত হয়েছে বলে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর দাবি।
বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী অভিযোগ করেছেন, ওই ওয়ার্ডের
১৪টি কেন্দ্রের মধ্যে সবগুলো ‘দখল’ করে নিয়েছে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর লোকজন। আর আওয়ামী
লীগ সমর্থিত প্রার্থীর দাবি, তার অনুসারীদের ওপর হামলা হয়েছে বিএনপি প্রার্থীর নেতৃত্বে।
১৪ নম্বর লালখান বাজার ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের সমর্থনে ভোটে আছেন
স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আবুল হাসনাত বেলাল। এখানে বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক কাউন্সিলর
এফ কবির মানিক।
ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্রলীগ নেতা সুদীপ্ত
হত্যা মামলার আসামি দিদারুল আলম মাসুম দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। এই
ওয়ার্ডে বিএনপির সমর্থন পেয়েছেন আবদুল হালিম শাহ আলম।
সংঘর্ষের বিষয়ে আবুল হাসনাত বেলাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে
বলেন, “আমার অনুসারীদের ওপর বিএনপি প্রার্থীর নেতৃত্বে পুলিশ লাইন কেন্দ্রে হামলা হয়েছে।
সেখানে আমার চারজন কর্মীর মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে তারা।
চট্টগ্রাম সিটি ভোটের দিন সকালে নগরীর লালখান বাজার ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীর অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের পর এলাকার চিত্র।
“এছাড়া মাস কিন্ডারগার্টেন কেন্দ্রেও হামলা হয়েছে। বিদ্রোহী
প্রার্থীর সমর্থকরা শহীদ নগর সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে আমার লোকদের
মেরেছে। সেখানেও দু’জন আহত হয়েছে। মারামারির কারণে সাধারণ ভোটাররা আর কেন্দ্রে আসছে
না।”
“মাসুম যদি (দিদারুল আলম মাসুম) দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধেই কাজ
করবেন তাহলে তিনি আওয়ামী লীগ করেন কিভাবে,” প্রশ্ন বেলালের।
সকাল নয়টার দিকে শহীদ নগর সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
কেন্দ্রের বাইরে বেলালের সমর্থকদের সঙ্গে মাসুমের সমর্থকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।
সংঘর্ষের বিষয়ে লালখান বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক
দিদারুল আলম মাসুম বলেন, “আমি এলাকার বাইরে আছি। এবিষয়ে কিছু বলতে পারব না।
শহীদ নগর সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং
অফিসার বশির আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, “কেন্দ্রের বাইরে গোলযোগ হয়েছে। তবে কেন্দ্রের
অভ্যন্তরে কোনো সমস্যা নেই।”
অন্যদিকে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আবদুল হালিম শাহ আলম বলেন,
“কোনো কেন্দ্রেই মেয়র ও আমার এজেন্ট ঢুকাতে পারেনি। তারা আমাকেও শারীরিকভাবে নির্যাতন
করেছে। আমাদের ১৫ জন আহত হয়েছে।
চট্টগ্রাম সিটি ভোটের দিন সকালে নগরীর লালখান বাজার ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীর অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের পর এলাকার চিত্র।
“গতরাতে সন্ত্রাসীরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাণ্ডব চালিয়েয়ে মতিঝর্ণা,
পোড়া কলোনি ও লালখানবাজার এলাকায়। প্রত্যেক সেন্টার তারা দখল করে নিয়েছে। ১৪টি কেন্দ্রের
একটিতেও আমাদের এজেন্ট নেই। আমি নিজে জামেয়াতুল উলুম মাদ্রাসা সেন্টারে ভোটার, এখনও
ভোট দিতে পারিনি।
“যে কয়জন ভোটার আইডি কার্ড নিয়ে ভিতরে যাচ্ছে, সেটা নিয়ে আওয়ামী
লীগের লোকজন ভোট দিয়ে দিচ্ছে। আগের ভোটের চেয়েও নির্লজ্জ অবস্থা এবার।”
স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশকে বলেও কোনো প্রতিকার পাননি বলে দাবি
আবদুল হালিম শাহ আলমের।
সংরক্ষিত-৫ ওয়ার্ডে নারী কাউন্সিলর প্রার্থী মনোয়ারা বেগম মনি
বলেন, লালখান বাজার ওয়ার্ডসহ তিনটি ওয়ার্ডের মোট ৪৪ কেন্দ্রে তার ৩২০ জন এজেন্টের কাউকেই
ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
“সকাল থেকে তিন দফায় আমার বাসায় আওয়ামী লীগের লোকজন হামলা করেছে।
লালখান বাজার ওয়ার্ড অফিস কেন্দ্রে আমি ভোটার। সেখানেও আমাকে ঢুকতে দেয়নি।”
এদিকে সকাল ১০টার দিকেও লালখান বাজার এলাকায় কাউন্সিলর প্রার্থীর
অনুসারীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
খুলশী থানার ওসি শাহিনুজ্জামান বলেন, কেন্দ্রের বাইরে দু’পক্ষের
ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছিল। পুলিশ-বিজিবি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে।