বিবিসি জানায়, ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী জন ক্যাসটিক্স শুক্রবার রাতে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে নতুন ওই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেন। তবে তিনি দেশজুড়ে পুনরায় লকডাউন আরোপের বিপক্ষে।
শুক্রবার প্রতিরক্ষা ও সুরক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে ক্যাসটিক্স এ সিদ্ধান্ত নেন। তিনি বলেন, ‘‘লকডাউনে দেশের উপর কতটা গুরুতর প্রভাব পড়ে তা সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। আমি আজ রাতে গত কয়েক দিনের মহামারী পরিস্থিতির তথ্য দেখেছি এবং আমাদের মনে হয়েছে, আমরা এখনো নিজেদের লকডাউন এড়ানোর একটা সুযোগ দিতেই পারি।”
শীতের শুরুতে ইউরোপ জুড়ে কোভিড-১৯ সংক্রমণ পুনরায় বাড়তে শুরু করায় ফ্রান্সে আগে থেকেই দেশজুড়ে সান্ধ্যকালীন কারফিউ জারি করা হয়। লোকজনের চলাচলে নানা বিধিনিষেধ আরোপসহ বার-রেস্তোরাঁ খোলা রাখার সময়ও নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়।
কিন্তু নানা কড়াকড়ি আরোপ করার পরও ফ্রান্সে এখনো ভাইরাস সংক্রমণ বিস্তারের গতি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।
ফলে সীমান্তে নতুন করে এই কড়াকড়ি আরোপ করা হচ্ছে। নতুন এই আইন যুক্তরাজ্যের উপরও কার্যকর হবে। কারণ, যুক্তরাজ্য এখন আর ইইউর অংশ নয়।
তবে দুই দেশের মধ্যে সড়কপথে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে নতুন আইন কার্যকর হবে না বলে জানিয়েছেন ফ্রান্সের পরিবহনমন্ত্রী।
রোববার প্রথমপ্রহর থেকেই কার্যকর হতে যাওয়া নতুন আইনে অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ইইউর বাইরের দেশ থেকে কাউকে ফ্রান্সে ঢুকতে দেয়া হবে না। আর ইইউর সদস্যরাষ্ট্র থেকে যাওয়া ব্যক্তিদের সবাইকে কোভিড পরীক্ষার ‘নেগিটিভ’ সনদ দেখাতে হবে।
সড়ক পথে যাতায়াতের ক্ষেত্রেও এটা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আগে শুধু আকাশ ও নৌপথে পরিবহনের ক্ষেত্রে করোনাভাইরাস ‘নেগিটিভ’ সনদ দেখাতে হতো।
এছাড়াও বৃহৎ আকারের শপিং সেন্টার যেখানে খাদ্যপণ্য বিক্রি হয় না সেগুলো বন্ধ থাকবে। আবারও বাড়িতে থেকে কাজের নিয়ম চালু হচ্ছে।
নতুন নিয়মের সঠিক বাস্তবায়নে কঠোর হচ্ছে পুলিশ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গোপনে পার্টি চলছে কিনা বা অবৈধভাবে রেস্তোরাঁ খোলা রাখা হয়েছে কিনা তা খুঁজে দেখবে পুলিশ।
তিনি বলেন, ‘‘পুনরায় দেশজুড়ে লকডাউন আরোপ করা এড়াতে আমরা যথাসম্ভব সব কিছুই করতে চাই। আগামী কয়েকটি দিনে আমাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হবে, আসুন সবাই সজাগ থাকি।”
ফ্রান্সে শুক্রবারও কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়ে ৮২০ জন মারা গেছেন। দেশটিতে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ৭৫ হাজার ৬২০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বর্তমানে ফ্রান্সের হাসপাতালগুলোতে ২৭ হাজারের বেশি কোভিড রোগী ভর্তি আছেন। তাদের মধ্যে তিন হাজারের বেশি আইসিইউতে।