বিতর্কিত তিন কৃষি সংস্কার আইন বাতিলের দাবিতে প্রায় দুইমাস ধরে ভারতের লাখো কৃষক সড়কে আন্দোলন করছেন। গত ২৬ জানুয়ারি ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন কৃষকরা রাজধানী দিল্লিতে ঢুকে পড়েন। পুলিশ তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
ওই দিন এক কৃষকের মৃত্যুসহ আহত হয়েছেন শতাধিক কৃষক। সংঘর্ষে তাদের প্রায় তিনশ সদস্য আহত হয়েছে বলে দাবি দিল্লি পুলিশের।
ওই ঘটনায় পুলিশ অনেকগুলো মামলা করেছে।
শনিবার ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা মহাত্মা গান্ধীর ৭৩তম মৃত্যু দিবস।
মহাত্মা গান্ধীর অহিংস আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানাতে তারা শনিবার অনশন করছেন বলে জানান কৃষক নেতারা।
সংযুক্ত কৃষাণ মোর্চা গ্রুপের নেতা দর্শন পাল বলেন, ‘‘কৃষকদের এই আন্দোলন শান্তিপূর্ণ ছিল এবং শান্তিপূর্ণ থাকবে।
‘‘সত্য এবং অহিংসার মাহাত্ম্য ছড়িয়ে দিতেই আমরা ৩০ জানুয়ারি এ গণঅনশনের আয়োজন করেছি।”
কৃষকদের আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত সরকারের সঙ্গে কৃষক ইউনিয়নের নেতাদের ১১ দফা আলোচনা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত হওয়া সব আলোচনাই ব্যর্থ হওয়ায় এ অচলাবস্থার অবসান হচ্ছে না। কৃষকরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সরকারের করা নতুন ওই তিন কৃষি আইনের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার চান।
ভারতী কৃষকদের আশঙ্কা, নতুন কৃষি আইনের ফলে সরকার আর ন্যায্যমূল্যে কৃষকদের কাছ থেকে ফসল কিনতে বাধ্য থাকবে না। বাজারের উপর সরকারের নজরদারিও কমে যাবে। ফলে বাজারের নিয়ন্ত্রণ এবং কৃষি পণ্যের দাম নির্ধারণের ক্ষমতা বড় বড় ব্যক্তিমালিকানাধীন কোম্পানির হাতে চলে যাবে এবং কৃষকদের জীবন তাদের দয়ার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে।
পাঞ্জাব থেকে শুরু হওয়া ওই আন্দোলন এখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। শীত মৌসুমে প্রচণ্ড ঠান্ডার মধ্যেই কৃষকরা রাস্তায় অবস্থান নিয়ে তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। যতদিন পর্যন্ত সরকার ওই তিন আইন বাতিল না করবে ততদিন তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেও জানিয়েছেন।
গত ১২ জানুয়ারি ভারতের সুপ্রিম কোর্ট নতুন তিনটি কৃষি আইন বাস্তবায়নে স্থগিতাদেশ দিয়েছে।