গত
বসন্তে বাংলাদেশ থেকে সরবরাহ করা তৈরি পোশাকের চালানের বিপরীতে বড় অংকের বকেয়া
রেখে কোম্পানিটি দেওলিয়া হয়ে যায়।
এরকম
প্রায় পথে বসা বাংলাদেশি ২১টি কারখানা গত জুনে সিয়ার্সের বিরুদ্ধে কোটি ডলারের
মামলায় জয় পেয়ে বড় অংকের অর্থ পেয়েছে বলে তাদের পক্ষের আইনজীবী জোসেফ ই. সারাচেককে
উদ্ধৃত করে ফোর্বস জানিয়েছে।
দেউলিয়া
হওয়ার কারণে গত বছর সিয়ার্স ও কেমার্টকে অধিগ্রহণকারী মার্কিন কোটিপতি এডওয়ার্ড
ল্যাম্পার্টের হেজ ফান্ড ইএসএল ইনভেস্টভেন্টসের তৈরি প্রাইভেট কোম্পানি
ট্রান্সফর্মকোর সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে এই অর্থ ফেরত পাওয়া গেছে বলে অনলাইন
সাময়িকীটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
সারাচেক
বলেন, “উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ ফেরত পাওয়ায় পোশাক সরবরাহকারীরা অবশ্যই খুবই
উল্লসিত।”
শুধু
সিয়ার্সই নয় মহামারীর মধ্যে গত বসন্তে ফরএভার ২১, রস ড্রেস ফর লেস, দ্য চিলড্রেনস
প্লেস, কোল’স, গ্লোবাল ব্রান্ডস গ্রুপ ও
আর্কেডিয়াসহ (টপশপের মালিক) শীর্ষ অনেক বিদেশি ক্রেতা কারখানাগুলোর চার হাজার কোটি
ডলারের সমমূল্যের তৈরি দাম দিতে অস্বীকার করে। এর ফলে কারখানাগুলো দেউলিয়া হয়ে যায়
এবং ক্ষেত্র বিশেষে কয়েক মাসের মজুরি হারিয়ে পোশাক শ্রমিকরা পথে নামতে বাধ্য হয়।
এসব
কারখানার প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবীদের ভাষ্য, এসব ক্রয়াদেশ বাতিল ‘বাংলাদেশে ও
এশিয়ার অন্যান্য এলাকায় মানবিক বিপর্যয়ের জন্য দায়ী’।
কিন্তু
দেউলিয়া হয়ে গিয়ে সিয়ার্স এসব পোশাক সরবরাহকারীদের একেবারে দেয়ালে ঠেলে দেয়;
একাধিক ক্রয়াদেশের পোশাক তৈরি করেও তারা তার দাম পাননি।
সারাচেক
বলেন, “দেওলিয়া হওয়ার আগে তারা অর্থ হারায়, দেউলিয়া হওয়ার প্রক্রিয়াতেও হারায় এবং তারপর
উল্টো তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়।”
ছবি: রয়টার্স
তার
ভাষ্য, সিয়ার্সের বিরুদ্ধে মামলার বাদী এসব পোশাক সরবরাহকারীদের অনেকে গত সেপ্টেম্বরে
৬০ লাখ ডলারের পোশাক জাহাজে করে সিয়ার্সকে পাঠিয়েছিলেন। তারা সেপ্টেম্বরের সমঝোতা
থেকে প্রাথমিকভাবে কিছু অর্থ পেয়েছেন, এবং এই পরিশোধ অব্যাহত আছে।
সারাচেক বলেন, আরও অন্তত ১০০ কারাখানার অভিযোগ নিয়ে তিনি
কাজ করছেন, যারা ফরএভার ২১,
গ্লোবাল ব্রান্ডস গ্রুপ, শ্যন জিন, ক্যাটি পেরি ও জোন্স নিউ ইয়র্কের মতো বৃহৎ ক্রেতাদের
কাছে প্রায় শত কোটি ডলার পাওনা রয়েছেন।
গ্লোবাল ব্রান্ডস গ্রুপের মালিক ও বিশ্বের সর্ববৃহৎ তৈরি পোশাকের দালাল হংকংভিত্তিক
লি অ্যান্ড ফুং সিয়ার্সের জন্য এসব পোশাক কেনায় ফড়িয়ার ভূমিকা পালন করে। তবে এসব কোম্পানি কোনো মন্তব্য জানতে পারেনি
ফোর্বস।
তবে এইচ অ্যান্ড এম, পিভিএইচ, ভিএফ করপোরেশন, জারা ও সি
অ্যান্ড এ- এর মতো দুই ডজনের বেশি বড় ব্র্যান্ড গত বছর আন্তর্জাতিক চাপের মুখে
ক্রয়াদেশ পুনর্বহাল করে দাম পরিশোধ করতে বাধ্য হয়। তবে মহামারীর আগে দুই হাজার
কোটি ডলারের মতো পোশাকের দাম এসব ক্রেতারা এখনও পরিশোধ করেনি।