ক্যাটাগরি

হুমায়ুন আজাদ হত্যামামলায় যুক্তিতর্ক শুনানি চলছে

রোববার
ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মাকছুদা পারভীনের আদালতে আসামিপক্ষের আইনজীবী
যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।

বিচারক
এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে হত্যাচেষ্টার মামলাটি কীভাবে হত্যামামলায় রূপান্তরিত
হল, সে বিষয়ে কয়েকটি প্রশ্ন করেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম   হেলাল তার ব্যাখ্যা দেন।

উপস্থিত
আইনজীবীরা এই তথ্য জানিয়েছেন।

শুনানির
সময় বিচারক এ মামলার সংশ্লিষ্ট আইনজীবী ছাড়া অন্য আইনজীবী ও সাংবাদিকদের এজলাস থাকতে
দেননি।

আগামী
৪ মার্চ এ মামলায় আরও যুক্তি উপস্থাপন করা হবে।

২০১৯ সালের মে মাসে এ মামলার যুক্তিতর্ক শুনানি শুরুর কথা
থাকলেও এক আসামি অভিযোগ গঠনের ধারা চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে গেলে তা বিলম্বিত হয়।

সেই জটিলতা কাটলে গত ১৮ জানুয়ার যুক্তিতর্ক শুনানি শুরু হয়।
সেদিন রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দাবি করে শুনানি শেষ করে।

এরপর সেদিনই দুই আসামির পক্ষে যুক্তিতর্ক শুনানি শুরু করেন
তাদের আইনজীবী ফারুক আহাম্মেদ।

হুমায়ুন আজাদ

হুমায়ুন আজাদ

২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারির রাতে বাংলা একাডেমির উল্টো পাশের
ফুটপাতে আক্রান্ত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক হুমায়ুন আজাদ, যিনি
তার লেখার জন্য সাম্প্রদায়িক শক্তির হুমকি পেয়ে আসছিলেন। একুশে বইমেলা থেকে ফেরার পথে
ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাকে জখম করা হয়।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময় ওই হামলার ঘটনায় বিক্ষোভে
ফেটে পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকরা।

ইসলামী জঙ্গিরা হুমায়ুন আজাদের উপর ওই হামলা চালিয়েছিল বলে
পরে পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে।

এদিকে কয়েক মাস চিকিৎসা নেওয়ার পর ২০০৪ সালের অগাস্টে গবেষণার
জন্য জার্মানিতে যান এই লেখক। ওই বছর ১২ অগাস্ট মিউনিখে নিজের ফ্ল্যাট থেকে তার লাশ
উদ্ধার করা হয়।

হুমায়ুন আজাদের উপর হামলার পরদিন তার ছোট ভাই মঞ্জুর কবির
রমনা থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেছিলেন। মৃত্যুর পর আদালতের আদেশে অধিকতর তদন্তের
পর সেই মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়।

সিআইডির পরিদর্শক লুৎফর রহমান মামলাটি তদন্তের পর ২০১২ সালের
৩০ এপ্রিল পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।

মো. মিজানুর রহমান মিনহাজ ওরফে শফিক ওরফে শাওন ওরফে হামিম
ওরফে হাসিম, আনোয়ারুল আলম ওরফে ভাগ্নে শহীদ, নূর মোহাম্মদ শামীম ওরফে জে এম মবিন ওরফে
সাবু, সালেহীন ওরফে সালাউদ্দিন ওরফে সজীব ওরফে তাওহিদ এবং হাফিজ মাহমুদ ওরফে রাকিব
ওরফে রাসেলকে সেখানে আসামি করা হয়।

২০১২ সালের ১০ সেপ্টেম্বর তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে
বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত।

আসামিরা নিষিদ্ধ সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি)
বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা। তাদের মধ্যে মিনহাজ ও আনোয়ার কারাগারে আটক রয়েছেন। নূর মোহাম্মদ
শুরু থেকেই পলাতক।

সালাহউদ্দিন সালেহীন ও হাফিজ মাহমুদ গ্রেপ্তার হলেও ২০১৪
সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ত্রিশালে প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে তাদের ছিনিয়ে নিয়েছিল জঙ্গিরা।
সালেহীন পালিয়ে যেতে পারলেও হাফেজ মাহমুদ পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর কথিত বন্দুকযুদ্ধে
নিহত হন।

হুমায়ুন আজাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ওয়াজে বিষোদগার করা যুদ্ধাপরাধী
জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে প্রথমে এ মামলার আসামি করা হলেও পরে তার নাম
বাদ দেওয়া হয়।