ক্যাটাগরি

মিয়ানমারের রাজপথে হাঁড়ি-পাতিল বাজিয়ে সামরিক অভ্যুত্থানের প্রতিবাদ

রয়টার্স জানিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে দেশটির বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গনে এ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় গণপ্রতিবাদে জড়ো হওয়া বিক্ষোভকারীরা ‘অমঙ্গল দূর হবে’ বলে শ্লোগান দেন এবং রীতি অনুযায়ী অমঙ্গল দূর করতে হাঁড়ি-পাতিল বাজান।

দেশটির অন্তত ২০টি সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মীরা ধর্মঘট করার পরিকল্পনা করছেন বলে বিবিসি জানিয়েছে। আন্দোলনকারীরা আইন না মানার আন্দোলনেরও ডাক দিয়েছেন।

একটি ছবিতে সুরক্ষা পোশাক পরা চিকিৎসাকর্মীদের পেছনে ‘অবশ্যই স্বৈরাচারের পতন হবে’ লেখা দেখা গেছে।

অফলাইন ম্যাসেজিং অ্যাপ ব্রিজফি জানিয়েছে, মিয়ানমারে তাদের অ্যাপটি ১০ লাখবারের বেশি ডাউনলোড হয়েছে। দেশজুড়ে ফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ বিঘ্নিত হওয়ার সমাধান হিসেবে দেশটির আন্দোলনকারীরা ব্রিজফির ডাউনলোড উৎসাহিত করছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে।  

সু চিকে মুক্তি দেওয়ার জন্য সামরিক বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) । দলটি ৮ নভেম্বরের নির্বাচনে তাদের জয়ের স্বীকৃতি দেওয়ারও দাবি জানিয়েছে।

সোমবার মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করা সামরিক বাহিনী ভোররাতে রাজধানী নেপিডোতে অভিযান চালিয়ে দেশটির স্টেট কাউন্সিলর সু চি, প্রেসিডেন্ট উয়িন মিন্টসহ এনএলডির শীর্ষ নেতাদের আটক করে। তারপর থেকে সু চিকে অজ্ঞাত একটি স্থানে আটকে রাখা হয়েছে।

এনএলডির একজন জ্যেষ্ঠ নেতা জানিয়েছেন, সু চি রাজধানী নেপিডোতে গৃহবন্দি আছেন বলে তিনি জানতে পেরেছেন।

এক ফেইসবুক পোস্টে কি টো নামের এই নেতা জানিয়েছেন, সু চি ‘শারীরিকভাবে ভালো আছেন’ এবং তাকে সরিয়ে নেওয়া হবে না বলে তিনি জেনেছেন।

এর আগে আরেক পোস্টে সু চি তার বাড়িতেই আছেন বলে জানানো হয়েছিল। আরও তথ্যের জন্য তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় রয়টার্স।

নির্বাচনে এনএলডি নিরঙ্কুশ জয় মেনে নিতে পারেনি দেশটির প্রভাবশালী সামরিক বাহিনী। জালিয়াতির অভিযোগ তুলে নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে তারা। সেনাবাহিনী সু চিসহ এনএলডির জ্যেষ্ঠ নেতাদের আটক করে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করে এবং ক্ষমতা সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিং অং হ্লাইংয়ের হাতে তুলে দেয়।  

তার সরকারের প্রথম বৈঠকে জেনারেল হ্লাইং বলেছেন, নির্বাচন কমিশন নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করার পর সেনাবাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণ অনিবার্য হয়ে উঠেছিল।

একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিজয়ীর হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি; কিন্তু নির্বাচন কবে হবে সে বিষয়ে কিছু বলেননি।

সামরিক সরকার গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীদের বদল করেছে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন প্রধানের নাম ঘোষণা করেছে। এ পদে পূর্ববর্তী সামরিক সরকারের অধীনে দায়িত্বপালন করা থান নিয়েনকে পুনর্নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।